রিসেন্ট
একটি ইন্টারেস্টিং কেস ফেসবুকে দেখতে পেলাম, তা হলো এক
দলিত গোত্রের মেয়ে আরেক দলিত গোত্রের ছেলেকে প্রেম করায় বিয়ে করায় শ্বশুড়ের লোকেরা জামাইয়ের পরিবারকে মেরে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে, কারণ ছেলে নাকি তাদের তুলনায় ‘নিচু জাতের’। :v
এমনই
একটি ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বগুড়ায় সাত মাথা সুইপার কলোনীতে। বিশাল ডোম নামে এক তরুণ ভালবাসে
বাঁশফোর সম্প্রদায়ের এক মেয়েকে যাঁর
নাম মণিষা বাঁশফোর। তাদের প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। যেহেতু বাঁশফোর সম্প্রদায় ডোম সম্প্রদায়কে ছোট জাত মনে করে তাই তাদের সম্পর্কে কেউই মেনে নিবে না তাই তারা
পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। ....
এই
ছেলে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের আত্মীয় স্বজনরা বিশাল ডোমের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং লুটপাট করে বিশাল ডোমের পরিবারকে উচ্ছেদ করে।এই পাড়াতে ডোম পরিবারের ৫ টি পরিবার
বাস করে আর বাঁশফোর সম্প্রদায়ের
ঘর আছে ৮০/৯০ টি।.....
তারা
যখন গাড়ীতে করে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় মধ্য পথে
বিশাল ডোমকে বেদম পিটায়, বগুড়ার লোকজন পিটিয়ে তার কাছ থেকে বিয়ের কাগজ কেড়ে নেয়। তার পরে বগুড়া পৌঁছানোর পরে ছেলেকে আলাদা করে একটি ঘরে আটকিয়ে আবার বেদম পিটায় এবং জোর করে সাদা কাগজে বিশাল ডোমের স্বাক্ষর নেয়। (লিঙ্কঃ
http://archive.is/R6H4D, http://archive.fo/UEETf)
দারুণ
ইন্টারেস্টিং কাহিনি তাই না! ‘বাঁশফোর’ হচ্ছে গিয়ে সুইপার গোত্রের দলিত হিন্দুদের উপাধি, যারা ম্যানহোলের গর্তে নেমে পায়খানা পরিষ্কার করে। আর ‘ডোম’ মানে তো জানেনই, লাশকাটা
ঘরে বিকট দুর্গন্ধযুক্ত গলিত লাশের ময়নাতদন্তে এদের ব্যবহার করা হয়। এদের মধ্যেও ‘ব্রাহ্মণ্যবাদ’ কতো টনটনে দেখুন, পায়খানা হাতানো সুইপার লাশ হাতানো ডোমকে বলে তুই নীচু শ্রেণীর, তুই আমার মেয়েকে বিয়ে করেছিস কেন? এবার তোর বাড়ি ভাঙতে হবে, তোকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করতে হবে।
অর্থাৎ
‘ব্রাহ্মণ্যবাদ’ তথা নিচুশ্রেণীর হিন্দুদেরকে অবজ্ঞা করা, নির্যাতন করার বিষয়টি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত, তথা সার্বজনীন। ‘ব্রাহ্মণ্যবাদ’কে কেবল ব্রাহ্মণদের
সাথে যুক্ত করে ফেলাটা ভুল। কারণ ব্রাহ্মণ যেভাবে কায়স্থকে অবজ্ঞা করে, সেভাবে কায়স্থরাও বৈশ্য বা শূদ্রকে অবজ্ঞা
করে। এখন নিচের দিকের আলাদা কাস্ট হলে তো অবজ্ঞা করেই,
এমনকি নিজস্ব কাস্টের মধ্যেও যদি নিচের দিকের লোক হয়, তবেও হিন্দুরা তাকে অপমান করতে ছাড়ে না।
উদাহরণস্বরূপ,
সাহা এবং পাল উভয়ই শূদ্র, কিন্তু পালদের অবস্থান সাহাদের নীচে। বাংলাদেশের ‘সুরেশ সরিষার তৈল’ কোম্পানীর মালিক সুধীর সাহা, তার মেয়ে লিমা সাহা প্রেম করে বিয়ে করেছে ‘সৈকত পাল’কে। ফলে গুণ্ডা ভাড়া করে ‘পাল’ জামাইকে অপহরণ করে এখন জেল খাটছে সুধীর সাহা।
অধিকাংশ
ক্ষেত্রে নীচুশ্রেণীর হিন্দুদের ব্রাহ্মণ্যবাদ ব্রাহ্মণদের চেয়েও বেশি হয়, কারণ কাস্ট সিস্টেমের নীচের দিকে থাকায় নিচুশ্রেণীর হিন্দুটিকে এমনিতেই ব্রাহ্মণ-কায়স্থ-বৈশ্য এসব উচুশ্রেণীর হিন্দুদের অবজ্ঞা সইতে হয়। এটি তাকে পুষিয়ে নিতে হয় তারচেয়ে নীচের
হিন্দুটিকে অবজ্ঞা ও নির্যাতন করার
মাধ্যমে। এই তাড়না তার
মধ্যে সর্বক্ষণ কাজ করে, যে তাড়না ব্রাহ্মণ-কায়স্থদের মধ্যে নেই।
যে
কারণে নিচুশ্রেণীর হিন্দুরা হয় অধিকতর গোঁড়া,
গালিবাজ, মাদকাসক্ত ও অবধারিতভাবে ইসলামবিদ্বেষী।
অনলাইনে ইসলামবিরোধী সবচেয়ে খারাপ গালিগালাজ এই নমশূদ্ররাই করে
থাকে, কারণ তাদের মধ্যে নিজেদেরকে হিন্দু বলে প্রমাণ করার তাড়না থাকে সবচেয়ে বেশি।
Post a Comment