“শোনো আসিফ, তুমি দুটো বাংলা নাম পাশাপাশি রেখে নাম রাখতে পারো। যেমন আমাদের প্রজন্মে আমরা অনেকেই আমাদের বাচ্চাদের রেখেছি। ভেবে দেখতে পারো। তাহলে মহিউদ্দিন নামের ইসলামি কলংকও কিছুটা ঘুচবে” (https://goo.gl/BuAhtu)
নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দীন তার সন্তানের নাম কী রাখবে, তা নিয়ে উপরের মন্তব্যটি করেছে নারীবাদের নামে হিন্দুত্ববাদের পসরা খুলে বসা সুপ্রীতি ধর। ইদানিং হিন্দু ও হিন্দুপন্থী নাস্তিকগুলো মুসলমান বাঙালিদের নাম নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে, যে কেন তারা আরবী-ফারসী নাম রাখে? পশ্চিমবঙ্গের উগ্র হিন্দুত্ববাদী তপন ঘোষ তার স্ট্যাটাসে লিখেছে “ওদেরকে বাঙালি বলে মেনে নিতে আমার কোনো অসুবিধা নেই। সেজন্য ওরা প্রথমে আরবী নাম পাল্টে নিজেদের বাঙালি নাম রাখা দিয়ে শুরু করুক।” (https://goo.gl/W5uRfG)
এর জবাবে শুরুতে বলতে চাই, ‘বাঙালি নাম’ বলতে হিন্দুরা যা বোঝায়, সেগুলো মূলত অর্ধ-তৎসম নাম। যেমন বৈষ্ণব থেকে বোষ্টম, কৃষ্ণ থেকে কেষ্ট এগুলো হলো অর্ধ তৎসম শব্দের উদাহরণ। ঠিক সেভাবেই হিন্দু নামগুলো কাঠখোট্টা সংস্কৃত শব্দ থেকে বিবর্তিত হয়ে যে গ্রাম্য নিন্মরুচির শব্দে পরিণত হয় সেগুলোই মূলত ‘হিন্দুয়ানী নাম’।
যেমন ইসকনী হিন্দুদের ‘চৈতন্য’ নামক যে ধর্মগুরু, তার মূল নাম গৌরাঙ্গ। কিন্তু প্রচলিত ভাষায় অর্ধ-তৎসম করে তাকে ডাকা হয় ‘গোরা’ নামে। গোরার দুই প্রধান শিষ্যের নাম হলো ‘জগাই‘ ও ‘মাধাই’। ব্রাহ্মণদের উপাধি হয়ে থাকে বন্দোপাধ্যায়, চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়, চক্রবর্তী প্রভৃতি। উচ্চারণ কষ্টকর হওয়ায় কলকাতার প্রচলিত ভাষায় এই উপাধিগুলো অর্ধ-তৎসম করে বাড়ুজ্যে, চাটুজ্জে, মুখুজ্যে, চক্কোত্তি নামে ডাকা হয়।
শরৎ-রবীন্দ্রের মতো হিন্দু সাহিত্যিকদের গল্প উপন্যাসের প্রধান চরিত্রগুলোর নামও এরকম কিম্ভূতকিমাকার। শরতের উপন্যাস ‘শ্রীকান্ত’র প্রধান চরিত্রর নাম হলো গিয়ে ‘ন্যাড়া’। মাইকেল মধূসুদের ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে এক মেয়ে চরিত্রের নাম হচ্ছে ‘পঞ্চী’। সেই ‘পঞ্চী’ নামকে অর্ধ-তৎসম করে নাটকে তার মায়ের সংলাপ হলো-
“বাবু আপনি আমাদের ‘পাঁচি’কে চিনতে পারছেন না?”
এরকম পেঁচি-ঘেঁচি, জগা-মগা-হগা মার্কা অর্ধ-তৎসম নামগুলোই মূলত হিন্দুয়ানী নাম, যেগুলোর চেয়ে মুসলমান বাড়ির পোষা কুকুরগুলোর নামও অনেক রুচিসম্মত। বোঝার সুবিধার্থে ছবিতে ভারতের অতি পরিচিত কিছু কমিকস চরিত্রের নাম তুলে ধরা হলো, কারণ সেগুলো তো তাদের সমাজে প্রচলিত নাম থেকেই নেয়া।
অর্থাৎ হিন্দুদের নামগুলোতে না আছে কোন আভিজাত্য, না আছে কোন সুরুচির প্রকাশ। এটাই কিন্তু স্বাভাবিক, কারণ মুসলিম শাসনামলে শিক্ষা ও আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটতো আরবী-ফারসী ভাষা দিয়ে। আরাকান রাজসভার রাজারা নিজেদের বর্মী নামের পাশাপাশি একটা আরবী-ফারসী নামও রাখত। মুসলিম শাসনামলে উচ্চশ্রেণীর হিন্দুদের নামেও থাকত আরবী-ফারসী শব্দ। যেমন সিরাজের অধীনস্থ জগৎশেঠের মূল নাম ছিল মাহতাব চাঁদ, তার দাদার নাম ছিল ফতেহ চাঁদ।
শুধু নাম নয়, খাদ্যাভ্যাস, জীবনধারণের নিয়ম, উৎসব সব কিছুতেই হিন্দুরা নিন্মরুচির পরিচয় দিয়ে থাকে, যা মুসলমানরা অনুসরণ করতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ মুসলমানদের ঈদের খাবার আর হিন্দুদের পূজার খাবারের তুলনা করা যেতে পারে। প্রতিবেশী হিন্দুরা বাসায় যে পূজার খাবার পাঠাত, তা কখনোই আমার খাওয়ার রুচি হতো না। কি শুষ্ক একবাটি খিচুড়ি, সাথে কিছু বেগুন পোড়া। এটা কি কোন উৎসবের খাবার হতে পারে? এরচেয়ে মুসলমান বাড়ির পোষা কুকুরটার খাবারও তো অনেক বেটার।
হিন্দুদের খাদ্যের আইটেমে পোলাও নেই, গোশত নেই, কোর্মা নেই, কাবাব নেই। অনেক হিন্দুবাড়িতে এখনও পোলাওটা পর্যন্ত রান্না করতে জানে না, কারণ সেটা হচ্ছে মুসলমানদের খাবার। মুসলমানরা বংশপরম্পরায় এসব খাবার রান্না করতে শিখে এসেছে, যা নিচুশ্রেণীর হিন্দুরা শিখে নাই। বিএনপির প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান জীবিত থাকাকালীন একবার একটা প্রশ্ন রেখেছিলেন, তা হলো নববর্ষের দিন পোলাও-কোরমা না খেয়ে পান্তাভাত খাওয়া হয় কেন? তখন এ নিয়ে সুশীলেরা সাইফুর রহমানের সমালোচনা করেছিল। কিন্তু একটু চিন্তা করুন, যুক্তির বিচারে সাইফুর চাচা কিন্তু ঠিকই বলেছিলেন। কারণ নববর্ষ যদি উৎসবই হয়, সেক্ষেত্রে তাতে উৎসবের খাবারই তো থাকা উচিত। আর পান্তাভাত তো কখনোই উৎসবের খাবার নয়, সেটি গরীবের রাতে জমিয়ে রাখা সকালের খাবার। ইউরোপ-আমেরিকায় যে নববর্ষের উৎসব হয়, তাতে তাদের সবচেয়ে দামী ও অভিজাত খাবারই কিন্তু রাখা হয়। তাহলে বৈশাখী নববর্ষে কেন গরীবের খাবার থাকবে?
এখানে মূল বিষয়টি হলো, বৈশাখী নববর্ষ হলো হিন্দুয়ানী নববর্ষ। হিন্দুয়ানী উৎসব হওয়ার কারণে বৈশাখী নববর্ষে কখনোই পোলাও-কোরমা থাকবে না, তার দৌড় পান্তাভাত আর মরিচপোড়া পর্যন্তই।
পরিশেষে বলতে হয়, ইসলাম তো ভারতবর্ষের শাসকশ্রেণীর ধর্ম, আর হিন্দুধর্ম হচ্ছে অসভ্য গোলামদের ধর্ম। আফটার অল, ডিকশনারীতে হিন্দু শব্দটার অর্থই হচ্ছে গিয়ে ‘গোলাম’। মুসলমানরা বংশপরম্পরায় যে আভিজাত্য লাভ করেছে নিজেদের নাম, খাদ্যাভ্যাস, উৎসবের ক্ষেত্রে, তা তো হিন্দুদের নেই। একারণেই দেখা যায়, হিন্দু মেয়েরা মুসলমানদের বিয়ে করে থাকে। কারণ তারা দেখে যে মুসলমানদের নামগুলো হলো ফারহান-শাহরিয়ার-শমসের, আর হিন্দুদের নাম জগাই-মগাই-বলাই-মাধাই ইত্যাদি। হিন্দুদের নাম পোষা কুকুরের মতো, খায় কুত্তামার্কা খাবার, পূজার সময়ে মেয়ে দেখলে কুত্তার মতো জিভ বের করে থাকে। বাঙালিত্বের দোহাই দিয়ে হিন্দুদের এই ছোটলোকি আর রুচিহীনতাকে কখনোই আড়াল করা যাবে না আর মুসলমানদেরকেও এই রুচিহীন ধারার অনুগামী হিন্দুরা করতে পারবে না।

Post a Comment

 
Top