উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শরতের ‘বিলাসী’ গল্পটা অনেকেরই পড়া রয়েছে। তাতে একটি লাইন এরকম ছিল, গ্রামের মেজোবাবুর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী বিরহের চোটে কাশীতে তীর্থযাত্রায় যায় এবং পরবর্তীতে তাকে যেখান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়, তা ‘কাশীই বটে’। গল্পের শব্দার্থ অংশে এই ‘কাশীই বটে’ শব্দটির অর্থ এভাবে করা হয়েছিল, কাশীতে যেভাবে হিন্দুরা প্রার্থনা করতে যায়, সেভাবে অসামাজিক কার্যকলাপও সেখানে হয়ে থাকে।

হিন্দু লেখকদের লেখা পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দিলে অনেক অছাম্প্রদায়িক মুসলমানই তেড়েফুঁড়ে আসতে চায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই হিন্দু লেখকদের কারণেই হিন্দুদের তীর্থস্থানে যে পতিতাবৃত্তি হয়, তা মুসলমান শিক্ষার্থীদেরকে পড়তে হয়েছে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসে পড়তে হয়েছে নৌকার মাঝিদের গ্রাম্য পতিতালয়ে গমনের কাহিনী। এসব পড়ে শিক্ষার্থীদের নৈতিক চরিত্র কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা বলাই বাহুল্য।

তবে এই লেখার আলোচ্য বিষয় ভিন্ন। তা হলো, হিন্দুরা প্রায়ই আইসিসের যৌনদাসী, মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী নির্যাতন এসব ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইসলাম অবমাননা করে থাকে। যদিও তাদের দেশে প্রতিটি মন্দিরে পতিতাবৃত্তি চালু রয়েছে এবং গণনা করলে ভারতের মন্দির-তীর্থস্থানগুলোতে মন্দিরগণিকাদের মোট সংখ্যা গোটা সৌদি আরবের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি হবে।

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের মন্দিরগুলোতে ‘দেবদাসী’ নামে একধরণের পতিতা রয়েছে, যাদের কাজ নাচগান করা এবং মন্দিরের পুরোহিত ও গ্রাম্য মোড়লদের বিছানায় যাওয়া। ভারতের দক্ষিনাঞ্চলেই এদের সংখ্যা ১ কোটির মতো। উত্তরাঞ্চলের মন্দিরগুলোতেও দেবদাসী রয়েছে, যাদের যোগ করলে সংখ্যাটা আরো বেশি হবে। শরতের ‘বিলাসী’ গল্পের মতোই হিন্দু বিধবারা এখনো কাশীগমনের নামে বেশ্যাবৃত্তিতে লিপ্ত হয়। শুধু কাশী নয়, উত্তরভারতের মথুরা, বানারসী সহ মূল মূল তীর্থস্থানগুলো সবই হলো বেশ্যাবৃত্তির কেন্দ্র। কৃষ্ণভক্তদের তীর্থস্থান মথুরা শহরেই রয়েছে লাখ লাখ বিধবা পতিতা।

মন্দির, তীর্থস্থানের সাথে হিন্দু সন্ন্যাসীদের আখড়া বা ডেরাগুলোও একেকটি বড় বড় পতিতালয় হিসেবে স্বীকৃত। কয়েকদিন আগেই ‘রাম রহিম’ নামক যেই হিন্দু ধর্মগুরুকে জেলে নেয়া হল, তার ‘ডেরা সাচ্চা সৌদা’ নামক একটি নিজস্ব শহরই ছিল। সেই শহরে শপিং মল, সিনেমা হল থেকে শুরু করে সবই রয়েছে। শহরের যেই তরুণীকে রাম রহিমের পছন্দ হতো, তার নিয়োজিত সাধ্বীরা তাকে রাম রহিমের ডেরায় নিয়ে আসত ভোগের জন্য।

সারা ভারতে এরকম শত শত হিন্দু ধর্মগুরু ও তাদের ডেরা-আখড়া রয়েছে, যেখানে নিয়োজিত মহিলা ভক্ত নামক হিন্দু বেশ্যাদের সংখ্যা গণনা করলে তা কয়েক কোটির ঘরে গিয়ে পৌঁছবে। এখন প্রশ্ন হতে পারে, সৌদি আরব কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কথিত যৌনদাসী নিয়ে হিন্দুরা যে এতো মুখে ফেনা তুলে, সেসব দেশের জনসংখ্যা কত? সৌদি আরবের জনসংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখের মতো।

সুতরাং ভারতের মন্দির-তীর্থস্থানগুলোতে যতো পতিতা রয়েছে, সৌদি আরবে বুড়ো-বাচ্চা মিলিয়েও অতো জনসংখ্যা নেই। সৌদি আরবের জনসংখ্যার সাথে যদি আইসিস আক্রান্ত সিরিয়ার ১ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যাও যোগ করি, সেটাও ভারতের মন্দিরবেশ্যাদের সমান হবে না।

সুতরাং কোন হিন্দু যদি কথিত যৌনদাসী নিয়ে বিকৃত ব্যাখা করতে যায়, সাথে সাথে তাকে পরিসংখ্যান দেখিয়ে দিতে হবে। ভারতের মন্দির-তীর্থস্থান-সাধুদের আখড়ায় যতো পতিতা রয়েছে, গোটা সৌদি আরব কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশেই অতো জনসংখ্যাও নেই।

Post a Comment

 
Top