আমাদের দেশে বিদেশী এনজিও ও সংস্থাগুলো সাময়িক জন্মবিরতিকরণের সাথে সাথে স্থায়ী জন্মবিরতিকরণের জন্য প্রচার চালায়। লাইগেশন, ভ্যাসেকটমি করিয়ে জনগণকে বন্ধ্যা করতে চায় তারা। মুসলমানদের জন্য খোজাকরণের প্রেসক্রিপশন দিলেও নিজেদের ক্ষেত্রে কিন্তু তারা উল্টোটা করে থাকে। অমুসলিমরা নিজেদের দেশে ঘোষণা দিয়ে থাকে, বেশি বেশি সন্তান জন্ম দিলে পুরষ্কার দেয়া হবে।
তুরষ্কের রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এই দ্বৈতনীতির কারণেই মুসলমান নারীদের আহবান করেছেন বেশি বেশি সন্তান নেয়ার জন্য। অমুসলিম রাষ্ট্রগুলো যেভাবে মুসলমানদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রেসক্রিপশন দিলেও নিজেরা তা গ্রহণ করে না, ঠিক সেভাবেই তারা মুসলমানদের জন্য ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র প্রেসক্রিপশন দিলেও নিজেরা হয়ে থাকে কট্টর সাম্প্রদায়িক।
কারণ বন্ধ্যা হতে কেউ চায় না, কিন্তু প্রতিপক্ষকে বন্ধ্যা করতে চায় সবাই। মুসলমানরা জনসংখ্যার দিক দিয়ে যতোই বেশি হোক, মিডিয়া, পত্রপত্রিকা, অনলাইন কার্যক্রম কিংবা এজাতীয় বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে তারা বন্ধ্যাত্বে ভুগছে। কারণ বিধর্মীদের স্বপ্ন অনুযায়ী মুসলমানদের সবাইকে শারিরীকভাবে ভ্যাসেকটমি করা না গেলেও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে গোটা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভ্যাসেকটমি করা হয়েছে অনেক আগেই।
কি দিয়ে করা হয়েছে এই ‘বুদ্ধিবৃত্তিক ভ্যাসেকটমি’? এর মূল অস্ত্র হলো ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও ‘অসাম্প্রদায়িকতা’। আপনি যদি বর্তমানে বিধর্মীদের টিভি-মিডিয়া ও পত্রপত্রিকাগুলোর দিকে খেয়াল করেন, তাহলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তাদের প্রত্যেকটি মিডিয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো মুসলমানদের বিরোধিতা করা। ফক্স নিউজ হোক, জি নিউজ হোক, বিবিসি, সিএনএন যাই হোক, এদের তৈরী করাই হয়েছে মুসলমানদের বিরোধিতা করার জন্য।
অর্থাৎ মুসলিমবিরোধিতার তাড়না না থাকলে এই পত্রপত্রিকা, মিডিয়া, বইপত্র কিছুই তারা প্রকাশ করতো না। আমি আমার আগের পোস্টে বলেছি, আপনার পাশের হিন্দুটি যখন মুসলিমবিরোধী পোস্ট শেয়ার করে, তাকে ক্ষুদ্র মনে করবেন না। কারণ এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুসলিমবিরোধী পোস্টের সম্মিলিত রূপই হলো প্রথম আলো, একাত্তর টিভি, বিডিনিউজ প্রভৃতি। সব মিডিয়াই কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ এবং প্রতিপক্ষকে দাবিয়ে রাখতে ব্যবহার করা হয়। শুধু খবর প্রচার কিংবা নাটক প্রচারের নিরামিষ উদ্দেশ্যে চ্যানেলগুলো পরিচালিত হচ্ছে, এটা ভাবাটা ভুল। শ্যামল কান্তির কেসে মিডিয়ার ভূমিকা দেখলে বিষয়টি স্পষ্টতই ধরা পড়ে।
এখন মুসলমানরা যেহেতু বিশ্বপ্রেমিক, যেহেতু তারা কুরআন শরীফের আয়াত অগ্রাহ্য করে অমুসলিমদের বন্ধু বলে টেনে নিতে চায়, সেহেতু তাদের কোন প্রতিপক্ষ তারা স্থির করতে পারবে না এটিই তো স্বাভাবিক। এই কারণেই তাদের মধ্যে বহু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টার, মিনিস্টার থাকলেও নেই কোন মিডিয়া। এমনকি বাজারে মুসলমানদের পক্ষে রচিত একটি বইও নেই। শারিরীক ভ্যাসেকটমি দিলে যেমন সন্তান জন্মদানে অক্ষম হয়ে যেতে হয়, ঠিক তেমনি `ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ নামক বুদ্ধিবৃত্তিক ভ্যাসেকটমি দিলে মিডিয়ার জন্মদানে অক্ষম হয়ে যেতে হয়। মুসলমানরা আজ সেই বুদ্ধিবৃত্তিক ভ্যাসেকটমিতেই আক্রান্ত ও পর্যুদস্ত।

Post a Comment

 
Top