কিছুদিন আগে কওমি মাদ্রাসার সনদ নিয়ে একটি লেখা পড়েছিলাম ফেসবুকে। তারা কওমি মাদ্রাসার সনদের বিনিময়ে ৫ই মে এর বিষয়টি আপোষ করেছে, এই বিষয়টি তুলে ধরলেই তারা বলে 'আমাদের বিষয় আমরা বুঝবো", 'মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি, না?', 'সুযোগসন্ধানী ফিতনাবাজ'। 'রক্তও দিয়েছি আমরা, সনদ আর স্বীকৃতিও আমাদের। তোমাদের বাইরের লোকের এতো মাথাব্যাথা কেন?’ (http://bit.ly/2ye1DBp)
উল্লেখ্য, আমার বিগত লেখাটিতেও এধরণের কিছু কমেন্ট এসেছে। একজন ভুলভাল বানানে লিখেছে
// #আজ কাল দেখতেচি মায়ের চেয়ে (মামির) দরদ টা একটু বেসি।
আজ যারা কওমীর আলেমদের নিয়ে এত সমলছনা করছে,এর আগেতো কখনো দেখিনি তোমাদের মাঝে তাদের জন্য সরিষা পরিমান ভালবাসা।
একটা প্রবাদ আমাদের সকলেরই জানা
( শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে) তোমাদের কাছেতো ভাল কিচুই পাইনি তাহলে তোমরা সমলছনা করার অধিকার পাইলা কৈ?//
উল্লেখ্য, কওমি মাদ্রাসাগুলো তাদের নামের সাথে যে ‘কওম’ শব্দটা লাগায়, তার মূল কারণ তাদের মাদ্রাসার মূলনীতি হচ্ছে সরকারের থেকে তারা কোনো সহযোগিতা নেবে না, কওম তথা সম্প্রদায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে, যাকাত-ফেতরা নিয়ে, কুরবানীর চামড়া নিয়ে তারা তাদের ব্যয় মেটাবে। গ্রামাঞ্চলে এই মাদ্রাসা ছাত্রদের দিয়ে বিভিন্ন বাড়ি থেকে চাল, পাটখড়ি যোগাড় করার কাজও করানো হয়।
একটি পোস্ট ফেসবুকে দেখেছিলাম, সেখানে দেখানো হয়েছিল একটি অবস্থাপন্ন পরিবারের ছেলেকে দ্বীনি শিক্ষার জন্য স্বেচ্ছায় মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। যেহেতু অবস্থাপন্ন পরিবারের সন্তান, সেহেতু অভিভাবকেরা বলে দিয়েছিল যেন তার ছেলেকে দিয়ে পাটকাঠি যোগাড় করানোর মতো কাজ না করানো হয়। শুরুতে বলে নেয়ার পরও সেই ছেলেকে পাটকাঠি যোগাড় করার জন্য জোর করা হয় এবং ছেলেটি তা করতে না চাইলে তাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। (http://bit.ly/2RpTQcj)
অর্থাৎ তারা এতোদিন কওমের ডালভাত খেয়ে, চামড়া থেকে শুরু করে পাটকাঠি যোগাড় করেও দিন গুজরান করেছে। এখন আওয়ামী সনদ পেয়ে তাদের পাখনা গজিয়েছে, তাই সেই কওম এখন ‘বাইরের লোক’ হয়ে গিয়েছে। কওমের উদ্দেশ্যেই তারা এখন আস্ফালন প্রকাশ করছে এই বলে যে
“তোমাদের কাছেতো ভাল কিচুই পাইনি তাহলে তোমরা সমলছনা করার অধিকার পাইলা কৈ?”
তা এই বিষয়টিকে কওমের সদস্যরা কিভাবে দেখবেন? দুধকলা দিয়ে কালসাপ বড় করেছেন কী এতোদিন? অবশ্য নিন্মশ্রেণীর লোকদের কৃতজ্ঞতাবোধ এমনিতেই কম হয়। হঠাৎ বিরিয়ানীর স্বাদ পেলে মুহূর্তেই তারা সেই অভিভাবককে অস্বীকার করতে পারে, যে কিনা তাকে এতোদিন ধরে ডালভাত খাইয়ে বড় করে এসেছিল।
Post a Comment