বাথরুমে হিন্দু-বৌদ্ধ মূর্তি রাখা হয়েছে বলে কুরআন শরীফও রাখতে হবে (নাউযুবিল্লাহ) বলে যে আপত্তি জানিয়েছিল নারীবাদের ভেকধারী হিন্দুত্ববাদী সুপ্রীতি ধর, নিচের ছবিটি সেই বাথরুমের। সুপ্রীতি ধরের এক সহযোগী নারীবাদী তার ফেসবুক একাউন্টে ছবিটি শেয়ার করেছে।

অনভিজ্ঞ পাঠকেরা হয়তো চিন্তা করবেন, এখানে হিন্দু-বৌদ্ধ মূর্তি কই? পত্রিকায় মাঝেমাঝে ছবির ধাঁধাঁ আসে, একটা ছবি দিয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলা হয় ছবির মধ্যে অমুক লুকানো বস্তুটি খুঁজে বের করতে। পাঁচ-দশ মিনিট ব্রেন খাটানোর পর সেই ধাঁধাঁর সমাধান হয়। বলা বাহুল্য, নিচের ছবিটি ঐসব ধাঁধাঁর চেয়েও কঠিন। এতগুলো পুতুলের মধ্যে চট করে হিন্দু-বৌদ্ধ মূর্তি খুঁজে বের করা, শুধু তা-ই নয় সেটা নিয়ে স্ট্যাটাসও দেয়া, যেটা সর্বক্ষণ হিন্দুয়ানী চিন্তায় মগ্ন না থাকলে কিছুতেই সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় কথা, যেই ধর্মে গরুর মলমূত্র খাওয়া পূণ্যের কাজ, সেই ধর্মের মূর্তি টয়লেটে রাখলে তা অবমাননা হবে কেন? মূলত সুপ্রীতি ধর আপত্তি জানিয়েছে, এমনকি কুরআন শরীফ রাখার কথা বলার ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে কারণ টয়লেটের মালিক হিন্দু নয়।

পাশ্ববর্তী ভারতে চিত্রশিল্পী মকবুল ফিদা হুসেনকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল নগ্ন সরস্বতীর ছবি আঁকার কারণে। যাদের হিন্দু দেবদেবী নিয়ে নূন্যতম ধারণা আছে, তারাই বলবে এর পেছনে মূল কারণ শিল্পীর নাম। তার নাম যদি মকবুল ফিদা না হলে মকর কুমার হতো, তাহলে হিন্দুদের কোন আপত্তি থাকত না। কারণ যাদুঘরে যতো মূর্তি দেখা যায় হিন্দু দেবদেবীর, তার একটির গায়েও কোন কাপড়ের বালাই নেই। অজন্তা-ইলোরা গুহায় হিন্দু মন্দিরে শত শত বিবস্ত্র অশ্লীল মূর্তি খোদাই করা আছে।

আসলে বিষয়টি অনুধাবন করা খুবই সোজা। পাশ্ববর্তী ভারতে গরুর গোশত রাখার কারণে মুসলমান হত্যা করা হয়, বিপরীতে হিন্দু ব্যবসায়ীরা গরুর গোশতের ব্যবসা করে বিফ রপ্তানিতে ভারতের নাম এক নম্বরে তুলে দিলেও তাদের কিছুই হয় না। পেহলু খান নামক এক মুসলিম দুধ ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছিল হিন্দু গোরক্ষকেরা। পেহলু খানের গাড়ির হিন্দু ড্রাইভার মিডিয়াতে সাক্ষাৎকারে বলেছিল, সে হিন্দু হওয়ায় তাকে ছেড়ে দিয়ে কেবল মুসলমানদের পিটিয়েছিল উগ্র হিন্দুরা। সম্প্রতি সেই হত্যাকারীদের খালাস দিয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী আদালত।

আসলে এই নাস্তিক কিংবা আওয়ামী লীগ, কেউই হিন্দুদের আসল মোটিভ ধরতে পারে নি। নাস্তিক ও লীগারদের ধারণা হিন্দুরা তাদের সহযোগী, বিপরীতে হিন্দুরা মনে করে নাস্তিক ও লীগাররা হচ্ছে তাদের ‘গোলাম’। ভারতীয় হিন্দুরা যেভাবে সেদেশের মুসলমানদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বলে মনে করে, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশের হিন্দুরাও নাস্তিক ও লীগারদেরকে গোলাম বলেই মনে করে। কারণ নাস্তিক ও লীগারদের লক্ষ্য বাংলাদেশটাকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করা।

হিন্দু চিত্রশিল্পী নগ্ন সরস্বতী আঁকতে পারবে, কিন্তু সেক্যুলার চিত্রশিল্পী তা পারবে না। হিন্দু পূজারী দেবীমূর্তির সামনে মদ খেতে পারবে, কিন্তু নাস্তিকটি পারবে না মূর্তির সামনে টয়লেট করতে। কারণ গোলামের অধিকার নেই মনিবের সমকক্ষ হওয়ার। লীগ সম্পাদক মাহবুবুল হানিফের গাড়িতে জুতা ছুঁড়ে হিন্দুরা বুঝিয়েছে, তারা আওয়ামী লীগকে গোলামস্য গোলামই মনে করে থাকে। এখন সুপ্রীতি ধর কিংবা হিন্দুরা যে আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে তা তো ট্রেলার মাত্র, আসল অবমাননা শুরু হবে যদি অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠা হয়। হিন্দু না হলে তখন মানুষ বলেও গণ্য করা হবে না। লীগ, নাস্তিক ও অছাম্প্রদায়িকতার আফিমে মত্ত বাঙালি মুসলমানরা সেই আত্মঘাতী পথেই কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে।

Post a Comment

 
Top