এক রাজা দরবেশের নিকট এমন একটি চশমা প্রার্থনা করেছিল, যেই চশমা পড়লে সবাইকে ভালো মনে হবে। দরবেশ বাদশাহর আর্জি অনুযায়ী একটি রঙিন চশমা বাদশাহকে উপহার দিল। সেই চশমা পড়ার পর এক দাগী অপরাধীকে তার সামনে আনা হলো বিচারের জন্য। বাদশাহ অপরাধীকে দেখে হাহাকার করে উঠল, এ যে ভালো মানুষ! বাদশাহ সেই ডাকাতকে অতঃপর ছেড়ে দিল।

বর্তমান যুগে মুসলমানদের চোখেও অনুরূপ একটি রঙিন চশমা রয়েছে, যার কারণে তাদের নিকট সব কাফিরকেই ভালো মনে হয়, সব কাফিরকেই হিদায়েতের যোগ্য বলে মনে হয়। কাফিরদের সমাজে জন্মে যারা মুসলমান হয়, তারা গুটিকয়েক এক্সেপশনাল পার্সন। তাদের চিন্তা-চেতনা সব দিক দিয়ে তাদের সমাজের আর দশজন থেকে ভিন্নতর হয়। যেমন “আমি কেন ইসলাম গ্রহণ করলাম” গ্রন্থের লেখক আবুল হোসেন ভট্টাচার্য তার দাদীর চিতায় তোলার কাহিনী নিয়ে লিখেছিল ‘ঠাকুরমার স্বর্গযাত্রা’ বইটি। বইটিতে তার ঠাকুরমাকে চিতায় তোলার পর আগুন দেয়া হয়, অতঃপর চোখা বাঁশের আঘাতে নাড়িভূড়ি ছিন্নভিন্ন করে ফেলা হয়। এই দৃশ্য দেখে তার হিন্দু সহপাঠীরা যখন উল্লাস করেছিল, তখন আবুল হোসেন ভট্টাচার্য ঘটনার বীভৎসতায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। তিনদিন পর তার জ্ঞান ফেরে।

এখানে আবুল হোসেন ভট্টাচার্যের আশেপাশে তার যে বন্ধুরা লাশের ছিন্নভিন্ন হওয়ার দৃশ্য উল্লাস করেছিল, তারাই প্রকৃত হিন্দু। কারণ হিন্দুসমাজে বসবাসের জন্য যে নীচতা দরকার, তা তারা অর্জন করতে পেরেছে। হিন্দুধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের অবস্থা ডাকাতদলের মধ্যে বসবাসকারী ভালো মানুষটির মতো, যে ডাকাতদের কারণে পারছে না ভালোদের সমাজের অন্তর্ভূক্ত হতে। মুসলমানদের কর্তব্য হলো ঐ ডাকাতদের কাছ থেকে মুসলমান হতে আগ্রহী ব্যক্তিটিকে বের হতে সাহায্য করা, কিন্তু তারা তা না করে সমস্ত ডাকাতদেরকেই ভালো বলে ধরে নিয়েছে এবং ডাকাতদেরই উল্টো শক্তিশালী করেছে। যার ফলে মুসলমান হতে ইচ্ছুক যারা, তাদের সম্মুখে বাধাও দিনদিন বেড়ে চলেছে।

সিলেটের নওমুসলিম আবদুল আজিজকে গ্রেফতার করে মাসের পর মাস জেলে রাখার পর যখন তিনি মুক্তি পেলেন, তখন ফেসবুকে তিনি বললেন যে, তিনি যদি জেলে না থাকতেন তাহলে তার জাতিভাই তথা হিন্দু সম্প্রদায় তাকে হত্যা করে ফেলতো। এরকম ঘটনা আজ থেকে দশবছর আগে ঘটাও সম্ভবপর ছিল না, কারণ তখন হিন্দুরা আজকের মতো শক্তিশালী ছিল না। ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনামলে হিন্দুরা যেভাবে ধর্মান্তরিত হয়েছে, এখন সেরকম হচ্ছে না। এর মূল কারণ, তখন হিন্দুদের সমাজ প্রতি পদে পদে মুসলমানদের উপর নির্ভরশীল ছিল। যে কারণে মুসলিম শাসনামলে হিন্দুরা তাদের সমাজের মুসলমান হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বিপরীতে বর্তমান সময়ে হিন্দুদের শক্তিশালী করে, তাদেরকে বড় বড় চাকরি দিয়ে মুসলমান হতে আগ্রহী যারা, তাদের সামনে পর্বতপ্রমাণ বাধা সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে।

শুরুতে যে রঙিন চশমার কথা উল্লেখ করেছি, সেটি হলো আমাদের টিভির পর্দা। অনেকেই পিসটিভিতে হিন্দুদের মুসলমান হওয়ার দৃশ্য দেখে মোহিত হয়, এরকম একজন আমার লেখা পড়ে উপদেশ দিয়েছিল “আল্লাহর ওয়াস্তে তোমরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে কিছু বলো না। কারণ তা হলে হিন্দুরা দূরে সরে যাবে।” কিন্তু হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়ার বাস্তবতা যে টিভি পর্দার মতো রঙ্গীন নয়। হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, খুনের হুলিয়া মাথায় নিয়েই একজন হিন্দুকে মুসলমান হতে হয়।

প্রকৃতপক্ষে একজন নওমুসলিম হচ্ছে তার পূর্ববর্তী সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী স্বরূপ। Kausar Ibnath Sadia নামক একটি নওমুসলিম মেয়ের আইডিতে (পূর্বনাম জ্যোতিকা চক্রবর্তী) উগ্র হিন্দুরা প্রায়ই হামলা চালায়।  Mou Nondi Saha নামক এক নমশূদ্র হিন্দু মেয়ে তার পোস্টে তাকে ‘মুসলিমের যৌনদাসী’ বলায় সে উত্তর দিয়েছিল-

“আমার কাছে ইসলাম ধর্ম টাই পারফেক্ট মনে হয়েছে। তোদের মত মদ খেয়ে নাচানাচি করে উন্মাদ হয়ে মাটির পুতুল নিয়ে মাতলামি করা নেহাত আমার কাছে ভন্ডামি ছাড়া আর কিছু না। আর বৈষনব দের কথা বাদ দিলাম।” (কমেন্টে স্ক্রীনশট দ্রষ্টব্য)

সুতরাং আমরা যদি সত্যিই হিন্দুদেরকে মুসলমান বানাতে চাই, সেক্ষেত্রে আমাদেরকে নওমুসলিমদের এই বিদ্রোহে সহায়তা প্রদান করতে হবে। এজন্য সর্বাগ্রে তারা যেই হিন্দুসমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে, সেই হিন্দুসমাজকে দুর্বল করতে হবে। প্রথমে চাকরি-ব্যবসা ও সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত করে হিন্দুদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে দিতে হবে, তাদেরকে পানিতে ফেলে দিতে হবে। এরপর তাদের উদ্দেশ্যে বাড়াতে হবে দ্বীন ইসলামের হাত। সেই হাত কেবল তারাই ধরবে, যারা পূর্ব থেকেই মুসলমান হতে চাইছিল।

মুসলমান হতে অনিচ্ছুক বাকি হিন্দুরা তলিয়ে যাবে এবং যাওয়াটাই হবে সবার জন্য উত্তম। কারণ তারা বেঁচে থাকলে নওমুসলিমদের তো ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেই, মুসলমানদের ঈমানও নষ্ট করে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকবে।

Post a Comment

 
Top