চট্টগ্রামের মেহেদীবাগ থেকে যে রাস্তাটা কাজীর দেউড়ির দিকে গেছে সেটা বেটারি গলি নামের একটা মোড়ে মিশেছে। ওই মোড়েই একটু বামদিকে চট্টেশ্বরি কালী মন্দির। কাজির দেউড়ি থেকে যে রাস্তাটা ওই মোড়ে এসে মিশেছে তার নাম জে.আই. মাদ্রাসা রোড। হিন্দুত্ববাদীদের দাবীর মুখে সরকার জে. আই মাদ্রাসা রোড এর নাম পরিবর্তন করে চট্টেশ্বরী রোড নাম করণ করে সাইনবোর্ড পাল্টানোর জন্য ওই এলাকার দোকানপাট এবং বাড়ির মালিকদের নোটিশ দেয়।
অথচ চট্টেশ্বরী রোড অন্য একটা রোড যেটা চকবাজার থেকে চট্টেশ্বরী মন্দির পর্যন্ত গেছে। এখন হিন্দুরা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা রাস্তা জে আই মাদ্রাসা রোডকে চট্টেশ্বরী রোড বানাতে চাইছে জোর করে। উল্লেখ্য জে. আই মাদ্রাসা এবং চট্টেশ্বরী মন্দির পাশাপাশি। এর পাশেই বেটারি গলি নামের একটি এলাকায় হিন্দুরা ৪০%।
এগুলো ব্যাকগ্রাউন্ড বললাম। এবার আসি আসল কথায়। চট্টেশ্বরী মন্দির থেকে হাঁটা দূরত্বে অল্প পশ্চিমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশাল সেনানিবাস। যেটা উঁচু সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। সেনানিবাসের পশ্চিম পাশেই চট্টগ্রামের বিভাগীয় মসজিদ জামিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি ওই সেনানিবাসের যে দেয়ালটি বেটারি গলি ঘেঁষা, সে দেয়ালের একটা অংশ ভাঙ্গা এবং ওই ভাঙ্গা অংশ দিয়ে সেনানিবাসের ভেতরে ঢুকলে দেখা যায় ছোট একটা আম বাগানে কিছু হিন্দুর পরিবার টিনশেড বস্তি ধরণের ঘর করে থাকছে। তারা পেশায় মুচি, মানে জুতো সেলাই করে। পাশাপাশি সেখানে জুতো তৈরির মিনি কারখানা। এই জুতোগুলো মূলত ফুটপাতে বিক্রির জন্য তৈরি করা হয়। এই উসিলায় সেখানে প্রচুর হিন্দুর যাওয়া আসা। এবং ওভার অল জায়গাটা নোংরা পুঁতিগন্ধময় স্যাঁতসেঁতে। অনেককে জিজ্ঞেস করায় তারা বলে এরা গরিব মুচি। তাই ওই পরিত্যক্ত (!) জায়গায় বস্তি করে থাকছে এবং আর্মিও তাদের দিয়ে সাফসুতরার কাজ করায় -এজন্য তাদেরকে তাড়িয়ে দিচ্ছেনা।
কিছুদিন আগে দেখি ওই টিনশেড ঘর আরো শক্তপোক্ত করে রিনোভেশন করেছে। নোংরা গলিগুলো পরিষ্কার সিমেন্ট বাঁধাই এবং জুতোর কারখানাও বেশ পরিচ্ছন্ন। দেখা যাচ্ছে সেখানে ভেতরে এবং বাইরে বাণী অর্চনা, শারদীয় শুভেচ্ছার ব্যানার। গীতা পাঠের পোস্টার, রথযাত্রার ব্যানার পোস্টার। এটা কি দখলদারীত্ব নয়?! কিছুদিন পরে ঠিকই মন্দির বানিয়ে বসবে। আর্মি যদি তাদের উচ্ছেদ করতে যায়, তাইলে তারা সংখ্যালঘু কার্ড খেলে তা প্রতিহত করবে। আমার প্রশ্ন রাষ্ট্রীয় কে.পি.আই ক্যাটাগরির স্থাপনা এবং এটা সেনানিবাস হওয়া সত্ত্বেও সেখানে একদল হিন্দু স্কোয়াটার কিভাবে বস্তি বানিয়ে থাকতে পারে?

Post a Comment

 
Top