“মহিষের মুণ্ড ছিন্ন হইয়া উঠানে পড়িয়া গেল, রক্ত বেগে বাহির হইতে লাগিল। ইহার পর যে কাণ্ড হইত, তাহা অন্য সময় হইলে অবিশ্বাস্য মনে করিতাম। চাকরেরা এবং আমার বয়স্ক আত্মীয়রাও উন্মত্ত হইয়া মাটিতে বসিয়া মহিষের রক্তের সঙ্গে ধুলা মিশাইয়া ঢিল তৈরি করিয়া পরস্পরের গায়ে ছুঁড়িয়া মারিত। সকলের কাপড় ও শরীর রক্তে লাল হইয়া যাইত। এমনকি তাহারা রক্ত অঞ্জলি ভরিয়া তুলিয়া তেলের মতো চুলে মাখাইত। দশ-পনের মিনিট ধরিয়া এই তাণ্ডব নৃত্য চলিত। আমি হতভম্ব হইয়া চাহিয়া থাকিতাম।” (তথ্যসূত্র: আমার দেবোত্তর সম্পত্তি, নীরদ সি চৌধুরী, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, পৃষ্ঠা ১২৯)


প্রাবন্ধিক নীরদ সি চৌধুরী তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে তার বাল্যকালে দেখা মহিষ বলির বর্ণনা দিয়েছিল। হিন্দুরা বলির সময় রীতিমতো উন্মাদ হয়ে রক্ত নিয়ে খেলা করতো, এমনকি মাথায়ও রক্ত মাখতো। এখন একটি পশুর প্রতি নিশ্চয়ই হিন্দুদের কোনো জাতিগত বিদ্বেষ নেই, কিন্তু মুসলমানদের প্রতি তো রয়েছে। তাহলে মুসলমানদের ক্ষেত্রে তাদের হিংস্রতা কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে? পাঠকরা ফিকির করুন।
১৯৮৩ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি ভারতের আসামে সংঘটিত হয় ‘নেলি গণহত্যা’। মাত্র ৬ ঘণ্টায় ১৩ হাজার মুসলমানকে শহীদ করে হিংস্র হিন্দুরা, যাদের অধিকাংশই ছিল শিশু।




 একটি মাঠে শত শত মৃত শিশু। তাদের ধুলায় মাখা লাশগুলো সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং পাশে গণকবর খোঁড়া হচ্ছে তাদেরকে মাটিচাপা দেয়ার জন্য। যে বয়সের শিশুদের দেখলে কোলে নিতে ইচ্ছা করে, তাদেরকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল সন্ত্রাসী হিন্দুরা। কারণ তারা ছিল মুসলমান শিশু। যদিও তাদের অধিকাংশই ‘মুসলমান’ শব্দটি উচ্চারণ করার বয়সে পৌঁছায়নি, কিন্তু উন্মাদ হিন্দুরা কি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করে?
গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে অশোক দাশগুপ্তসহ বিভিন্ন ভারতীয় সাংবাদিক একটি ঘটনা তাদের কলামে তুলে ধরেছিল, তা হলো- আহমদাবাদে এক গুজরাটি মুসলমান পুলিশ স্কুটার চালিয়ে যাচ্ছিল দাঙ্গার সময়ে। তারই সহকর্মী হিন্দু পুলিশরা দাঙ্গাকারীদের দেখিয়ে দেয় যে, সে মুসলমান। সাথে সাথে দাঙ্গাকারীরা তাকে তার স্কুটারসহ রাজপথে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে।
মুসলমানরা কি দেখে না, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক- “নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক”। (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
নাপাক বা অপবিত্র বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে ক্বলব বা অন্তরের নাপাকিকে। হিন্দুদের বাহ্যিকভাবে ছুরতান মানুষ বলে মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের অন্তঃকরণ তো মানুষের নয়। তা পশুর চেয়েও বহুগুণে হিংস্র ও ভয়ঙ্কর, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অতীত ইতিহাস পড়ে ও চলমান বিশ্বের বিভিন্ন নজির ও ঘটনাপ্রবাহ দেখে তা অনুধাবন করতে হয়।

Post a Comment

 
Top