সম্প্রতি ধর্ষণ ঘটনার কিছুদিন পরেই উগ্র হিন্দু সুপ্রীতি ধরের উইমেন চ্যাপ্টারে একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়, যেখানে দাবি করা হয় ‘ধর্মীয় মৌলবাদ’ বৃদ্ধির কারণে ধর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বলা বাহুল্য, লেখাটির মধ্যে কোনো যুক্তি নেই, কেবল রয়েছে ইসলাম বিদ্বেষ। বিপরীতে মুসলমানরা অছাম্প্রদায়িক বিধায় ঘৃণা করতে অপারগ হওয়ায় এই সত্য তাদের দ্বারা উচ্চারিত হচ্ছে না যে, ধর্ষণ বৃদ্ধির পেছনে মূলত দায়ী এই নারীবাদ-ই।

উদাহরণস্বরূপ, তসলিমা নাসরিন একটি নারীবাদী। তার লেখা ‘ক’ বইতে যেসব পুরুষের দ্বারা তার নিগ্রহ কিংবা যৌনতার উল্লেখ রয়েছে, তারাও নারীবাদী। বইটা লেখার পর ঐসব নারীবাদী পুরুষদের রক্ষায়ও এগিয়ে আসে আরেকদল নারীবাদী, যাদের অন্যতম হচ্ছে মাসুদা ভাট্টি।

কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে মাসুদ মাহমুদ নামে ইউএসটিসির এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাসে উগ্র যৌনতামূলক বক্তব্য প্রদানের অভিযোগ উঠে। তার পক্ষে দাঁড়ায় উইমেন চ্যাপ্টার, প্রথম আলোর মতো তাবৎ নারীবাদী গোষ্ঠী।

মাত্র কিছুদিন হল, ‘মারজিয়া প্রভা’ নামক জলহস্তী নারীবাদী তার পরিচিত এক মেয়েকে তাদের পার্টিতে নিয়ে গাঁজা-ড্রাগস খাইয়ে ধর্ষণে সহায়তা করে রেপ কেসে জড়িয়েছে। বর্তমানে গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পলাতক অবস্থায় শাহবাগে নারীবাদীদের কথিত ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস প্রসব করে যাচ্ছে এই মারজিয়া প্রভা।

খেয়াল করলেই বোঝা যাবে যে, উপরোক্ত ধর্ষণকাণ্ডের কিছু বেসিক ধাঁচ রয়েছে। প্রথমে একটি মেয়েকে নারীবাদ, ইচ্ছার স্বাধীনতা এসব বলে পরপুরুষের সাথে কক্সবাজার, পাহাড়, নির্জন জায়গা এসব জায়গায় যেতে উদ্বুদ্ধ করা হয়, এরপর কায়দা করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। তসলিমা নাসরিনের সাথে শামসুল হক, ইমদাদুল হক মিলনের ক্ষেত্রে এমনটি হয়েছে। আবার জান্নাতুন নাইম প্রীতির সাথে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সমর্থক ইমতিয়াজ মাহমুদের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই হয়েছে।

যেতে না দিলে তা হবে নারী স্বাধীনতার বিরোধী! কিছুকাল আগেও এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের হলগুলোতে সান্ধ্য আইন প্রচলিত ছিল, যা নারীবাদীদের আন্দোলনে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ধরণের নারীবাদী প্র্যাকটিসের কারণেই আমেরিকা, সুইডেন, নরওয়ে এসব দেশে ধর্ষণের হার অত্যধিক বেশি হয়ে থাকে।

মূলত সমাজে ধর্ষণ বন্ধে পর্দা প্রচলনের পূর্বে এই নারীবাদ নিষিদ্ধ করাটা জরুরী। কারণ ভালো কিছু প্রতিষ্ঠা করার পূর্বে সিস্টেমের খারাপটা বের করে তবেই তা করতে হয়। কোনো পানির কূপে কুকুর বা এজাতীয় প্রাণী মরে পড়ে থাকলে সব পানি বের করে তারপর মৃত প্রাণীটিকে বের করে ফেলে দিতে হয়, ঐ মৃত প্রাণীটি কূপে থাকা পর্যন্ত তার পানি কিন্তু পাক হয় না। ঠিক সেভাবেই পর্দা প্রতিষ্ঠা তো করতেই হবে, কিন্তু নারীবাদ থাকা পর্যন্ত তার সুফল পাওয়া যাবে না। ধর্ষণ হতেই থাকবে।

উল্লেখ্য, এসব নারীবাদীরাই অনলাইনে নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবনী নিয়ে কটূক্তি করে থাকে। অথচ ‘নারীবাদী পুরুষ’ বলে যে প্রজাতি নারীবাদের ছায়াতলে বর্ধিত হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই ধর্ষক বৈ কিছু নয়। কিন্তু তারপরও মুসলমানরা নারীবাদকে উচ্ছেদ করতে সমর্থ হচ্ছে না যেহেতু তারা পিছিয়ে রয়েছে ঘৃণার যুদ্ধে!

সম্প্রতি আবরারের মৃত্যুবার্ষিকী নিয়ে অনেক শোরগোল হচ্ছে। কিন্তু যেই মণ্ডপ থেকে আবরারকে হত্যার পরিকল্পনা হলো সেই মণ্ডপের বিরুদ্ধে কিছু বলা হচ্ছে না, যেই মন্দির থেকে অমিত সাহা ধরা পড়ল সেই মন্দিরের বিরুদ্ধে তো কিছু বলা হচ্ছে না! যদি কূপের মধ্যে মৃতদেহ ফেলে রাখা হয়, কূপের পানি তো পাক হবে না। যতোই আবরারের মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হোক না কেন, ঐ মণ্ডপ-মন্দির থেকে নিত্যনতুন আবরার হত্যার ষড়যন্ত্র হতেই থাকবে।

নারীবাদী চেতনায় ধর্ষণ হলেও মুসলমান নারীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারছে না, কারণ অছাম্প্রদায়িক চেতনার আফিম খেয়ে তারা অক্ষমতা প্রকাশ করছে ঘৃণার যুদ্ধে।

আবরার হত্যায় তারা মণ্ডপের দিকে আঙুল তুলতে রাজি নয়, তারা ভারতবিরোধিতাকে সেক্যুলার রূপ দিতে চায়। কারণ অছাম্প্রদায়িকতার টোটকা খেয়ে তারা পিছিয়ে রয়েছে ঘৃণার যুদ্ধে।

মুসলমান ছাত্রদের হরেকৃষ্ণ বলিয়ে পূজার প্রসাদ খাওয়ালে, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির থেকে বাংলাদেশকে ভারতের সাথে একত্রিত করার ডাক উঠলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না, কারণ অথর্ব অছাম্প্রদায়িক মুসলমান অপারগতা প্রকাশ করছে ঘৃণা করতে, সে পর্যুদস্ত হয়েছে ঘৃণার যুদ্ধে।

ঘৃণার যুদ্ধে, ঘৃণার যুদ্ধে এবং ঘৃণার যুদ্ধে, মুসলমানরা তাদের প্রতিপক্ষের তুলনায় সহস্র সহস্র আলোকবর্ষ পিছিয়ে রয়েছে। ধর্ষণের মূল কারণ নারীকে সহজলভ্য করা, আর নারীবাদের তুলনায় কোনকিছুই নারীকে পুরুষের নিকট এতটা সহজলভ্য করতে পারে না। কিন্তু মুসলমানরা সেই নারীবাদের প্রতিই ঘৃণা প্রকাশ করতে পারছে না।

Post a Comment

 
Top