হিন্দুদের মধ্যে ‘গৃহদেবতা’ বলতে একটি বিষয় প্রচলিত রয়েছে। কারো পরিবারের গৃহদেবতা কৃষ্ণ, কারো গৃহদেবতা শিব ইত্যাদি। এর উপর ভিত্তি করে উক্ত পরিবারের ধর্মীয় আচারপ্রথা নির্ধারিত হয়। জাতি, গোষ্ঠী, পরিবার ও সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে হিন্দুদের ধর্মীয় রীতিনীতি পরিবর্তিত হয়।

বিপরীতে সব সমাজ, জাতি পরিবার ও গৃহের জন্যই দ্বীন ইসলামের বিধিবিধান একই ও সমান। কিন্তু ভারতীয় মুসলমানদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সেরকম নয়, কারণ তাদের কাছে হিন্দুদের ইচ্ছাপূরণ করাটাই হলো গিয়ে শরীয়ত! উদাহরণস্বরূপ, দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে প্রতিবছর ভারতীয় মুসলমানদের উদ্দেশ্যে গরু কুরবানী না করার ফতওয়া দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, তারা এই ফতওয়াও দিয়েছে যে, হিন্দুশাসিত সরকার যদি মানা করে তাহলে গরুর গোশত খাওয়াও নাকি ‘অনৈসলামিক’! (Eating beef is un-Islamic if there is ban: https://goo.gl/Rd2Bkp)

বলা বাহুল্য, এধরণের ‘শরীয়ত’ কেবল ভারত রাষ্ট্রটির গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই একে প্রকৃত ইসলাম না বলে হিন্দুমার্কা ‘গৃহ-ইসলাম’ বলা যেতে পারে। ভারতীয় সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন তথা হিন্দুদের ‘গৃহ-পালিত’ মুসলমান নামধারী ভেড়াগুলো যে ধর্মটি পালন করে থাকে, সেটিই মূলত ‘গৃহ-ইসলাম’। এই ধর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, মূল ইসলামে যে বিধিবিধান রয়েছে, তা হিন্দুদের ইচ্ছানুযায়ী রদবদল করতে হবে। কারণ হিন্দুরা যদি খুশি না হয়, তাহলে নাকি আপনি জিন্দেগীতেও বেহেশতে যেতে পারবেন না!

এর উদাহরণ দিতে গেলে শেষ হবে না। যেমন বলা যায়, মাসকয়েক আগে ঈদুল ফিতরের সময়ে ভারতে এক হিন্দুর ব্যঙ্গচিত্র ছড়ানো নিয়ে দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিল। তখন কলকাতার ‘সেখ সাহেবুল হক’ নামক এক ‘গৃহ-ইসলাম’ ধর্মের অনুসারী ফেসবুকে লিখেছিল- “আমার চেনা হিন্দুত্ব ঠাকুর রামকৃষ্ণ দিয়ে গড়া, স্বামী বিবেকানন্দ দিয়ে গড়া। যেখানে কোরানের বাংলা অনুবাদ একজন অমুসলিম করেন, যেখানে যতমত তত পথের বানী থাকে। সেই হিন্দুত্বের উদারতার কাছে আমি রোজ মাথা নত করি। তাতে অন্ততপক্ষে আমার আল্লাহ রুষ্ট হন না।” (https://goo.gl/rFtDUX)

আমরা জানি যে, সরিষা পরিমাণ শিরকও আল্লাহ পাক ক্ষমা করবেন না। সেখানে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ এরা কি মূর্তিপূজারী ছিল না? অবশ্যই ছিল। তাহলে তাদের হিন্দুত্বের সামনে মাথানত করলে আল্লাহ পাক রুষ্ট হবেন না এটা কী ধরণের কথা হলো? কিন্তু ‘গৃহ-ইসলাম’ ধর্ম তা স্বীকার করে না। আপনাকে এমন একটি ‘আল্লাহ’র ধারণা কল্পনা করে নিতে হবে, যে কিনা হিন্দুত্বের সামনে মাথানত করলে রুষ্ট হয় না।

কয়েকমাস আগে পশ্চিমবঙ্গের মীরাক্কেল এর মীর বলেছিল ‘আমার আব্বা আমার আল্লাহ’। এই কথাটি ‘গৃহ-ইসলাম’ ধর্মের নীতি থেকে নেয়া, যেখানে সে নিজ পিতাকে ধরে নিয়েছে 'আল্লাহ' হিসেবে। যদি পৌত্তলিকতাকে এলাউ করা সৃষ্টিকর্তার ধারণা এই ‘গৃহ-ইসলাম’ ধর্মে করা যায়, সেক্ষেত্রে নিজ জন্মদাতা পিতাকে ‘আল্লাহ’ হিসেবে কল্পনা করা যাবে না কেন? হিন্দুদের গৃহদেবতার নীতি অনুসারে যেভাবে একেকজনের দেবতা একেক রকম, ঠিক সেভাবেই ‘গৃহ-ইসলাম’ নীতি অনুসারেও একেকজনের সৃষ্টিকর্তা একেকরকম হতে হবে।

সম্প্রতি ভারতে তিন তালাকের বিরুদ্ধে সেদেশের কোর্ট রায় দিয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য ইসলামী বিধানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অবজ্ঞা করা। হিন্দুরা যখন তিন তালাকের বিরুদ্ধে জোর অপপ্রচার চালিয়েছে, তখন ভারতীয় মুসলমানরা কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। উল্টো তারা কুরআন-হাদীসের বিকৃত ব্যাখা করে প্রমাণ করার চেষ্টা করতে লাগল যে, তিন তালাক বলে ইসলামে কিছু নেই। হিন্দুদের তিন তালাকের বিরোধিতা যতোটা না অাপত্তিকর, তারচেয়ে অনেক বেশি কষ্টদায়ক হলো হিন্দুদের তুষ্ট করতে এই ‘গৃহ-ইসলাম’ বাদীদের শরীয়ত পরিবর্তন।

ভারতীয় গৃহ ইসলামের প্রভাব বাংলাদেশেও রয়েছে। যার ফলে আপনি যখন অনলাইনে উগ্র হিন্দুদের বিরোধিতা করতে যাবেন, তখনই কিছু মুসলমান নামধারী মুনাফিক আপনাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করবে। কিছু কিছু সুশীল নামধারী লোক প্রচার করছে যে, কোরবানীর টাকা বন্যার ত্রাণে দিয়ে দিলে তাতে কোরবানী আদায় হয়ে যাবে, যা বাংলাদেশে ভারতীয় ‘গৃহ-ইসলাম’ ধর্মের প্রভাবের বাস্তব উদাহরণ।

আমি আসলে ভারতীয় মুসলমানদের নিয়ে মোটেই আশাবাদী নই। বরং একটি বাস্তব ভবিষ্যদ্বাণী করে রাখি, তা হলো গাযওয়াতুল হিন্দের সময়ে এই ভারতীয় মুসলমানরা হিন্দুদের পাশে থেকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করবে। ইসলামের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করাটাকেও তারা শরীয়তের বিকৃত ব্যাখা করে জায়েয করে নেবে। ভারতীয় মুসলমানদের চোখ খুলবে তাদের মৃত্যুর পর, যখন তারা দেখবে তাদের হাশর-নশর হচ্ছে হিন্দুদের সাথে এবং হিন্দুদের সাথেই তারা জাহান্নামে পতিত হবে।
----
ব্যাকাপ পেজ: https://web.facebook.com/dastaar.rajdarbaar/
সারাহাহ: dastaar.sarahah.com

Post a Comment

 
Top