ফেসবুকে একটিভ এক হিন্দু তার পোস্টে লিখেছে- “হিন্দু ধর্মীয় একটা সংগঠনের পরিচালনায় একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম।জিজ্ঞেস করলাম খাবার কি কি আছে?অনেক পরিচিত খাবারের সাথে নতুন একটা নাম শুনতে পেলাম-"পুষ্পান্ন" নাম শুনেই কেমন প্রসাদ প্রসাদ আর ভক্তির ব্যাপার চলে আসে।যাইহোক নতুন কিছু খাবার আশায় অর্ডার করলাম।খাবার নিয়ে আসলে অবাক হয়ে দেখলাম এটা অতি পরিচিত পোলাও।”
পোলাওয়ের নাম কেন পুষ্পান্ন দেয়া হলো? এর উত্তরে সেই হিন্দুর বক্তব্য- “কিন্তু যা মুসলিম মোগলদের খাদ্য ছিল তার হিন্দুয়ানী নাম দেওয়ার দরকার কি?একদিগে খাবার লোভও ছাড়তে পারেন না অন্যদিগে ধর্মকেও টেনে আনেন।” (লিঙ্ক: http://archive.is/pQYhX)
এখন পাঠকেরা নিজেরাই চিন্তা করুন। হিন্দুরা পোলাওকে ‘পোলাও’ হিসেবে গ্রহণ করতেও প্রস্তুত নয়, যা কিনা ফারসী پلو (পোলও) শব্দ থেকে আগত। মুসলমানী ‘পোলাও’ খেয়েও যেন তাদের হিন্দুয়ানী স্বকীয়তা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাই তারা পোলাওয়ের নামও পরিবর্তন করে দিয়েছে! অথচ আপনারা হিন্দুয়ানী কালচারগুলো কোনপ্রকার বাছবিচার ছাড়াই অপরিবর্তিত অবস্থায় গলঃধকরণ করে নিচ্ছেন। অবলীলায় গ্রহণ করছেন ‘মাসি’ ‘পিসি’ মার্কা কলকাতার হিন্দুয়ানী চটি সাহিত্য। হিন্দি সিরিয়াল দেখে দেখে অবলীলায় হিন্দুয়ানী কালচারের প্র্যাকটিস করছেন। মুসলমান হওয়ার পরও নিজের স্বকীয়তা নিয়ে আপনাদের কোনই মাথাব্যথা নেই।
অথচ মুসলমানদের স্বকীয়তা নিয়েই জোর দেয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি। যখন নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুসলমানদের নামাযে আহবান জানানোর উপায় নিয়ে পরিকল্পনা করছিলেন, তখন কেউ কেউ প্রস্তাব দেন ঘণ্টা বাজানোর। কিন্তু তা খ্রিস্টানদের সাথে মিল রাখে বলে বাতিল হয়। কেউ কেউ প্রস্তাব দেন আগুন জ্বালানোর, কিন্তু সেটাও বাতিল হয় অগ্নিউপাসকদের সাথে মিল রাখার কারণে।
এরপর ছাহাবীগণ উনাদের কেউ কেউ আযানের বাক্যগুলো স্বপ্নে শুনতে পান এবং নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা অনুমোদন করেন। এখানে আমরা দেখতে পাই, অন্য ধর্মের সাথে মিল রাখে এমন কিছুই নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গ্রহণ করেননি। এরকম উদাহরণ আরো বহু রয়েছে। মদীনা শরীফে যাওয়ার পর নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন, সেখানকার ইহুদীরা আশুরার রোযা রাখে। তিনি সেই রোযা উম্মতের জন্য নির্ধারিত করলেন, কিন্তু ইহুদীদের সাথে মিল না রাখার জন্য ১ দিনের জায়গায় ২ দিন রোযা রাখতে বললেন।
যে কারণে হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, “যে যেই জাতির সাথে মিল রাখে, সে সেই জাতিরই অন্তর্ভূক্ত”। অর্থাৎ হিন্দুর সাথে মিল রাখলে মুসলমানরা হিন্দুদের অন্তর্ভূক্ত হবে, তাদের হাশর-নশরও হিন্দুদের সাথে হবে অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। আমি আমার পূর্বের পোস্টে বলেছিলাম, ‘দ্বিজাতিতত্ত্ব’ এর তাৎপর্য হিন্দুরা বুঝতে পারলেও মুসলমানরা বুঝেনি। যার ফলে হিন্দুরা পোলাওকে ‘পুস্পান্ন’ নাম দেয়, আর মুসলমানরা এখনো বোকার মতো এই প্রশ্ন করে যে, “রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য গ্রহণ করলে কী হয়েছে!”
Post a Comment