কিছুদিন আগে ভারত যখন পাকিস্তানে হামলা করে তাদের দুটি বিমান হারায়, তখন ভারতের বিমান বাহিনীর বেহালদশা সারা বিশ্বে প্রকাশিত হয়। ভারত ব্যবহার করে ভিয়েতনাম যুদ্ধের মান্ধাতার আমলের মিগ-২১, যা তাদের নিজেদের দেশেই ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে পরিচিত। এর বিপরীতে পাকিস্তান কোন বিমান ব্যবহার করে জানেন?

পাকিস্তান ব্যবহার করে জেএফ-১৭ থান্ডার বিমান, যা ২০০৭ সালে চায়না কর্তৃক সর্বপ্রথম বাজারে ছাড়া হয়। পাকিস্তান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরী তার প্রোটোটাইপকে উন্নত করে ব্লক-৩ তে উন্নীত করে। পাকিস্তানের নিজস্ব ফ্যাক্টরীতে প্রস্তুত এই জেএফ-১৭ ব্লক-৩ বিমানকে তুলনা করা হয় আমেরিকার এফ-১৬ বিমানের সাথে। (http://bit.ly/2Oyd8v8)

অর্থাৎ যেখানে ভারত বিদেশের বাতিল বিমান ব্যবহার করে, সেখানে পাকিস্তান অত্যাধুনিক ফোর্থ জেনারেশন প্লাস বিমান তাদের নিজেদের দেশের ফ্যাক্টরীতে তৈরী করে। উল্লেখ্য, এই গরুর প্রস্রাব খাওয়া জাতি যুদ্ধবিমান তো দূরে, সামান্য এসল্ট রাইফেল পর্যন্ত ঠিকমতো বানাতে পারে না। ভারতের ফ্যাক্টরীর বানানো বন্দুক পরপর দুই বছর তাদের নিজেদের সেনাবাহিনীর পরীক্ষাতেই বাতিল বলে ঘোষিত হয়। (http://bit.ly/2UncjdO)

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে আমার নিউজিল্যান্ডের হামলা নিয়ে একটি পোস্টে কিছুসংখ্যক মুসলিমবিদ্বেষী কমেন্ট করা হয়েছিল। এক কমেন্টকারী মুসলমানদের ‘ফুটবল’ উল্লেখ করে বলেছিল, মুসলমানরা যদি জ্ঞানবিজ্ঞানে উন্নতি করতে না পারে, সেক্ষেত্রে তাদের এভাবেই গুলি খেয়ে মরা দরকার। না, এটা কোনো হিন্দুর কমেন্ট নয়, বরং স্বজাতিকে ঘৃণাকারী কোনো এক নাস্তিকমনা যুবকের কমেন্ট।

এরকম কমেন্ট প্রায়শই দেখা যায়, যদিও বাস্তবতা পুরো উল্টো। উল্লেখ্য, ক্রাইস্টচার্চ হামলার পেছনে হামলাকারী মূলত দায়ী করেছিল তাদের খ্রিস্টান দেশে মুসলিম ইমিগ্র্যান্টদের আধিক্য। এখন সাদা চামড়াদের দেশে মুসলিম বাড়ছে কেন? এর উত্তর, ঐসব দেশে দক্ষ পেশাজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বাইরের দেশ থেকে যাদের নেয়া হচ্ছে, তাদের সিংহভাগই হচ্ছে মুসলিম। আমার এক আমেরিকান আত্মীয়, তার কাছ থেকে শুনেছি যে তাদের দেশে এখন সাদা চামড়ারা মুসলমানদের সাথে স্কলারশিপ থেকে শুরু করে চাকরির প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না। এ অবস্থায় তাদের ‘ইসলামোফোবিয়া’কে পুঁজি করে মুসলমানদের একঘরে করা ছাড়া উপায় নেই।

অর্থাৎ প্রযুক্তি কিংবা পুঁথিগত বিদ্যা নয়, একটি জাতি কতোটা প্রভাব বিস্তার করবে তার মূল ফ্যাক্টর হলো তার ঘৃণা কতোটা সর্বগ্রাসী। এই যে আমেরিকা, সে কিন্তু স্রেফ যুদ্ধবিমান আর বোমা দিয়ে মুসলিম দেশগুলো আক্রমণ করেনি, তার আগে সে মিডিয়াকে ব্যবহার করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পরিমাণে ঘৃণা ছড়িয়ে মুসলিমবিদ্বেষী আবহ তৈরী করেছে, যেই আবহকে কেন্দ্র করে মুসলিম দেশগুলোকে আক্রমণ করা যায়।

পাকিস্তান মিলিটারী প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ভারতের তুলনায় অনেক এগিয়ে, কিন্তু তারপরও পাক-ভারত উপমহাদেশে তার প্রভাব সীমিত। কারণ ভারত তথা হিন্দুদের তুলনায় সে ঘৃণার যুদ্ধে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। কারণ হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ গীতাতে রয়েছে, ‘স্বধর্ম নিধনং শ্রেয়ং পরধর্ম ভয়াবহ’। অর্থাৎ তাদের নিজেদের ধর্ম ‘নিধনং’ তথা ‘ধনহীন-গুণহীন’ (নি প্রত্যয় দিয়ে ‘নেই’ বোঝানো হয়েছে) হলেও সেটি শ্রেয়, আর পরধর্ম তথা দ্বীন ইসলাম যতোই সুপিরিয়র হোক, সেটিকে ‘ভয়াবহ’ জানতে হবে তথা ইসলামোফোবিয়াকে ধারণ করতে হবে।

না, হিন্দুদের এই তত্ত্ব ফেলনা নয়। কারণ গুণহীন-মানহীন-গোমূত্রখোর জাতি হলেও সে যদি ঘৃণা করতে পারে, তবুও সে ঘৃণাহীন তথা অছাম্প্রদায়িক জাতিকে দমিয়ে রাখতে সক্ষম হবে। পাক-ভারত উপমহাদেশ তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। ঘৃণার এই শক্তিতে মুসলমানদের বলীয়ান হতে বহুবার পবিত্র কুরআন শরীফে নির্দেশ মুবারক দেয়া হয়েছে, কিন্তু অথর্ব অছাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠী তা গ্রাহ্যই করছে না। যে কারণে মেধাশক্তি-জনবল থেকে শুরু করে সবকিছুতে এগিয়ে থাকলেও তাদের নিজেদের লোকেরাই তাদেরকে তাচ্ছিল্য করছে ‘ফুটবল’ বলে।

পরিশিষ্টঃ সম্প্রতি বহুতল ভবনে আগুন ধরার পর জালের অভাবে মানুষগুলো লাফ দিয়ে পড়ে মারা যাওয়া, কিংবা আগুন নেভাতে গিয়ে মান্ধাতার আমলের ফায়ারফাইটিং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সবাই প্রশ্ন করছে, দেশে এতো ‘উন্নতি’ হলে দমকল বাহিনীর এই বেহাল দশা কেন?

উল্লেখ্য, এই দমকল বাহিনীর উপ-পরিচালক (ডিডি) দিলীপ কুমার ঘোষ, উপপরিচালক (ডিডি) দেবাশীষ বর্ধন, সহকাারী পরিচালক সুভাস চন্দ্র দেবনাথ, ট্রেইনার বাবুল চক্রবর্তী। অর্থাৎ একদম অছাম্প্রদায়িক সেক্টর বলা চলে। ভারতে এই ‘অছাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক’ গোমূত্রখোর জনগোষ্ঠী এখনো মান্ধাতার আমলের মিগ-২১ দিয়ে এফ-১৬ ফেলে দিতে পারে, তাদের জাতভাইরা কেন হেলিকপ্টারের ফুটা বালতি দিয়ে টাওয়ারের আগুন নেভাতে পারবে না?

সুতরাং খবরদার, মুসলমানদের নিয়োগ দেওয়া যাবে না, তারা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি কিছুই বোঝে না। তারা দেশটাকে চৌদ্দশ বছর পিছিয়ে নিয়ে যাবে। নিয়োগ দিতে হবে গোমূত্রখোর জনগোষ্ঠীকে, কারণ তারা সমস্ত সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

কোথায় এগিয়ে নিয়ে যাবে? তারা দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে কুম্ভমেলার বিবস্ত্র সন্ন্যাসীদের পর্যায়ে, তখন টকশোতে কোনো অভিনেত্রী আর পরনের ব্লাউজ নিয়েও গর্ব করতে পারবে না।

Post a Comment

 
Top