বুঝলেন, শ্রীলঙ্কায় হামলা যারা করেছে, তারা সবাই হাই-সোসাইটি ফ্যামিলির সন্তান। কেউ মাদ্রাসার ছাত্র নয়। এতেই প্রমাণ হয় যে, ইংলিশ মিডিয়াম ও ভার্সিটি থেকে সন্ত্রাসী বের হয়।

ওদিকে মুরগী কবির টকশোতে বলছে, অ তে অজু, আ তে আযান শেখানোর কারণেই হলি আর্টিজান হামলা হয়েছিল।

এসব তর্কের আড়ালে মূল যে কারণটি চাপা পড়ে যাচ্ছে, তা হলো এই হামলাগুলো সব হচ্ছে স্লিপার এজেন্টদের দ্বারা। সিআইএ বা এজাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের নিজেদের আবিষ্কৃত গোপনীয় নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার করে ব্রেনওয়াশ করে থাকে (https://youtu.be/NUW-frxo2X4)। এই ব্রেনওয়াশের প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত ব্যক্তির মস্তিষ্ককে প্রোগ্রামিং করে নির্ধারিত মিশন এসাইন করা হয়, সেটা হতে পারে আত্মঘাতী বোমা হামলা কিংবা কাউকে খুন করা। মস্তিষ্কের ‘সাবলিমিনাল’ বা অবচেতন পর্যায়ে এই প্রোগ্রামিং সম্পন্ন হয়, ফলে ব্যক্তি নিজেও জানে না যে তাকে ব্রেনওয়াশ করা হয়েছে। সে আর দশটা পাবলিকের মতোই সামাজিক আচারপ্রথা ও চাকরি-ব্যবসা চালিয়ে যায়।

সেই পর্যায়ে তাকে ‘একটিভ’ বা সক্রিয় এজেন্ট হিসেবে গণ্য করা হয় না, তাকে বলা হয় ‘স্লিপিং’ বা ঘুমন্ত এজেন্ট। কিন্তু যখনই তাকে নির্দিষ্ট ‘কমান্ড’ প্রদান করা হয়, সেটি হতে পারে কোনো ছড়া কিংবা নাম্বার সিকোয়েন্স, তখনই অবচেতন মনে তার ব্রেনওয়াশিং প্রোগ্রামটি সক্রিয় হয় এবং সে বেপরোয়া হয়ে তার নির্ধারিত মিশনে নেমে পড়ে। ‘টেলেফোন’ নামে একটি সিনেমায় দেখানো হয়, আমেরিকার একটি গ্যারেজে এক সাধারণ মেকানিক (মূলত সে সোভিয়েত স্লিপার এজেন্ট), তাকে ফোনে একজন একটি ছড়া পড়ে শোনায়। সাথে সাথেই তার অবচেতন মস্তিষ্কের প্রোগ্রামটি সক্রিয় হয় এবং সে তার গাড়িতে বোমা বেঁধে বেপরোয়াভাবে একটি মার্কিন সেনা কম্পাউন্ডে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। (https://youtu.be/KbxIyjecJgw)

সাম্প্রতিককালে ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ উইন্টার সোলজার’ সিনেমার মূল প্লটও এই স্লিপার এজেন্টকে কেন্দ্র করে। সিনেমার মূল ভিলেন হলো একটি স্লিপার এজেন্ট, যাকে ‘একটিভেশন কোড’ পড়ে শোনানোর পর সে উত্তেজিত হয়ে সবকিছু ধ্বংস করতে উদ্যত হয়। (https://youtu.be/D6uLi1LphCI)

উল্লেখ্য, শত্রুপক্ষের অধীনে যখন কোনো সেনা কর্মকর্তা বন্দি হয়, তখন তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও তাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি কন্টিনিউ করতে দেয়া হয় না। কারণ খুব সম্ভবনা থাকে যে, তাকে বন্দিদশায় ব্রেনওয়াশ করে স্লিপার এজেন্ট হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধের পর পাকিস্তানের যেসব সেনা কর্মকর্তারা ভারতে বন্দি ছিল, তারা শিমলা চুক্তিতে ছাড়া পেলেও তাদেরকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে চাকরি কন্টিনিউ করতে দেয়া হয়নি। তড়িঘড়ি করে তাদের প্রত্যেককে অবসর প্রদান করা হয়।

বিপরীতে বাংলাদেশের যেসব সেনা কর্মকর্তা একাত্তরে পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দী ছিল, তারা সবাই দেশ স্বাধীনের পর উচ্চপদে আসীন হয়। খোদ ডিজিএফআইয়ের প্রধান ছিল সেরকম একজন পাকিস্তান ফেরত কর্মকর্তা, যে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে হামলার তথ্য জানলেও তা সেনাপ্রধানকে জানায়নি। ব্রিগেডিয়ার আ ল ম ফজলুর রহমান তার একটি লেখায় দেখিয়েছেন যে, এই পাকিস্তান ফেরত ‘রিপ্যাট্রিয়ট’ সেনাদের ষড়যন্ত্রেই শেখ মুজিব ও জিয়া খুন হয়েছিল। (http://bit.ly/2L8KbIh)

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় হামলাকারী কিংবা হলি আর্টিজানে হামলাকারীরা যে এভাবে প্রোগ্রামড, তা বোঝা যায় তাদের প্রত্যেকের একটি অভিন্ন ইতিহাস দেখে। তা হলো তারা সবাই হামলার আগে পুলিশ কাস্টডিতে ছিল, কিংবা হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়েছিল। হলি আর্টিজানে হামলা নিয়ে পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিল “বাড়ি থেকে হঠাৎ উধাও তারা, পড়ত দেশ-বিদেশের নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে”। (http://bit.ly/2GNrKET)

নাখালপাড়ায় এক ১৬ বছরের ছেলে নিহত হয়েছিল, যে ঘটনাটির তিনমাস আগে স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। (http://bit.ly/2GNZB0k)

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় যে কোটিপতি মসলা ব্যবসায়ীর ছেলের কথা মিডিয়াতে এসেছে, তাকেও হামলার আগে পুলিশ কাস্টডিতে নেয়া হয়েছিল। খুব সম্ভব তখনই তার ব্রেনওয়াশ সম্পন্ন হয়। (http://bit.ly/2GDx4cE)

উইকিপিডিয়াতে রয়েছে যে, স্লিপার এজেন্ট হিসেবে সবচেয়ে উত্তম হলো ধনী, প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। কারণ ধনী কিংবা প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানের যেসব জায়গায় প্রবেশাধিকার থাকে, সবার তা থাকে না। যেমন হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে কূটনৈতিক ও বিদেশী ছাড়া খুব বেশি দেশীয় পাবলিক সেখানে যেতো না। শ্রীলঙ্কায় যেসব হোটেলে হামলা হয়েছে, সেগুলোও পাঁচতারকা পর্যায়ের বিশেষায়িত হোটেল।

সিআইএ-র ন্যায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ‘আইএস’ এর নাম দিয়ে এসব স্লিপার এজেন্ট পোষে, আর নির্ধারিত এজেন্ডা বাস্তবায়নে তাদের ব্যবহার করে। উল্লেখ্য, যাদেরকে বর্তমানে বিভিন্ন জায়গা থেকে গুম করা হচ্ছে, তাদের অনেককেই মূলত কিডন্যাপ করা হয়েছে স্লিপার এজেন্ট বানানোর লক্ষ্যে। যেমন সম্প্রতি খবরে এসেছে যে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে ‘আইএস’ হামলা করবে। এই খবরের মূল ম্যাসেজটি হলো, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার যেন কোনো অবস্থাতেই চীনের ‘বেল্ট-রোড ইনিশিয়েটিভ’ এ যুক্ত না হয়। হলেই ‘আইএস’ নামধারী স্লিপার এজেন্টদের সক্রিয় করা হবে। আর পশ্চিমবঙ্গে মূলত কোনো হামলা হবে না, সেখানে এই হুমকি কাজে লাগবে তৃণমূলের বিপরীতে মার্কিন এজেন্ট বিজেপির ভোটবৃদ্ধির কাজে।

উল্লেখ্য, এই প্রক্রিয়ার সাথে ইসলামী আবহ বা শিক্ষার কোনো সম্পর্কই নেই। মূলত ঘটনাগুলোর উপর ইসলামী আবরণ দেয়া হয় ঘটনাটির রিয়েল ফেস আড়াল করার জন্য, সাথে ফ্রি হিসেবে মুসলমানদের কোনঠাসা করা হয়। এভাবে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়।

মুসলমানরা যদি অন্যদিকে ডাইভার্ট না হয়ে মূল পয়েন্টটি ধরে সেটি নিয়ে আলোচনা করে, সেক্ষেত্রে এই ধারাবাহিক ঘটনাগুলো প্রতিহত করা সম্ভব। কারণ ফাঁস হওয়া ষড়যন্ত্র নিয়ে সাধারণত কেউ এগোয় না। তা বাদ দিয়ে যদি তারা ‘মডারেট মুসলমান’ হওয়ার, কিংবা পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘জিহাদ’ অধ্যায় বাদ দেয়ার কোশেশ করে, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির তো পরিবর্তন হবেই না, উল্টো বিএসএফ বাংলাদেশী যুবকের দুই হাতের দশটি নখ উপড়ে নেবে, কিংবা ‘সংখ্যালঘু’ হিন্দুরা বাধ্য করবে ১২ বছর ধরে কর্মরত ইমামকে ‘গরু জবাই’ করার অপরাধে মসজিদ থেকে বিতাড়িত করতে। (https://youtu.be/xeeWd6eokrg)

Post a Comment

 
Top