এতোদিন জনগণের কথা প্রধানমন্ত্রীর মনে ছিল না। সীমান্তবর্তী জনগণের উপর বিএসএফ গুলি চালাত, সরকার মৌনব্রত পালন করত। নাস্তিক-হিন্দুরা ইসলাম ও নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে যা খুশি লিখত, সরকার তাদেরকে পুলিশ প্রটেকশন দিত। এদেশের সরকারি সমস্ত উচ্চপদ হিন্দুদেরকে ‘বখশিশ’ হিসেবে দিয়েছে বর্তমান সরকার, যেন মুসলমানদের অধিকার বলে কিছু থাকতে নেই।

আমি বিগত কয়েক বছরে এদেশের আম জনসাধারণের মধ্যে হতাশা আর অভিমান ছাড়া কিছু দেখিনি। কারণ এই দেশ তো তার নয়, এই দেশে তো তার কোন অধিকার নেই। আমার কর্মজীবনের একটি বাস্তব ঘটনা ঘটেছিল এরকম- আমার প্রতিষ্ঠানের কাজ করে দেয়া একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে এক বাংলাদেশী ও এক ইন্ডিয়ান, আমার অফিস রুমে ছিল। কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশীটি উতলা হয়ে উঠল, ৫ই মে এতো এতো মাদ্রাসার ছাত্র মারা হল, এদের কারো জীবনের কী কোন মূল্য নেই? এরপর বাংলাদেশীটি ইন্ডিয়ানকে বলতে লাগল, স্যার প্লিজ স্যার, এই দেশটিকে আপনাদের অঙ্গরাজ্য করে নিন। প্লিজ স্যার, তিলে তিলে যন্ত্রণা দেয়ার চেয়ে একবারেই যা করার করে ফেলুন।

ইন্ডিয়ানটি কৌতুক করে বলল, না এখন অঙ্গরাজ্য করা যাবে না। কারণ তাহলে আমি যে ফরেন এলাউন্সটি পাই বাংলাদেশে চাকরি করার জন্য, তা তো আর পাবো না।

আওয়ামী লীগ টার্গেট নিয়েই জনগণকে এভাবে ডি-মরালাইজড করেছিল, কারণ সে চিন্তা করেছিল মুসলিম জনগণ তার মানসিক শক্তিতে বলীয়ান হলে সে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ মূল আঘাতটি হেনেছিল এদেশের মুসলমানদের মুসলমানিত্বে। এদেশের জনগণ যেন তার মুসলিম আত্মপরিচয় ভুলে যায়, সে জন্য পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুয়ানী মূর্তি ও দেবতার প্রশংসা পড়ানো হয়েছে। জোর করে স্কুলে স্কুলে সরস্বতী পূজা আর অমঙ্গল শোভাযাত্রা করানো হয়েছে। সরকারি উচ্চপদগুলো পাবার জন্য যে শিশ্নের চামড়া থাকাটাই মূল শর্ত ছিল, তার স্বীকারোক্তি সরকার সংশ্লিষ্টরাই দিতে দ্বিধা করছে না।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিবিসিকে বলেছিল, “সরকারের দিকে যদি তাকান দেখবেন সেখানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। চাকরী বলুন কিংবা অন্যান্য জায়গাতেই বলুন, সব জায়গাতেই।” (https://goo.gl/2EL4KX) আর ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার তো বলেই দিয়েছে, “উনি (শেখ হাসিনা) আমাদের প্রধান বিচারপতি উপহার দিয়েছেন, আমরা কী দিয়েছি?”

অর্থাৎ আওয়ামী লীগ এদেশের সরকারি চাকরি তো বটেই, এমনকি দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী পদের একটি ‘প্রধান বিচারক’ এর চেয়ারটিকেও হিন্দুদের উপহারের জন্য আলাদা করে রেখেছে। যা দেখলে ব্রিটিশদের ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে’র কথা মনে পড়ে যায়। সে আমলে ‍মুসলিম মালিকানাধীন সব লাখেরাজ জমিগুলো আইন করে হিন্দুদের ‘উপহার’ এ পরিণত করেছিল ব্রিটিশরা। সরকার যদি এদেশের মুসলমানদের ন্যায্য অধিকারকে পরোয়া না করে ব্রিটিশ স্টাইলে সবকিছু গুটিকয়েক হিন্দু আর উপজাতিদের ‘উপহার’ বলে গণ্য করে, তাহলে আর এদেশের মুসলমানদের কাছে বিচার চাওয়া কেন?

আসলে আপনারা মুসলমানদের কাছে আসতেন না, যদি না হিন্দুদের কাছে লাথি খেতেন। পূজা কমিটির সভাপতি বলেছে, মাঠে বিএনপি-জামাতের অস্তিত্ব নেই। সব হিন্দু নির্যাতন করছে আওয়ামী নেতারা। তাদেরকে ধরে ধরে শাস্তি দিতে হবে! (https://goo.gl/JBcWu6) যেই আওয়ামী লীগ এই হিন্দুদেরকে সাথে নিয়েই এতোদিন ধরে মাঠ থেকে বিএনপি-জামাত বিতাড়ন করল, পুলিশ বাহিনী হিন্দু দিয়ে ভরে ফেলল বিএনপি-জামাত নির্মূল করতে, সেই হিন্দুরাই এখন বিএনপি-জামাত নির্মূল শেষে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করছে। যার জন্য চুরি করলাম, সেই বলে চোর!

পরিশেষে বলতে চাই, আপনি প্রধানমন্ত্রী যদি আশা করেন যে আপনার কিছু হলে এদেশের জনগণ তুরষ্কের জনগণের ন্যায় ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে যাবে, তাহলে আপনি ভুল করবেন। তুরষ্কের সরকার তো তার দেশের মানুষের পৃষ্ঠপোষকতা করত, যে কারনে দেশের জনসাধারণের মনোবল অটুট ছিল। বিপরীতে আপনি ভারতীয়দের পৃষ্ঠপোষকতা করেন, তাই এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মনোবল বলতে কিছুই আর বাকি নেই। এদেশের জনগণ তার সমস্ত আশা-ভরসা হারিয়ে ভারতের অঙ্গরাজ্য হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। অধিকার আদায়ের যত ইচ্ছা, যতো মনোবল ছিল তাদের, সবই আপনি আর আপনার আওয়ামী লীগ বিগত দশ বছরে ধুয়ে-মুছে দিয়েছেন। সুতরাং আপনিও নমশূদ্র প্রধান বিচারকের রায়ে জেলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকুন, জনগণ বিচার করবে এই আশা আপনি আর করবেন না।

Post a Comment

 
Top