তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’ অপন্যাসের শেষে একটি ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে, যেটি প্রায় সবাই জানেন। কাহিনীর মূল চরিত্র হিন্দু যুবকটি রাস্তায় ‘মুসলমান’ পতিতার খোঁজ করতে থাকে। একটি পতিতাকে সে শুরুতে নাম জিজ্ঞেস করে, এরপর জিজ্ঞেস করে সে মুসলমান কিনা। পতিতাটি একটু অবাক হয়ে বলে যে সে মুসলমান। এরপর হিন্দু যুবকটি ঐ পতিতা মেয়েটিকে বাসায় নিয়ে এসে হিংস্রভাবে ভোগ করে মানসিক তৃপ্তিলাভ করে এই ভেবে যে, সে একটি মুসলমান মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।

পাঠকদের জানা দরকার, উপরের ন্যায় ঘটনা নিছক উপন্যাসেই ঘটেনি। হিন্দুদের আজন্ম লালিত ফ্যান্টাসি হলো মুসলমান মহিলার সাথে যৌনতা করা। তা সে পতিতা ভাড়া করে, এমনকি পতিতাশ্রেণীর রমণীকে বিয়ে করে হলেও! ‘বাজিরাও মাস্তানি’ সিনেমাটির কথাই ধরা যাক। ইতিহাসের পাতায় এই বাজিরাও ছিল মারাঠা ব্রাহ্মণ মন্ত্রী। সে ‘মাস্তানি’ নামক যে মেয়েটিকে বিয়ে করেছিল, সে ছিল অন্য এক হিন্দু রাজার অধীনস্থ নর্তকীর মেয়ে। উইকিপিডিয়ায় রয়েছে, মাস্তানির মা ঐ নর্তকীটি ছিল ইরান থেকে আগত। এ কারণে হিন্দুরা এই ‘বাজিরাও-মাস্তানি’র ঘটনাটিকে দেখে থাকে হিন্দু পুরুষের সাথে মুসলমান মেয়ের (!) মেলামেশা হিসেবে, এবং তারা টিভি-সিনেমায় এ বিষয়টি খুব গর্বের সাথে প্রচার করে থাকে।

শুধু এই বাজিরাও নয়। বরং হিন্দুদের নেতৃস্থানীয় যারা রয়েছে, তারা প্রত্যেকেই এভাবে পতিতা ভাড়া করেছে নিজেদের মুসলমান নারী (!) ভোগের খায়েশ মেটানোর জন্য। রাজা রামমোহন রায় ‘যবনী পতিতা’ ভাড়া করে সমাজে তা নিয়ে গর্ববোধ করত। ব্রিটিশ আমলে লেখা ‘নববাবু বিলাস’ বইতে স্পষ্ট রয়েছে যে, পতিতালয়ে গিয়ে যবনী পতিতার খোঁজ করবে। তাই জয়া আহসান বলেন, তসলিমা নাসরিন বলেন আর শাকিলা ‘শর্মা’বলেন, এসব মধ্যবয়স্ক ‘যবনী’ পতিতাগুলো হিন্দুসমাজে ভালোই কদর পায়। হিন্দুরা যদি জয়া আহসানের মতো মধ্যবয়স্ক খানকির ক্লিভেজ দেখিয়ে মজা নেয়, সেক্ষেত্রে যেসব মুসলমান মেয়ে এখনো কুমারী, তাদেরকে শ্লীলতাহানি করে, তাদের বুকে হাত চালিয়ে হিন্দুরা কতোটুকু তৃপ্তি পেতে পারে? যেমনটি কয়েকদিন আগেই শাঁখারিবাজারের হোলিপূজায় হয়েছে?

অসাম্প্রদায়িক অথর্ব মুসলমানরা এগুলো বুঝবে না। ভারতের দেবেশ রায়ের ‘দাঙ্গার প্রতিবেদন’ বইতে রয়েছে যে, দাঙ্গার সময়ে হিন্দুরা ভালো ভালো পরিবারের মুসলমান তরুণীদের বেছে নিয়ে তাদেরকে দলিত যুবকদের নিয়ে ধর্ষণ করায়। কারণ একে তো মুসলমান মেয়েদেরকে হিন্দু যুবক দিয়ে ভোগ করালে মুসলমানদের হেয় করা হয়। আর যদি বংশগত ডিফারেন্স বাড়ানো যায়, মানে বস্তির নিচবংশজাত হিন্দুটিকে দিয়ে যদি অট্টালিকার ভালো পরিবারের মুসলমান মেয়েটিকে ধর্ষণ করানো যায়, তাহলে তো কথাই নেই। হিন্দুদের দৃষ্টিতে তা বিশ্বজয়ের সমতুল্য!

 গুজরাট দাঙ্গার সময়ে ‘গুলবার্গ সোসাইটি’ নামক একটি হাউজিং এরিয়ায়মুসলমান মেয়েদেরকে রেপ করা হয়, যেটি ছিল ধনী মুসলমানদের এলাকা হিসেবে পরিচিত।এই শাঁখারিবাজার নামক যে এলাকাটি, সেটি ঢাকা শহরের সবচেয়ে নিম্নশ্রেণীর লোকদের বসবাসের জায়গা হিসেবে স্বীকৃত। শাখারিপট্টির নিম্নবর্ণের হিন্দুরা কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি যে, তারা ভালো পরিবারের মুসলমান মেয়েদের গায়ে হাত দিয়ে তাদের শ্লীলতাহানি করতে পারবে। আপনারা বিষয়টিকে তুলনা করুন আপনার বাড়ির চাকরের বিছানায় আপনার মেয়ের যাওয়ার সাথে।হিন্দুদের সেই সুযোগটিই করে দিল এই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। অথর্ব মুসলমানরা এর মর্ম বুঝবে না, কারণ তারা হলো গিয়ে ‘অসাম্প্রদায়িক’! এই ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ নামক জিনিসটি এদেশের মুসলমানদের সমস্ত সুস্থ চিন্তাভাবনা-বোধবুদ্ধি অনেক আগেই নষ্ট করে দিয়েছে।

Post a Comment

 
Top