ফেসবুকে এক কট্টর হিন্দুপন্থী ফেসবুকার হলো ‘সুষুপ্ত পাঠক’ ওরফে ‘সুসু পাঁঠা’। জাগো হিন্দু কিংবা হিন্দু মহাজোটের ন্যায় উগ্র হিন্দু সংগঠনের সদস্যরাই সুসু পাঁঠার লাদির মূল গ্রাহক। সে সম্প্রতি পোস্ট দিয়েছে হিজরী সনের মাসগুলো নিয়ে। তার দাবি, হিজরী সনের হারাম মাসগুলো নাকি আরবের পৌত্তলিকদের প্রণীত। (পাঁঠার লাদির লিঙ্ক: https://goo.gl/HtILoL)
এর জবাবে প্রথমত বলতে হয়, পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত রয়েছে যে-
নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। (সূরা তওবা শরীফ, আয়াত শরীফ ৩৬)
এই মাস পিছিয়ে দেয়ার কাজ কেবল কুফরীর মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে কাফেরগণ গোমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালাল করে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছর, যাতে তারা গণনা পূর্ণ করে নেয় আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলোর। (সূরা তওবা শরীফ, আয়াত শরীফ ৩৭)
প্রথমে ৩৬ নং আয়াত শরীফ বলা হয়েছে যে, ‘সৃষ্টির শুরু’ থেকেই মাসের সংখ্যা বারো এবং হারাম মাস হলো চারটি। এই বিষয়টি যে সৃষ্টির শুরু থেকেই নির্ধারিত এবং পৌত্তলিকদের প্রণীত নয়, তার প্রমাণ হলো পরবর্তী ৩৭ নং আয়াত শরীফটি। সেখানে বলা হয়েছে যে, আরবের পৌত্তলিকেরা মাস পিছিয়ে দেয়ার কাজ করতো।
কেন তারা মাস পিছিয়ে দিতো? এর উত্তর হলো, ৩৬ নং আয়াত শরীফে বর্ণিত ৪টি হারাম মাসে যুদ্ধ করাটা হলো নিষেধ। এই মাস চারটি হলো রজবুল হারাম, জিলকদ শরীফ, জিলহজ শরীফ ও মুহররম শরীফ। এখন আরবের পৌত্তলিকেরা ছিলো যুদ্ধবাজ, যার ফলে অনেক সময়ে যুদ্ধ গড়িয়ে হারাম মাসে চলে যেতো। ধরা যাক, যুদ্ধ চলতে চলতে জিলকদ মাস চলে আসলো, তখন কাফিরেরা শাওয়াল মাসকে বাড়িয়ে হয়তো ৪৫ দিনে করে নিতো। এভাবে আরবের পৌত্তলিকেরা মাসের দিন কম-বেশি গণনা করে কোনো বছর ১৭ মাসে, কিংবা কোনো বছর ১০ মাসে গণনা শেষ করতো নিজেদের যুদ্ধবিগ্রহের স্বার্থে।
অর্থাৎ সুষুপ্ত পাঠক ওরফে সুসু পাঁঠা’র পেয়ারের পৌত্তলিকেরা যে এই হারাম মাসের প্রণেতা নয়, তা স্পষ্ট। হারাম মাসের বিধান সেই সৃষ্টির শুরু থেকেই রয়েছে, যার থেকে বাঁচার জন্যই কাফির মুশরিকেরা মাস আগুপিছু করতো। সুসু পাঁঠা দাবি করেছে, এসব পৌত্তলিক নিয়ম নিয়েই নাকি নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামী বিধান তৈরী করেছেন। (নাউযুবিল্লাহ)
হাস্যকর কথা! পৌত্তলিক নিয়মই যদি নেয়া হতো, তাহলে ‘নাসী’ তথা মাস আগুপিছু করার নিয়ম কেন কুরআন শরীফে আয়াত নাযিল করে বাদ দেয়া হলো? সেটিই তো ছিলো মূল পৌত্তলিক সংস্কৃতি, যা এখনো হিন্দুদের কোষ্ঠী, তিথি-নক্ষত্র কিংবা এ সম্পর্কিত কুসংস্কারে দেখা যায়।

Post a Comment

 
Top