দ্বীন ইসলামের সর্বপ্রথম সশস্ত্র বদর জিহাদ, যেখানে ৩১৩ জন সাহাবায়ে কিরাম যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছিলেন মুশরিকদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধবন্দী যেসব মুশরিক সৈন্য মুসলমানদের কব্জায় এসেছিল, তারা সবাই ছিল মুহাজির সাহাবায়ে কিরামগণের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়। হযরত উমর ফারুক আলাইহিস সালাম প্রস্তাব রেখেছিলেন, প্রত্যেক মুহাজির সাহাবায়ে কিরাম যেন যুদ্ধবন্দীদের মধ্য হতে নিজ নিজ রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়কে খুঁজে নেন এবং তরবারির আঘাতে হত্যা করেন।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সাথে আগত এক মগ মুসলিমের কাহিনী শুনে সবাই বুঝতে পারবেন, হযরত ফারুকে আযম আলাইহিস সালামের প্রস্তাবই সেদিন ছিল একশতে একশ সঠিক। রাখাইন রাজ্যের এক মগ জমিদারের নাতি খাইরুল আমিন। খাইরুলের দাদা মংতাদু ও দাদি মামে খাইন ছিলেন রাখাইন রাজ্যের ফকিরাবাজার গ্রামের বিখ্যাত জমিদার। স্বামী-স্ত্রী দুজনই ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন তাঁরা। জমিদার মংতাদু নামধারণ করেন আবদুর রহমান। আর তাঁর স্ত্রী মামে খাইনের নাম রাখা হয় আমিনা খাতুন। ঘটনাটি অনেক বছর আগের।  নওমুসলিম দাদার স্বজনদের ঘরে তার ছিল যাতায়াত। ছিল নাওয়া-খাওয়া। ধর্ম ছিল যার যার। আত্মীয়তার বন্ধন কোনো দিনই ছিন্ন হয়নি।

কিন্তু আকস্মিক এমন যে কী হল! গত ২৫ আগস্ট থেকে মগ সম্প্রদায়ের লোকজনই সবচেয়ে বেশি ক্ষেপে যান রোহিঙ্গাদের ওপর। এরাই ধারালো দা নিয়ে একের পর এক রোহিঙ্গা মুসলিমদের জবাই করছে। খাইরুল আমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সে এক অবাক কাণ্ড। আমারই বাবার আপন চাচাতো ভাই (মগ সম্প্রদায়) আমাকে দেখেই না চেনার ভান করে বসল। উল্টো চোখ রাঙানো চাহনি। আমারই সামনে দা দিয়ে কোপাতে থাকল এক রোহিঙ্গাকে। আমি আর দেরি করিনি। তখনই বুঝে গেছি, এক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তল্পিতল্পা নিয়ে স্ত্রী রোকেয়া আর এক কন্যা ও তিন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি।”

পাঠকেরা বলুন, খাইরুল আমিনের সাথে রক্তের সম্পর্ক কি পেরেছে তার বৌদ্ধ আত্মীয়দের সাথে তার সুসম্পর্ক স্থাপন করাতে? কোনদিনও পারবেনা, কারণ স্বয়ং আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা দিয়েছেন “নিশ্চয়ই ঈমানদারেরা তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে প্রথমত ইহুদীদের, অতঃপর মুশরিকদের।”

আল্লাহ পাকের নাযিলকৃত এই আয়াত শরীফকে কোন কিছুই ভুল প্রমাণ করতে পারবে না, রক্তের সম্পর্কও নয়। অথচ এই বাংলাদেশের মুসলমানদের কতো স্পর্ধা, তারা হিন্দুদের সাথে প্রতিবেশী, কলিগ, সহপাঠী, শিক্ষক এসব মূল্যহীন সম্পর্কের দোহাই দিয়ে আল্লাহ পাকের নাযিলকৃত আয়াত শরীফের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে চায়, আল্লাহ পাক তিনি বলার পরও এরা হিন্দুদেরকে কিছুতেই শত্রু বলে স্বীকার করতে চায় না!

পিনাকীর মামা কলেজশিক্ষক সুব্রত ভৌমিক, তার ঠাণ্ডা মাথার খুনীর ন্যায় ইসলামবিদ্বেষী কমেন্ট তুলে ধরে মুখোশ উন্মোচন করেছিলাম আমার পেজে। আফসোস, তারপরও সুব্রত ভৌমিকের ছাত্ররা তাদের ‘ষাঁড়’কে ত্যাগ করতে পারল না। একজন এসে বারবার বলতে লাগল, আপনি  “আপনি যদি সুব্রত ভৌমিক স্যারকে চিনতেন এমন আজগুবি কথা বলতেন না।” “৮ বছর একজন মানুষকে দেখলাম। তাও চিনলাম না। সত্যিইই হতাশাজনক। তবে আপনি কি ভাই তাকে চেনেন।”

এই নির্বোধ, খোদাদ্রোহী জাতি কেন গযবের শিকার হবে না? সাতচল্লিশে আল্লাহ পাক উনার আয়াত শরীফের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে হিন্দুদের সাথে যোগ দিয়েছিল ভারতীয় মুসলমানরা, ইহুদীদের সাথে যোগ দিয়েছিল ফিলিস্তিনিরা, বৌদ্ধদের সাথে যোগ দিয়েছিল রোহিঙ্গারা। তার ফলই এখন পর্যন্ত তারা ভোগ করে যাচ্ছে। বাঙালি মুসলমানও কি সেই পরিণতি বহন করতে চায়?

পূর্বদিকে সূর্য উঠে পশ্চিমদিকে অস্ত যায়, এটি আমরা চিরন্তন সত্য হিসেবে মানি। কিন্তু এমনও দিন আসবে, যখন পশ্চিমদিকে সূর্য উঠবে। সেই দিনও কিন্তু এই মহাসত্যের পরিবর্তন হবে না যে, এই কাফির মুশরিকেরা আল্লাহ পাকের শত্রু, মুসলমানদের শত্রু। কিয়ামত হয়ে যাবে, হাশর নশর শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু এই পৌত্তলিকগুলো চিরকালই, চিরকালই আমাদের শত্রু থেকে যাবে।

Post a Comment

 
Top