(১)
কিছুদিন
আগে খবরে পড়লাম, কলকাতা থেকে দুই বুড়োবুড়ি এদেশে এসেছে ‘তীর্থ’ দর্শন করতে। ঢাকায় এসে সিএনজিতে ড্রাইভারের প্রতারণা ও ছিনতাইয়ের কবলে
পড়ে তাদের সর্বস্ব খোয়া যায়, যা মোটেই অস্বাভাবিক
কিছু নয়। অস্বাভাবিক হলো এটাই যে, ঘটনা ঘটার মাত্র
৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের ত্বরিৎ পদক্ষেপে তাদের সমস্ত মালামাল ফেরত আনা হয়!
ঐ
বুড়োবুড়ি যদি কলকাতায় বা ভারতের অন্য
কোথাও এধরণের ছিনতাইয়ের শিকার হতো, সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই তারা এধরণের ভিভিআইপি সার্ভিস নিজ দেশের পুলিশের থেকে পেত না। সুতরাং তারা কেন এদেশে আসতে আগ্রহী হবে না, হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিভিন্ন নিউজ পোর্টালের খবর অনুযায়ী, বিগত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বরং এদেশে লোকজন আসছে দুর্গাপূজায় যোগ দিতে, কারণ ভারতেও নাকি এত সুযোগসুবিধা পায়
না তারা। সবাই-ই যে চায়
নিজ নিজ অনুকূল পরিবেশ যেতে।
(২)
যেভাবে
কলকাতার লোকজন তাদের দেশের তুলনায়ও অনুকূল পরিবেশ পেয়ে এদেশে আসছে, ঠিক সেই কারণেই মোদিও এদেশে আসছে। আর মোদির কাম্য
এই পরিবেশ সৃষ্টির দায় সরকারের একার নয়, বরং সিংহভাগ ‘কৃতিত্ব’ই এদেশের অছাম্প্রদায়িক
জনতার।
এদেশে
সরস্বতী পূজার খাতিরে নির্বাচন, এসএসসি পরীক্ষা, বইমেলা সব পিছিয়ে দেয়া
হয়। এর দায় কিন্তু
সরকারের নয়, বরং আজকে ব্যাপক মোদি বিরোধী স্টান্ট জাহির করা নুড়া পাগলা, চর্মনাই সকলেই তখন সরস্বতীর হাঁসের পিঠে চড়েছিল। যার ফলে ছুটির তালিকা বহির্ভূত একটি সংখ্যালঘু ধর্মীয় উৎসবের কারণে গোটা দেশকে স্থবির করে দেয়া হয়।
অনলাইনের
বিভিন্ন পোস্টের পাবলিক রিএকশন দেখে বোঝা গিয়েছিল যে, জনগণ এর বিরোধী নয়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এদেশের প্রকাশনীগুলো সারাবছর মাছি মেরে এক ফেব্রুয়ারী মাসে
ব্যবসা করে, তারাও নূন্যতম প্রতিবাদ জানালো না মেলা একদিন
কমিয়ে দেওয়ার কারণে! বিষয়টা এরকম যে, প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি যদি রাস্তা দিয়ে যায়, আশেপাশের সব গাড়ি অন্তত
১০-১৫ মিনিট স্থবির
হয়ে থাকে। সরস্বতী পূজার খাতিরে চর্মনাই-নুড়া পাগলাদের নেতৃত্বে এদেশের অছাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠী স্থবির হয়ে ছিল টানা ২ দিন।
এখন
বিদেশমন্ত্রী মোমেন যদি বলে যে, মোদিকে তারা সর্বোচ্চ সম্মান দেবে, এজন্য তাকে কি খুব একটা
দোষ দেয়া যায়? কারণ এদেশের সরস্বতীর পূজারী সম্প্রদায় মোদির নেতৃত্বাধীন, যে সম্প্রদায়কে নিজের
প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি সম্মান দিয়েছে অথর্ব অছাম্প্রদায়িক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। সুতরাং মোদিকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হলে সেটা কি খুব আশ্চর্যের
বিষয় হবে?
এদেশের
সংখ্যাগুরুরা নিজের পশ্চাৎদেশগুলোকে অছাম্প্রদায়িকতার তেল মেখে এমনই নরম করেছে যে, মোদির মতো বউ ছেড়ে আসা
নপুংশকেরও তা দেখে লোভ
হয়। শুরুতে বলেছি যে, সবাই-ই চায় অনুকূল
পরিবেশ পেতে। ভারতে পূজা করতে হলে নানান নিয়ম মানতে হয়, দূষণ রোধের খাতিরে যত্রতত্র মূর্তি ডোবানো যায় না, মূর্তি চাইলেই বিল্ডিংয়ের সমান লম্বা করতে পারে না তারা। কিন্তু
অছাম্প্রদায়িক পশ্চাৎদেশওয়ালা জনগোষ্ঠীর এই বাংলাদেশে তারা
চূড়ান্ত স্বাধীন, তাই তারা দুর্গাপূজা পালন করতে এখন কলকাতা রেখে এদেশে আসছে। তাছাড়া দিল্লীর রিসেন্ট ঘটনায় ভারতীয় মুসলমানদের পাছাও এখন যথেষ্ট শক্ত হয়ে উঠছে, তাতে মোদিরা এখন তাদের ঘাসপাতা খাওয়া বংশদণ্ড নিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। যেহেতু দুনিয়ার বুকে নরম পাছাওয়ালা অছাম্প্রদায়িক যবনদের দেশ হিসেবে একমাত্র বাংলাদেশকেই এখন ধরা যেতে পারে, তো আব ঢাকা
মে চালিয়ে…
(৩)
সুতরাং
বাংলাদেশে মোদি আসা ঠেকানোর এখন একটাই উপায়, তা হলো ভারতের
ন্যায় এদেশেও পাছা শক্ত করে পদক্ষেপ নেয়া। ইদানিং বাংলাদেশের অনেক মোদিভক্তকে দেখা যাচ্ছে, সরাসরি মোদির পক্ষে, দিল্লীতে মুসলিম হত্যার পক্ষে উস্কানিমূলক পোস্ট দিতে। যেমন বরিশাল ভার্সিটির সোশিওলজি ডিপার্টমেন্টের এক ছাত্র জয়ন্ত
কর্মকার, ফেসবুকে তার নিজ সম্প্রদায়ের বাড়িতে বাড়িতে ধারালো অস্ত্র, বিষাক্ত দ্রব্য, এসিড রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এরকম একটাকে যদি তার প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করানো যায়, তাহলেই দেখা যাবে যে তাতে মোদির
গেরুয়াবাদী অহংবোধে লেগেছে এবং সে বাংলাদেশ সফর
বাতিল করেছে।
আর
সরকার যদি কিছু করতে না চায়, সেক্ষেত্রে
এদেরকে চিহ্নিত করে দু-একটা উত্তম-মধ্যম দিয়ে ভিডিও করে ছড়িয়ে দিলেও কাজ হয়ে যাবে। তাতে দেখা যাবে মোদি নিজ থেকেই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মুজিববর্ষের আমন্ত্রণ বাতিল করেছে, তখন আম্লীগ উল্টো মোদির হাত-পা ধরবে নিজ
দেশে নিয়ে আসার জন্য।
কিন্তু
দুঃখের বিষয়, এদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও এখন নুড়া পাগলা-চর্মনাইদের মতো মুনাফিকী প্রবেশ করেছে। চিন্তা করলেও কষ্ট হয়, চট্টগ্রামের ইসকনের প্রসাদ খাওয়ানোর ভিডিও ছড়ানো কারণে আমার মূল পেজটি রিপোর্ট করে বন্ধ করে দিয়েছিল ভারতীয় বিজেপি আইটি সেল, হিন্দিতে পোস্ট লিখে আমার ঐ পেজে রিপোর্ট
করার আহবান জানানো হয়েছিল। সেই ভিডিওকে কেন্দ্র করে এই চর্মনাইরা বেশ
নাম কামিয়েছিল, অনেক সভা-সমাবেশ করে গরম গরম কথা বলেছিল, যা ছিল স্রেফ
খোলস-মুনাফিকী। তাই তো নুড়া পাগলা
সহ এরাও সরস্বতীর হাঁসের পিঠে সওয়ার হয়েছিল। তাই বারবার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হয়, এই মুনাফিকদের উপত্যকা
আমার দেশ নয়!
মুনাফিকরা
এদেশে মোদির আগমন ঠেকাতে পারবে না, বরং সুযোগ পেলে এরাও চাওয়ালার পায়ে মাথা ঠেকাবে। মোদিকে ঠেকাতে হলে এদেশের মানুষকে মুসলমান হতে হবে আর মুসলমান হওয়ার
অর্থ এই-ই যে,
মুসলমানিত্বের বিষয়টি তার নিকট সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে। এদেশে মোদির জাতভাইদের দ্বারা প্রকাশ্যে নবী-রসূলের অবমাননা থেকে শুরু করে ধর্ষণ-হত্যার হুমকি দেয়ার পরও যারা বলে সব ইয়ে তো
খারাপ নয়, তারা
আর যাই-ই হোক দ্বীন
ইসলামকে মোটেই গুরুত্ব দিতে পারেনি।
Post a Comment