ভারতে ‘রাম রহিম সিং’ নামক এক হিন্দু ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণে অভিযুক্ত থাকার রায় দেয়া হয়েছে। এর পর ২৪ ঘণ্টাও অতিক্রান্ত হয়নি, হরিয়ানায় তার ভক্তদের বিক্ষোভে ইতিমধ্যেই ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। (https://goo.gl/rhY8Bt) উল্লেখ্য, এই রাম রহিম সিং কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির সমর্থক। সাক্ষী মহারাজের মতো বিজেপি’র অনেক তিলকধারী উগ্র নেতাও এই ধর্ষকের পক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে। (https://goo.gl/xaAb49)

মাত্র কয়েকদিন আগে ‘বিনোদ খান্না’ নামক এক বলিউড অভিনেতা মারা যায়। মৃত্যুর সময়ে তার জীবনকাহিনী বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেখানে তুলে ধরা হয়, জীবদ্দশায় সে ছিল হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির এমপি। ১৯৮১ সালে সে তার গুরু ওশো রজনীশের আমেরিকার আশ্রমে চলে গিয়েছিল। পত্রিকায় এসেছে, রজনীশের আশ্রমটি ছিল মূলত যৌনতার ক্ষেত্র। ভক্তরা একে অপরের সাথে, যখন তখন সেক্স করতে পারত। তাই ক্যারিয়ারের একদম চূড়ান্ত সময়ে, যখন বিনোদ খান্নার সিনেমা মানেই বক্স অফিস হিট, তখনই সে সিনেমা ছেড়ে আমেরিকায় তার গুরুর আশ্রমে চলে যেতে কুণ্ঠাবোধ করে নি। এজন্য বিনোদ খান্নার প্রথম স্ত্রীর সাথে তার ছাড়াছাড়িও হয়ে গিয়েছিল।

ভারতের জাতির পিতা গান্ধীর কথাই ধরা যাক। তারও কিন্তু আশ্রম ছিল, ভক্তকুল ছিল। আশ্রমের নারীদের সে বাধ্য করত রাতে তার সাথে একত্রে নগ্ন হয়ে শুতে। গান্ধীর আর আপন নাতনী মনুর সাথেও নগ্ন হয়ে রাত্রিযাপন করত। এসব কারণে অনেক কংগ্রেস নেতাও তার সাথে দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু ভক্তকুলের কাছে গান্ধী ছিল সাক্ষাৎ দেবতার মত, তাই এসব অনৈতিক কাজকে তারা কৃষ্ণ লীলা জাতীয় কিছু বলেই মনে করত।

কৃষ্ণের দ্বারা গোপীদের কাপড় চুরি করে নেয়াকে কৃষ্ণভক্তরা দোষের কিছু মনে করে না। নিষ্ঠাবান হিন্দুরা তাদের গুরুর পায়ে নিজের স্ত্রীকেও দিয়ে আসতে পারে। কয়েক বছর আগে ‘শামীমা মিতু’ নামক এক কালো মোটা নাস্তিক একটি ছবি প্রকাশ করেছিল, যেখানে পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল এলাকায় এক হিন্দু গোঁসাইয়ের কাছে একরাতের জন্য স্ত্রীকে উৎসর্গ করার দৃশ্য রয়েছে।

এ কারণে ধর্ষকদের ধর্মগুরু বানানো, কিংবা সেই ধর্ষকের পক্ষে বিক্ষোভ করে জীবন দেয়াটা একমাত্র হিন্দুদের ক্ষেত্রেই সম্ভব। মোদির ঘনিষ্ট আশারাম বাপু সহ হিন্দুদের আরো অনেক ধর্মগুরুই রয়েছে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত, যাদের কথা এই লেখায় আনা হয়নি লেখা বড় হয়ে যাবে বলে। অথচ এই হিন্দুদেরকেই দেখা যায়, নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরিত্র মুবারক নিয়ে ফেসবুকে অশ্লীল পোস্ট দিতে। আসলে হিন্দুরা তাদের গোটা ইতিহাসে ধর্ষকদেরই তাঁবেদারি করে এসেছে, তাই তাদের ধারণা অন্যদের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরাও বোধহয় সেরকমই হবে।

শুধুমাত্র হিন্দু বলেই এরকম একটি ঘটনা নিয়ে নাস্তিকেরা এখন পর্যন্ত নিশ্চুপ রয়েছে, সাথে সাথে নিশ্চুপ রয়েছে মুসলমানরাও। আফসোস মুসলমানদের জন্য, হিন্দু আর নাস্তিকেরা পান থেকে চুন খসলেও তাদের ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করতে দ্বিধা করে না, কিন্তু মুসলমানরা শত শত ইস্যু পেয়েও এই নাস্তিক-হিন্দুদের বিরুদ্ধে কিছু বলা থেকে বিরত থাকে। মূলত মুসলমানদের নিশ্চুপতার কারণেই নাস্তিক-হিন্দুরা ইসলাম অবমাননা করার অখণ্ড অবসর পেয়ে থাকে, কারণ প্রতিপক্ষ তার ভুলগুলো ধরছে না এবং তার জবাব দেয়ার জন্য তাকে সময়ও খরচ করতে হচ্ছে না। অথচ রাজনীতি কিংবা ক্রিকেট নিয়ে যদি প্রতিপক্ষ থেকে কোন আঘাত আসে, তখন এই মুসলমানগুলো কাছা বেঁধে কিবোর্ডের সামনে বসে যায়।

আসলে মূল কথা হলো, মুহব্বত নেই। ক্রিকেট, রাজনীতি কিংবা ফালতু বিষয়ে মুসলমানের যে মুহব্বত, সেই মুহব্বত তার নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে নেই। যদি থাকত, তাহলে সে অবশ্যই নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে কটূক্তিকারীকে ছেড়ে কথা বলত না।

Post a Comment

 
Top