বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ার মতো বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে এদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ রয়েছে, সে সম্পর্কে সবাই নিশ্চয়ই অবগত রয়েছেন। বলা বাহুল্য, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এদেশের লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক।
গত ২০১৪ সালের মার্চ মাসের একটি ঘটনা হয়তো অনেকেরই মনে রয়েছে। সে সময়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রদর্শনী ওয়ার্ল্ড এক্সপো-২০২০ এর ভোটাভুটি হচ্ছিলো। ভেন্যু হিসেবে বাংলাদেশের সামনে দুবাইকে ভোট দেয়ার অপশন ছিলো। কিন্তু সরকার দুবাইকে ভোট না দিয়ে ভোট দেয় রাশিয়াকে। যার ফলে সেদেশের সরকার ক্ষুব্ধ হয়ে পুরোপুরি দুবাইয়ের ভিসা বন্ধ করে দেয়। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে দুবাইতে থাকা লাখ লাখ বাংলাদেশীর ভাগ্য। (http://goo.gl/oacUCP)
এখানে আমি যা বলতে চাই তা হলো, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের কর্মসংস্থানের সংকট হবে আরো ভয়াবহ। কয়েকদিন আগে হাইকোর্ট বার মিলনায়তনের একটি অনুষ্ঠানে এক প্রবীণ আইনজীবীর বক্তব্য শুনছিলাম। তিনি বলেছিলেন যে, যখনই সংবিধানে কোন পরিবর্তন আসে, তখনই তার কপি জাতিসংঘ সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যায়। ২০১১ সালে এদেশের সংবিধান থেকে যখন ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বাদ দেয়া হলো, তখন মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশীদের ইমেজ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো।
ঐ আইনজীবী বলেছিলেন যে, তার বৃদ্ধ বাবাকে তিনি কাবা শরীফের এক ইমামের সাথে পরিচিত করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঐ ইমামকে যখন বলা হলো তারা বাংলাদেশী, তখন তাদেরকে উল্টো তিনি প্রশ্ন করলেন, “তোমরা কী মুসলমান?”
প্রশ্নটা স্বাভাবিক, কারণ ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বাদ দিলে তো কেউ মুসলমান থাকতে পারে না। এখন যদি ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ও বাদ দিয়ে দেয় এদেশের সরকার, সেক্ষেত্রে এই দেশের মানুষের ইমেজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর নিকট কী হবে? মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া সহ প্রত্যেকটি মুসলিম দেশে বাংলাদেশী মুসলমানরা তখন ধিক্কারের পাত্র হবে। চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে মুসলিম দেশগুলোতে বাংলাদেশী মুসলিম যুবকদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা।
এর ফলশ্রুতিতে লাভবান হবে ভারতীয়রা। ফাঁকা মাঠ পেয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মসংস্থানের দখল তারাই নেবে। অর্থাৎ ভারতের ইন্ধনে এদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। একে তো এদেশে ইসলাম তুলে দিয়ে রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠা করা হবে, অপরদিকে মুসলিম দেশগুলোতে বাংলাদেশের ইমেজ ডুবিয়ে দিয়ে সেখানে ভারতীয় প্রবেশ করানো হবে। উল্লেখ্য, দুবাইকে বাদ দিয়ে রাশিয়াকে ভোট দেয়ার পেছনেও ছিলো ভারতীয় চক্রান্ত, যেন দুবাইতে ভারতীয়দের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়।
সম্প্রতি বাংলানিউজের এই খবরটি দেখুন পাঠকেরা। সৌদি আরবের মরুভূমিতে বাংলাদেশী যুবক শহীদুল্লাহ গড়ে তুলেছেন বিশাল মাছের খামার। শহীদুল্লাহর সৌদি নিয়োগকর্তা তার কাজে এতো খুশি যে, তিনি বেতনের সাথে সাথে খামারের লাভের একটি অংশ শহীদুল্লাহকে দিয়ে থাকেন। শহীদুল্লাহ বলেছেন যে, সেই খামারে আরো বাংলাদেশী যুবক দরকার হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে নেয়া যাচ্ছেনা। কারণ সরকারের ইসলামবিরোধী নীতির কারণে সৌদি আরবে বাংলাদেশী ভিসা বন্ধ। (http://goo.gl/qeVLDo)
সুতরাং যারা এখানো ঘুমিয়ে আছেন, তারা অবিলম্বে ঘুম থেকে জাগুন। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলে যে এদেশের মুসলমানরা কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কতো লক্ষ লক্ষ যুবক যে বেকার হবে, সেটা সময়ের আগেই বোঝার চেষ্টা করুন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হোন।

Post a Comment

 
Top