আজ ১৫ই আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। এদিনটি বাংলাদেশের জন্য শোকের হলেও ভারতের জন্য বড়ই আনন্দের। ভারত যেহেতু শেখ মুজিবকে পছন্দ করত না তার মেয়ে হাসিনার মতো হিন্দুধর্ম গ্রহণ না করার কারণে, সেহেতু বঙ্গবন্ধুকে ভারতের খুশির দিনেই হত্যা করার পরিকল্পনা তারা গ্রহণ করেছিল। হিন্দুদের অনেক ক্রোধ ও আক্রোশ জমে ছিল শেখ মুজিবের প্রতি, যে কেন তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে সৈন্য সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছিলেন? কেন তিনি লাহোরে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন?

হিন্দুরা শেখ মুজিবকে তখনও পছন্দ করত না, এখনও করে না। উল্লেখ্য, জামায়াত-বিএনপির তুলনায় এখন হিন্দুদেরকেই বেশি শেখ মুজিবের বিরোধিতা করতে দেখা যায়। বিশেষ করে হিন্দু প্রধান বিচারক যে বক্তব্য দিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে, তা তো বিএনপি কিংবা জামাতও দিতে পারেনি। এসকে সিনহা তার রায়ে লিখেছে যে, কোন একক ব্যক্তির নেতৃত্বে নাকি মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। অর্থাৎ তার মতে শেখ মুজিবের সমপর্যায়ের কোন নেতা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ছিল তথা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বপ্রদান বঙ্গবন্ধুর একক কৃতিত্ব নয়! এতোটা অপমানজনক বক্তব্য বিএনপি-জামাতও কিন্তু অতীতে দেয়নি, চিন্তা করে দেখুন।

বিএনপি বড়জোর বলে থাকে যে, জিয়াউর রহমান হচ্ছেন গিয়ে স্বাধীনতার ঘোষক। হ্যাঁ এতে কোন সন্দেহ নেই যে জিয়াউর রহমানই রেডিওতে ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কেবলই ঘোষণা। স্বাধীনতার নেতৃত্ব প্রদানের কৃতিত্বও জিয়াউর রহমানের, এমন দাবি কিন্তু বিএনপি করে না। কারণ সবাই জানে যে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জিয়াউর রহমান ছিলেন সেক্টর কমান্ডার, তার মতো আরো ১৬ জন সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযুদ্ধে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিপরীতে শেখ মুজিবের বিকল্প একমাত্র শেখ মুজিব নিজেই ছিলেন।

তারপরও নমশূদ্র সিনহার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কিন্তু সে রকম কোন প্রতিবাদ প্রদর্শন করতে পারছে না, যেমনটি পারেনি হিন্দুরা যখন মাহবুবুল হানিফের গাড়িতে জুতা ছুঁড়ে মেরেছিল তখন। কারণ শেখ মুজিব এখন আর আওয়ামী লীগারদের পিতা নয়, তারা এখন তাদের পিতা হিসেবে গ্রহণ করেছে নিচুশ্রেণীর হিন্দুদেরকে। প্রথমেই বলেছি যে, হিন্দুরা আসলে শেখ মুজিবকে পছন্দ করে না। আওয়ামী লীগাররা যেহেতু শেখ মুজিবকে ত্যাগ করে হিন্দুদেরকে বাপ হিসেবে গ্রহণ করেছে, তাই হিন্দুরা এখন মন খুলে শেখ মুজিবকে গালি দিতে আর দ্বিধা করছে না।

তারপরও আমির হোসেন আমু একটু গলা চড়িয়ে বলেছে যে, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন না করলে এসকে সিনহার মতো ছিঁচকে উকিল কখনোই চিফ জাস্টিস হতে পারত না! আসলে আমু সাহেবরা এনালগ যুগের মানুষ, তাই অনেক পিছিয়ে আছেন। তার জানা থাকা দরকার যে, সদরঘাটে অবস্থিত জজকোর্টের ছিঁচকে উকিল গোবিন্দ প্রামাণিক বহু আগে থেকেই শেখ মুজিবকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকারী, হিন্দু নির্যাতনকারী এসব অপবাদ দিয়ে ফেসবুকে একের পর এক লাইভ ভিডিও ছেড়ে আসছে। (https://goo.gl/6e2Jum) শেখ মুজিব সম্পর্কে এই গোবিন্দ প্রামাণিকের ফেসবুক স্ট্যাটাসের বক্তব্য হলো-

“যার পিতা হিন্দুদের প্রতি বিদ্বেষ বশতঃ মুসলিম লীগে যোগ দিয়েছিলেন। ভারত ভেঙ্গে মুসলমাদের জন্য আলাদা ভুমি পাকিস্থানের জন্য লড়াই করেছেন। সেই পরিবার থেকে অসাম্প্রদায়িকতা আশা করেন কিভাবে? করলার বীজ গুড় মেখে রোপন করে আপনি ফজলি আমের মত মিস্টি করলা যেমন আশা করতে পারেন না। তেমনি কোরান হাদিস বিশ্বাসী কোন মুসলমানের কাছ থেকে মুর্তি পুজারীদের সাথে সদ্ভাব আশা করতে পারেন না।” (https://goo.gl/2iCM79)

রিসেন্টলি কোন বিএনপি কিংবা জামাত নেতাকে চোখে পড়েনি, যারা কিনা করলার বীজ আর গুড়ের সাথে শেখ মুজিবের তুলনা দিয়েছে। কিন্তু তাতে আওয়ামী নেতাদের কোন প্রতিবাদ তো দূরে, উল্টো আওয়ামী লীগ সাংসদরাই এই গোবিন্দ প্রামাণিকের সাথে এক স্টেজে সভা-সম্মেলন করে যাচ্ছে! চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’ এর সভায় এই গোবিন্দ প্রামাণিকের সাথে এক স্টেজে যোগ দিয়েছে স্থানীয় দুই এমপি, গোলাম মোস্তফা ও আব্দুল ওদুদ। হিন্দুর নাপাক বীর্য আওয়ামী লীগের কোন স্থানে গিয়ে পৌঁছেছে, তা এতেই বোঝা যায়। (https://goo.gl/wvE55a)

পরিশেষে এটাই বলবো যে, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু উপলক্ষে শোক প্রকাশ করার অবকাশ এখন নেই। এখন এই জারজ হাইব্রিড আওয়ামী লীগ, যারা বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে নমশূদ্র হিন্দুদেরকে বাপ হিসেবে গ্রহণ করেছে, তাদের জন্য শোক প্রকাশ করতে হবে। শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে হবে, শেখ মুজিবের মৃত্যুতে নয়। বরং শেখ মুজিব মরে বেঁচে গিয়েছেন, কারণ এখন তিনি বেঁচে থাকলে তার দলের সদস্যরাই হিন্দুদের নির্দেশে তাকে গুলি করে হত্যা করত, যাতে কোনই সন্দেহ নেই।

Post a Comment

 
Top