দিনাজপুরে হিন্দু শিক্ষকের দ্বারা নির্যাতিত এক ছাত্রীকে কানে ধরে পুরো স্কুল ঘোরানো হয়েছে। তার অপরাধ, তাকে তার শিক্ষক শ্লীলতাহানী করলে সে স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেছিল। এতে করে অভিযুক্ত শিক্ষক তপু রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো নির্যাতিত ছাত্রীকে কানে ধরে পুরো স্কুল ঘোরায় প্রধান শিক্ষক সমৃত সাহা সেতু ও স্কুল কমিটির চেয়ারম্যান অলিউর রহমান। নির্যাতিত স্কুল ছাত্রীর মাতা সৈয়দা সেলিনা মমতাজ কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেন, যে কোন মুহূর্তে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। (https://goo.gl/zX83Aa)
এতো মর্মান্তিক ঘটনার পরও কিন্তু এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া নেই, প্রতিবাদ নেই। বিপরীতে শ্যামল কান্তিকে কানে ধরানো ইস্যুতে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ওসমান পরিবারকে পর্যন্ত একঘরে করলো সারাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু আর নাস্তিকেরা মিলে। দিনাজপুরের ঐ সামান্য হিন্দু স্কুলশিক্ষক আর স্কুল কমিটির চেয়ারম্যানের শাস্তি নিশ্চিত করাটা নিশ্চয়ই ওসমান পরিবারের বিরোধিতা করার মতো কঠিন নয়, কিন্তু তারপরও মুসলমানরা তাদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য তা পারেনি।
আমার পূর্বের পোস্টে একজন কমেন্ট করেছিল, ইসরায়েলের মতো কোয়ালিটি অর্জন করতে হবে। তাদের চোখে কোয়ালিটি অর্থ ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বিজ্ঞানী ইত্যাদি। কিন্তু আসলে কোয়ালিটি সেখানে নয়, কোয়ালিটি হলো সক্রিয়তায়। ইহুদীরা সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলের কথিত হলোকাস্টের ঘটনা নিয়ে এখনও সক্রিয় রয়েছে। তারা পশ্চিমা দেশগুলোতে তা নিয়ে প্রতিনিয়ত সভা-সেমিনার করে। আর হিন্দুরা ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ছাড়া তো কিছুই বোঝে না।
এই যে ইহুদী-হিন্দুরা বারবার তাদের বিষয়গুলো তুলে ধরে, এখানেই তাদের কোয়ালিটি। এজন্য ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যারিস্টার হওয়াটা শর্ত নয়, সক্রিয় হওয়াটাই এখানে প্রয়োজন। আর সক্রিয়তা জাগাতে হলে চাই সম্প্রদায়গত চেতনা অর্জন করা এবং নিজ সম্প্রদায়ের শত্রু চেনা। ইহুদী, হিন্দু ও তাবৎ বিধর্মীদেরকে তাদের শিশুকালেই বাবা-মা শিখিয়ে দেয় যে, মুসলমানরা হলো তাদের শত্রু। নীরদ সি চৌধুরীর আত্মজীবনীতে উল্লেখ রয়েছে যে, হিন্দু শিশুদেরকে অক্ষরজ্ঞান হওয়ার আগেই শত্রুতার শিক্ষা দেয়া হয়। (http://goo.gl/WRRMRK)
মোট কথা এই যে, ইহুদী-হিন্দুরা যেভাবে শোর তুলতে পারে, একঘরে করার পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, মুসলমানরা তা পারে না কেন? কেন দিনাজপুরের হিন্দু শিক্ষকের বিরুদ্ধে সারাদেশে সভা-সমাবেশ হচ্ছে না? কেন সরকারের মন্ত্রীরা বক্তব্য দিতে বাধ্য হচ্ছে না? মুসলমানরা হয়তো এবার শিশুর মতো কাঁদতে কাঁদতে বলবে, তাদের তো মিডিয়া নেই। কেন নেই? এদেশের বড় বড় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-শিল্পপতিদের মধ্যে অনেকেই তো জুমার নামাযে মসজিদে যায়, তারপরও কেন এদেশে মুসলমানদের পক্ষে কোন মিডিয়া নেই?
নেই কারণ মুসলমানদের নিষ্ক্রিয়তা। আপনার পাশের হিন্দুটি যখন ফেসবুক ওয়ালে একটি মুসলিমবিরোধী পোস্ট শেয়ার করে, তখন তাকে ক্ষুদ্র মনে করবেন না। কারণ বিন্দু বিন্দু পানি পড়তে পড়তে যেভাবে বন্যা হয়ে যায়, ঠিক সেভাবেই ফেসবুকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুসলিমবিরোধী পোস্ট-কমেন্টেরই সম্মিলিত রূপ হলো প্রথম আলো, বিডিনিউজ ও একাত্তর টিভির মতো মুসলিমবিরোধী মিডিয়াগুলো।
সেলিম ওসমানের বিপক্ষে প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু ডাক্তারটা কিন্তু ঠিকই কানে ধরেছে, বিপরীতে দিনাজপুরের নির্যাতিত মুসলমান বোনটির হয়ে কোন মুসলমান ডাক্তার ব্যানার হাতে দাঁড়াবে না। হিন্দু উকিলটির ফেসবুক ওয়ালে তো ঠিকই মুসলিম বিরোধী পোস্ট থাকে, কিন্তু মুসলমান উকিলটির ওয়ালে তো হিন্দুবিরোধী পোস্ট থাকে না। এমন বাবুরাম সাপুড়ে মার্কা ডাক্তার-ব্যারিস্টার শ্রেণী দিয়ে তো মুসলমান সমাজ মাথা তুলতে পারবে না, আর মুসলমানদের মিডিয়াও কখনোই গঠিত হবে না।

Post a Comment

 
Top