নিউজিল্যান্ডে হামলার পর সবার মুখে একই অভিযোগ, বিশ্বের কোথাও পান থেকে চুন খসলেই মুসলমানদের জাতিগতভাবে সন্ত্রাসী বলা হয়, কিন্তু খ্রিস্টান-ইহুদি-হিন্দু এদেরকে কিছুই বলা হচ্ছে না। এর কারণ খুবই সোজা, তা হলো ইহুদি-হিন্দু-খ্রিস্টান এরা সামষ্টিক ঘৃণার যুদ্ধে অগ্রগামী, মুসলমানরা সন্ত্রাসী না হলেও এদের সামষ্টিক প্রচারের কারণেই মুসলমান সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার পায়। বিপরীতে পবিত্র কুরআন শরীফে সুস্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও বিধর্মীদের প্রতি মুসলমানদের সামষ্টিক ঘৃণা নেই, যে কারণে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও কখনোই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা জাতীয় পর্যায়ে ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে না, পারে না বিধর্মী-নাস্তিকদের ইসলামবিদ্বেষের মোকাবিলা করতে।

নিউজিল্যান্ড হামলার পর উল্টো মুসলমানদের অভিবাসনকে দায়ী করে অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর ‘ফ্রেসার অ্যানিং’ একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতির শেষে বাইবেলের একটি উদ্ধৃতি সে দিয়েছে, “all they that take the sword shall perish with the sword” অর্থাৎ “যারা তরবারি ধারণ করবে, তাদের তরবারির মাধ্যমেই হত্যা করা হবে।” এর মাধ্যমে মূলত হত্যাকারীর প্রতি তার দৃঢ় সমর্থনের বিষয়টি সে তুলে ধরেছে।

মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত এই চরম মুসলিমবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক বিবৃতিটি সরাসরি ফেসবুকে শেয়ার করেছে আমেরিকার উগ্র হিন্দু শিতাংশু গুহ। তার ঐ পোস্টে লাইক দিয়েছে পূর্ণিমা শীল, যে সম্প্রতি সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে এবং বিগত সরকারের আমলে সে মন্ত্রী তারানা হালিমের পিএস হিসেবে কাজ করেছে। উল্লেখ্য, এই পূর্ণিমা শীল তার ফেসবুকে এর আগেও মুসলিমবিদ্বেষী পোস্ট দিয়েছে, যেমন একটি পোস্টে সে লিখেছে ‘রেখেছ মুসলমান করে, মানুষ সভ্য করোনি।’

এরপরও মন্ত্রীর পিএস হিসেবে কাজ করতে তার সমস্যা হয়নি, সমস্যা হয়নি জাতীয় পর্যায়ে সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। বিপরীতে হিন্দুদের বিরুদ্ধে বলে কেউ জাতীয় পর্যায়ে অবস্থান নিয়ে থাকতে পারবে, এটি কল্পনা করা যায় না। কারণ হিন্দুরা সামষ্টিক ঘৃণার প্রদর্শন করতে সক্ষম। সামষ্টিক ঘৃণার প্রদর্শন করে তারা মন্ত্রী ছায়েদুল হক, ক্রিকেটার রকিবুল সহ অনেককে জাতীয় পর্যায়ে হেনস্থা করতে সক্ষম হয়েছে।

কিন্তু মুসলমানদের বিরুদ্ধে বলে কোনো মন্ত্রীকে আজপর্যন্ত অপদস্থ হতে হয়নি, এমনকি মন্ত্রীর পিএসকেও নয়! এরপরও মুসলমানরা কিভাবে আশা করে যে, তাদেরকে সম্মান করা হবে? এরপরও তারা কিভাবে আশা করে যে, তাদেরকে উঠতে-বসতে ‘সন্ত্রাসী’ ‘টেরোরিস্ট’ বলে গালি দেয়া হবে না? মুসলমানরাই তো অসাম্প্রদায়িকতা বশতঃ তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ অপবাদ দানকারী মুশরিকদের সমাজে ও জাতীয় পর্যায়ে জায়গা করে দিচ্ছে। যদি মুসলমানরা প্রতিবাদ করতো, এই পূর্ণিমা শীলের আইনগত শাস্তি নিশ্চিত করতো, তাহলেই এটি প্রতিষ্ঠিত হতো যে, মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয়। কিন্তু মুসলমানরা যেহেতু প্রতিবাদ করছে না, সেহেতু ‘মৌনতাই সম্মতির লক্ষণ’ এই সূত্র অনুযায়ী পূর্ণিমাদের বক্তব্যই একতরফা প্রচার পাচ্ছে। মুসলমানরাই সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে মুসলমানদেরকে সাম্প্রদায়িক হতে হবে এবং ইসলামী স্বার্থে প্রতিপক্ষকে একঘরে করার, তাকে চাকরিচ্যুত করার, আইনগত শাস্তি নিশ্চিত করার মনমানসিকতা ধারণ করতে হবে। যদি মুসলমানদের বিরুদ্ধে বলে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘোরা যায়, তাহলে কিসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, কিসের প্রাধান্য? অথর্ব মুসলমানগুলো এটিই বুঝতে পারে না।

Mmarchpi n017,f sar20e109t9 


Post a Comment

 
Top