কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে মুসলমান শিশুদের যে প্রসাদ খাওয়ানোর ধৃষ্টতা দেখালো হিন্দুরা, তা তারা করেছিল তাদের রথযাত্রা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। সেই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে তারা হিন্দু মেয়েদের সাজিয়েছিল চরম গেরুয়া উগ্র সাজে, মিছিলের নেত্রীকে তারা উপাধি দিয়েছিল ‘ডাকু রানী। তা নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়াতে উল্টো চট্টগ্রামের এক লোক আমাকে চার্জ করলো, যে হিন্দুদের রথের মিছিল করা তাদের ধর্মীয় অধিকার। আমি নাকি মাঝখান দিয়ে ঢুকে ‘অশান্তি’ সৃষ্টি করছি, এই-ই ছিল তার অভিমত।
উল্লেখ্য,
এরকম কমেন্ট পোস্টকারীকে কতোটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। চট্টগ্রামের
লোকটি বারবার কমেন্ট করছিল, আপনি কি শান্তি চান না! আপনি কি অছাম্প্রদায়িকতা চান না!
অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে চট্টগ্রামের মুসলমানদের সাবধান করতে গিয়ে পোস্টকারী হয়ে গেল ভিলেন,
‘অশান্তি’ সৃষ্টিকারী। ফেসবুকে তা ছিল আমার সবচেয়ে বিব্রত পরিস্থিতিগুলোর একটি।
সম্প্রতি
১ বছর আগের আরেকটি স্ট্যাটাস চোখে পড়ল, ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে যে রথযাত্রা হয়েছিল তা
নিয়ে। ঐ বছরও চট্টগ্রামের উগ্র হিন্দুরা গেরুয়া মিছিল বের করেছিল। তার কিছু ছবি শেয়ার
করায় পশ্চিমবঙ্গের উগ্র হিন্দু সংগঠন ‘হিন্দু সংহতি’র Animitra Chakraborty নামক এক
নেতা কমেন্ট করল-
“হাতে শস্ত্র
নেই কেন Joyanta। নারী শস্ত্রধারিণী চামুন্ডা হয়ে উঠুক। যবনের রক্তে স্নান করুক। প্রতিশোধের
আকাঙ্খা হল পূর্ণতম, শ্রেষ্ঠতম আবেগ।”
এই কমেন্টের
উত্তরে সেই জয়ন্ত উত্তর দিল- “দাদা সময়
মহা
বলবান।
তাই
সেই
মহাকালের
অপেক্ষায়।”
ঐ স্ট্যাটাসে
হিন্দু সংহতির প্রধান তপন ঘোষেরও কমেন্টটি লক্ষণীয়। সে লিখেছে- “Like দিতে
পারলাম
না।”
কেন
সে লাইক দিতে পারল না? কারণ শিবসেনা কিংবা বিজেপির মিছিলের মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদী
গেরুয়া মিছিল বের করলেও, চট্টগ্রামের হিন্দুরা এখনো অস্ত্রহাতে বের হয়নি। যেদিন অস্ত্রহাতে
বের হবে এবং ‘যবনের রক্তে স্নান’ করবে, সেদিন তপন ঘোষ লাইক দেবে।
আর চট্টগ্রামের
মুসলমানরা এগুলোই সমর্থন করে থাকে। ঐ রথযাত্রার দিন চট্টগ্রামের হিন্দুরা গোটা শহরটি
কার্যত দখল করে নিয়েছিল, নেতৃত্বে ছিল নওফেল আর আজম নাছির। নওফেলের একটি ভিডিও ফেসবুকে
রয়েছে, যেখানে সে স্লোগান দিচ্ছে ‘ক্ষয় জগন্নাথ, ক্ষয় জগন্নাথ’ বলে।
উল্লেখ্য,
ভারতে যদি এখন কোনো মুসলিম নেতা প্রকাশ্যে বলে ‘ক্ষয় ছিড়াম’, তাহলে সেটা নিয়ে সেখানকার
মুসলমানরা কিছুটা হলেও প্রতিবাদ জানাবে। বিপরীতে নওফেলের এই ‘ক্ষয় জগন্নাথ’ স্লোগান
নিয়ে চট্টগ্রামের কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি, যেমনটি করেনি তাদের সন্তানদের প্রসাদ খাওয়ানোর
ব্যাপারে। এ সম্পর্কে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখা হয়েছে-
“হিন্দুদের সংগঠন 'ইসকন' চট্টগ্রামে যা
করেছে তার বিপরীতে প্রথম রিএকশানটা দেখানো উচিত ছিল অভিভাবকদের। যেসব স্কুলে তারা পূজার প্রসাদ খাইয়েছে এবং ছোট ছোট বাচ্চাদের হিন্দুদের ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ানো হয়েছে এসব স্কুলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত ছিল অভিভাবকদের। এরকম কিছু চোখে পড়েনি। কারণ আমাদের অভিভাবকরা এসব নিয়ে আসলে মাথা ঘামায় না, তার উপর
অনেকের কাছেই ইসকনের এই কাজটা নিতান্ত 'ভালো কাজ' বলে মনে
হবে। আর এই সচেতনতার অভাবটা তৈরি করেছে আমাদের আলেমরা। আচ্ছা আজকে চট্টগ্রামের কয়টা মসজিদে এই ইশ্যুতে খুতবা দেওয়া হয়েছে? মানুষকে সচেতন করা হয়েছে? হেজাফত ইসলাম বিক্ষোভ মিছিল করেছে, কিন্তু এতে
কি আসলে মানুষের মাঝে সচেতনতা এসেছে? মানুষ এ
বিক্ষোভ মিছিলকে "হেফাজতের মিছিল" হিসেবে নিয়েছে, নিজেদের হিসেবে নেয়নি।”
উল্লেখ্য,
ফেনী নদীর পর থেকে গোটা চট্টগ্রামকে উগ্র হিন্দু ও উপজাতি শাসিত আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত
করাটা যে সিআইএ ও ভারতের যৌথ প্ল্যান, এটি সবাই জানে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে
কাশ্মীর স্টাইলে, চট্টগ্রামের মুসলমানদের হিন্দুপ্রীতির সৌজন্যে! কাশ্মীর দখল হয়েছিল
৩৭০ ধারার মূলা ঝুলিয়ে, যে তোমরা কাশ্মীরিরা পাকিস্তানে না গিয়ে ভারতের সাথে থাকলে
তোমাদের এই এই সুবিধা দেয়া হবে! কাশ্মীরিরা দালাল শেখ আব্দুল্লাহর প্ররোচনায় ও হিন্দুপ্রীতির
কারণে সেই পথে পা বাড়ায়। এর পরের ইতিহাস তো সবারই জানা!
মূলত সেনাবাহিনী
নামালেই দেশ দখল হয় না, যদি না জনগণ নিজেই দখলদারদের গোলামি করতে চায়। দখলদাররা এসব
৩৭০ ধারার মূলা ঝুলায়, আর ডি-মরালাইজড কাফিরপ্রীতিতে ভোগা মুসলিমরা সেই ফাঁদে পা দেয়
এবং সেটাকেই মূলত ‘পরাধীনতা’ বলে অভিহিত করা যায়। ধরা যাক, চট্টগ্রাম অঞ্চলটি ভারত
ও আমেরিকার যৌথ সেনাবাহিনী দখল করল। এরপর তারা চট্টগ্রামের মুসলমানদের উদ্দেশ্যে এরকম
৩৭০ মার্কা একটা মূলা ঝুলাবে, যে তোমাদের এই এই সুবিধা দেয়া হবে, তোমরা আমাদের মেনে
নাও!
চট্টগ্রামের
মুসলমানরা তখন চিন্তা করবে, তাদের প্রাণের প্রিয় হিন্দু প্রতিবেশী, জয় জগন্নাথ আর ইসকনের
গোচনা-মারা প্রসাদের চেয়ে কী স্বাধীনতা বেশি কাম্য! হতেই পারে না, সুতরাং মেনে নাও
অমুক ধারা, তমুক ধারা! স্বীকৃতি দাও হিন্দু রাষ্ট্রের! এভাবেই বাংলার বুক চিরে আরেকটি
পরাধীন ফিলিস্তিন কিংবা কাশ্মীরের জন্ম হবে, আর হিন্দুপ্রেমিক চট্টগ্রামের মুসলমানরা
ধর্ষণে ধর্ষণে ক্ষতবিক্ষত হবে তাদের প্রতিবেশী রোহিঙ্গাদের মতো।
Post a Comment