“জানি না বাংলাদেশে কেন এত চরিত্রহীনা ও লম্পট মোনাফেক এর জন্ম হয়।”

“জানি না বাংলাদেশে কেন এত চরিত্রহীনা ও লম্পট মোনাফেক এর জন্ম হয়।”

“এই বাংলাদেশীরা টাকার জন্য এত নিচে নামতে পারে তা আগে ধারণা ছিল না..”


“বাংলাদোশের যত সানিউরের মত ভিখারী আছে সবাই ভারতে ভিক্ষা চাইতে আসে।”


উপরের কমেন্টগুলো ভারতীয় হিন্দুদের নয়, বরং হিন্দুদের ভাই ডাকা ভারতের কথিত মুসলমানদের। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পলায়ন করা নাস্তিক সানিউর রহমানকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সানাউল্লাহ খান একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পরই তারা উপরোক্ত কমেন্টগুলো করা শুরু করে, যেন সানিউর রহমানই বাংলাদেশের গোটা মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী! (https://goo.gl/dB0mvq, http://archive.is/hWT3u)

পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের এরকম কমেন্ট আমি এর আগেও বহু দেখেছি। যেমন গণজাগরণ মঞ্চের দোহাই দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের অনেকেই বলে থাকে, “বাংলাদেশের মুসলমানরা সব হলো নাস্তিক। সেদেশে ঘরে ঘরে নাস্তিক জন্ম নেয়।” অথচ বাস্তবতা হলো, গণজাগরণ মঞ্চের মূল প্রণোদনা এসেছিল তাদেরই কলকাতা থেকে। কলকাতার বহু কবি-সাহিত্যিক এই গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষে গান ও কবিতা লিখেছিল, ফেসবুকে প্রচার চালিয়েছিল। অথচ এই গণ্ডমূর্খগুলো গণজাগরণ মঞ্চের জন্য দায়ী করছে বাংলাদেশের গোটা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে।


অথচ ঠিক এর বিপরীতে মনোভাব ভারতীয় মুসলমানরা লালন করে সেদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের নিয়ে। যেমন সানাউল্লাহ খানের স্ট্যাটাসেই একজন কমেন্ট করেছে-


“প্রতিটি ভিডিও তে ‘সাধারণ হিন্দু ভাই’দের মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। আমরা এখন থেকে যদি সচেতন না হই আমাদের অজান্তে আমাদের এক চরম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সম্মুখীন হতে হবে।”


অর্থাৎ এক সানিউর রহমানের জন্য বাংলাদেশের সব সাধারণ মুসলমানই হলো গিয়ে “লম্পট মোনাফেক”। বিপরীতে বিজেপির ঝুলি ভরে ভোট দিলেও, ফেসবুকে সারাদিন নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে কটূক্তি করলেও ভারতের সব হিন্দুরা কিন্তু খারাপ নয়, বরং তারা হচ্ছে গিয়ে ‘ভাই’। এই হলো পশ্চিমবঙ্গ সহ তাবৎ ভারতীয় মুসলমানদের মেন্টালিটি। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার জরিপে এসেছে যে, ভারতের ৮২% হিন্দুর মতে গরুর গোশত খেলে মুসলমানদের শাস্তি দেয়া উচিত। এর বিপরীতে ৭৪% মুসলিমই মনে করে, হিন্দুরা তাদের খুব ভালো বন্ধু। (http://archive.is/5tRxq)


না পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের সাথে ঝগড়া করার ইচ্ছা আমার নেই, বরং তাদের নির্বুদ্ধিতা ও একতরফা হিন্দুপ্রীতি দেখে আমার করুণা হয়। এরা হলো গিয়ে গিনিপিগ। তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, সপা সব দলের হিন্দুরা ভারতীয় মুসলমানদের গিনিপিগের মতো ব্যবহার করছে। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা বছরের পর বছর বামদের জিতিয়েছে, এরপর বামদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে তৃণমূলের কাছে গিয়েছে। আবার তৃণমূলে এসেও তাদেরকে দেখতে হচ্ছে অস্ত্রহাতে রাম নবমীর মিছিল। উত্তরপ্রদেশের মুসলমানরা কংগ্রেসকে একসময় একতরফা ভোট দিত, সেই কংগ্রেস আমলেই অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভাঙা হলো। এরপর উত্তরপ্রদেশের মুসলমানরা ক্ষমতায় আনলো সমাজবাদী পার্টিতে, তারাও করল মুজাফফরনগর দাঙ্গা।


এরপর আর কাকে ভোট দিবে তারা? বিজেপি ছাড়া তো কেউ বাকি নেই, সুতরাং তাকেই ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসালো উত্তরপ্রদেশের মুসলমানরা। কেন ভারতীয় মুসলমানরা নিজেদের দল গঠন করলেই তো পারে, বারবার হিন্দুদের লেজ ধরার কি দরকার? কিন্তু সেটি ভারতীয় মুসলমানদের পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ তাদের মনে রয়েছে হিন্দুপ্রেম। যতোই মার খাক, ঘুরেফিরে তারা হিন্দুর লেজই ধরবে আর বাংলাদেশের মুসলমানদের গালিগালাজ করে যাবে।