নেকড়ে আর মেষশাবকের গল্পটি আমরা সবাই জানি। মেষশাবককে খেতে যেভাবে নেকড়ের ছুতার দরকার হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই মুসলিম হত্যা করতে কাফিরেরা নানারকম ছুতোর অবতারণা করে থাকে। ইরাকে হামলা করতে ‘ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র’ ছুতো, সিরিয়ায় ‘আইএস’ ছুতো, আর সম্প্রতি বার্মায় ‘আরসা’ ছুতোয় মুসলিম হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দেয়া হয়েছে।

অর্থাৎ যদি কোনো ছুতানাতায় মুসলিম হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেয়া যায়, তাহলেই সেই দেশকে সিরিয়া-আফগানিস্তানে পরিণত করার পথ উন্মুক্ত হয়। উল্লেখ্য, বর্তমানে এদেশে রংপুরে ৬ জন মুসলিম হত্যা করাটা সঠিক ছিল বলে অনলাইনে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে নাস্তিক ও হিন্দু সম্প্রদায়। নাস্তিক আরিফুর রহমানের সহযোগী ব্রিটেনের অজন্তা দেব রায় নামক কট্টর হিন্দু বেশ্যাটি বারবার ইনিয়ে বিনিয়ে বলে যাচ্ছে, ”মুসলমানদের উপর গুলি না চালালে কি যে হয়ে যেতো! ভাগ্য ভালো যে মুসলমানদের উপর গুলি করা হয়েছে।”

এদের এই মিথ্যাচারের জবাব দেয়া কঠিন কিছু নয়। কারণ শুরুতেই মুসলমানরা রাস্তায় নামেনি, থানায় গিয়ে মামলা করেছে। যদি সত্যিই হিন্দুদের হামলা করার ইচ্ছা রংপুরের মুসলমানদের থাকত, তাহলে ২৮শে অক্টোবরেই তো তারা হামলা করতে পারত। পুলিশের উপর আস্থা রেখে ১০ দিন ধরে অপেক্ষা করার কী দরকার ছিল রংপুরবাসীর? কখনো শুনেছেন, হামলার আগে  হামলাকারীকে পুলিশের কাছে বিচার চাইতে?

বর্তমান আওয়ামী লীগ আমলে হিন্দুরা ধরেই নিয়েছে যে, তারা ইসলাম নিয়ে কটূক্তির লাইফটাইম লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছে। হিন্দুদের সেই রামরাজত্বে যদি কোন মুসলমান ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পায়, সেক্ষেত্রে আমেরিকার সমীরণ ভট্টাচার্যের মতে তাকে গুলি করে হত্যা করতে হবে। রংপুরে সেই মুসলিম হত্যার জাস্টিফিকেশনই রচিত হয়ে গেল। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে যে, হিন্দুপাড়া থেকে বহু দূরে মুসল্লীরা রাজপথে প্রতিবাদ করছে, সেখানেই তাদের উপর গুলি চালানো হয়েছে হিন্দুপাড়ায় ‘হামলা’র আশঙ্কায়।

সে হিসেবে অদূর ভবিষ্যতে দেখা যাবে, হিন্দুপাড়া থেকে দশ মাইল দূরে কোন মসজিদে ইসলাম নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করা হয়েছে, সেখানেও পুলিশ ঢুকে মুসল্লীদের হত্যা করেছে। টেকনাফে কেউ ইসলাম অবমাননা করেছে, সেটার প্রতিবাদ তেঁতুলিয়া থেকে করলেও সেখানেও মুসল্লীদের হত্যা করা হয়েছে। এভাবেই সোনার বাংলা অচিরেই বার্মায় পরিণত হবে। বার্মার মংডু থেকে রংপুরের দুরত্ব খুব বেশি নয়, উভয় জায়গাতেই গ্রামগুলো মুসলিমশূন্য করা হয়েছে। এ অবস্থা থেকে মুসলমানদের উত্তরণের একমাত্র উপায় হলো, না পালিয়ে একত্রিত হয়ে রুখে দাঁড়ানো। এদেশের মুসলমানরা হিন্দুদের নাটকের শিকার হয়ে দিনাজপুরে পালিয়েছে, নাসিরনগরে পালিয়েছে, রংপুরে পালিয়েছে। তারা পালায় কেন, পালিয়ে তো রক্ষা পাওয়া যাবে না। তাদেরকে বুঝতে হবে যে, আওয়ামী দানবের জিয়নকাঠি-মরণকাঠি হলো হিন্দু সম্প্রদায়। জিয়নকাঠির পাখনা ছিঁড়ে যেখানে দানবকে বশীভূত করতে হয়, সেখানে হিন্দুর রক্ত দেখতে বাঙালি মুসলমান ভয় পায়।

সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কেন মুসলমানদের উপর আগ্রাসী হবে না? যেদিন বাংলার মুসলমানরা অসাম্প্রদায়িকতার শিকল ছিন্ন করে, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে সংখ্যালঘুদের জীবন-মরণের এখতিয়ার নিজ হাতে নিতে পারবে, সেদিনই আওয়ামী দানবটি এদেশের মুসলমানদের সমীহ করতে শিখবে। অর্থাৎ রংপুরবাসী মুসলমানরা যদি নিরামিষ মানববন্ধনে লিপ্ত না থেকে শুরুতেই ৫০-১০০ হিন্দুর মরামুখ নিশ্চিত করতে পারত, আওয়ামী দানব আজ সংযত হয়ে যেত। সেই সুযোগ হয়তো রংপুরের কাপুরুষ মুসলমানদের ক্ষেত্রে হয়নি। তবে আমি আশাবাদী যে, মুসলমানদের ফাঁসাতে হিন্দুদের এই গৎবাধা নাটক নাসিরনগর, কর্নাই, রংপুরে মঞ্চায়িত হলেও এদেশের কোন না কোন জায়গায় মঞ্চের পর্দা ছিঁড়তে সক্ষম হবে মুসলমানরা। কোন না কোন জায়গায় ঠিকই হিন্দুদের চক্রান্ত বুমেরাং হবেই। সেই দিনটির জন্যই আমরা মুসলমানরা আজও এদেশে আশায় বুকে বেঁধে বেঁচে রয়েছি।

Post a Comment

 
Top