সাংবাদিকঃ অনুবাদ করো- আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি।
ছাত্রঃ I am GPA 5. (আমি জিপিএ ৫)
মাছরাঙা টিভির এই প্রতিবেদন এখন ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকে হয়তো ভিডিওতে জিপিএ-৫ ওয়ালাদের নির্বুদ্ধিতা দেখে চোখ কপালে তুলছে, কিন্তু আমি মোটেই অবাক হইনি। কারণ আমি প্রায়শই বাসে কিংবা রাস্তাঘাটে বর্তমান সময়ের স্কুল-কলেজের ছাত্রদেরকে দেখি। তাদের হাবভাব-কর্মকাণ্ড দেখে আমার প্রথমেই মনে হয় যে, তাদের আসলে কোন ওজন নেই। তাদের ভেতরটা পুরোটাই ফাঁপা।
কেনই বা ফাঁপা হবে না? আপনি ফারুকীর নাটক দেখুন, কিংবা মোশাররফ করিমের নাটক দেখুন। নাটকে মোশাররফ করিমের কর্মকাণ্ড কী কোন ভারবুদ্ধির পরিচয় বহন করে? এই নাটকগুলো যদি কিশোর-যুবকরা দেখে, সেক্ষেত্রে তারা থার্ডক্লাস ফালতু লোক হিসেবে গড়ে উঠবে।
মনে করে দেখুন পাঠকেরা, আমরা আমাদের পাঠ্যপুস্তকে কাজী নজরুল ইসলামের ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি পড়েছিলাম। হযরত উমর ফারুক রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু ভৃত্যকে উটের পিঠে চড়িয়ে নিজে উটের রশি ধরলেন, সেই বর্ণনা পড়তে পড়তে আমাদের চোখ অজান্তেই ভিজে উঠতো।
এই যে গভীর উপলব্ধি, এই যে ভিজে উঠা চোখ, এর কোন স্পর্শ বর্তমান প্রজন্ম পায়নি। কারণ তারা বস্তুবাদী, ইডিয়টিক মানসিকতা দ্বারা বেড়ে উঠেছে। তারা মোশাররফ করিম-তিশা-ফারুকীদের ছ্যাবলামি মার্কা নাটক দেখে স্টুপিড হয়ে বেড়ে উঠেছে। সবচেয়ে বড় কথা, তাদের পাঠ্যপুস্তকে ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি বাদ দিয়েছে নাস্তিক শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ ও তার হিন্দু চ্যালা-চামুণ্ডারা। সুতরাং বর্তমান শিক্ষার্থীদের খুলাফায়ে রাশিদীন উনাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা সম্পর্কে জানার কোন পথ খোলা নেই, ফলে তাদের জীবনদর্শনের গভীরতা অর্জনেরও কোন সম্ভবনা নেই।
পাঠ্যবইয়ের বাইরেও আমরা কারবালার ঘটনা পড়েছি। কারবালার যে ইতিহাস, সে ইতিহাস আত্মস্থ করতে পারলে বোঝা যায় যে দুনিয়াটা কতো কঠিন! ইয়াযীদের বিরোধিতা যখন তুঙ্গে, তখন কুফা শহরের জনগণেরা হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে আহবান জানালো কুফায় আগমন করার। কুফাবাসীরা শপথ করলো, তারা যে কোন পরিস্থিতিতে হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পক্ষ অবলম্বন করবে।
তখন তিনি উনার চাচাতো ভাই হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে পাঠালেন কুফাবাসীর আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করে চিঠি পাঠাতে। সেখানে গিয়ে তিনি প্রথমে কুফাবাসীর আচার-আচরণ ভালোই পেয়েছিলেন, চল্লিশ হাজার লোক উনার দ্বারা বাইয়াত হয়েছিল। তাই তিনি কুফায় আসার সবুজ সংকেত দিয়ে চিঠি লিখলেন হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিআল্লাহু তায়ালা আনহুর কাছে।
চিঠি পৌঁছে গেল। ওদিকে এর মধ্যেই ইয়াযীদ ও ইবনে জিয়াদের হুমকি-ধামকিতে কুফাবাসীর সমর্থনের কাঁটা ঘুরে গেলো। হুমকি-ধামকি ও প্রলোভনে ৪০ হাজার জনের থেকে মাত্র ৫০০ জন লোক শেষপর্যন্ত উনার সাথে ছিলো। হঠাৎ মাগরিবের ওয়াক্ত হলো। মাগরিবের নামাযে ৫০০ জনের সামনে ইমামতিতে দাঁড়িয়ে হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি নামায শেষ করলেন। ঘুরে তাকিয়ে দেখলেন, তার পিছনে একজনও আর অবশিষ্ট নেই।
এসব ইতিহাস আমরা পড়েছিলাম। যার কারণে আমাদের ভারবুদ্ধি অর্জন করেছিলাম, এই দুনিয়ার প্রকৃত নিষ্ঠুর রূপটি আমরা চিনতে শিখেছিলাম। গাম্ভীর্য ও আদব-কায়দা কাকে বলে, তা আমরা শিখেছিলাম। বিপরীতে বর্তমানে শেখানো হয় নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ। অথচ নাস্তিক্যবাদে জীবনের কোন গভীর উপলব্ধি নেই, তাই তারা মানুষের সেবা বাদ দিয়ে পুটু মারামারিতে সমর্থন জানিয়ে মহৎ কিছু হওয়ার চেষ্টা করে। আর হিন্দুত্ববাদে তো রয়েছে কেবলই গোমূত্র আর গোবর।
মাছরাঙা টিভির ভিডিও লিঙ্ক: youtu.be/Wjjpev76CSE

Post a Comment

 
Top