হামিদ মীর তার পিতাকে দেয়া সম্মামনা ফিরিয়ে দেবে, এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় তার সমালোচনা চলছে। তবে হামিদ মীরের বক্তব্য স্পষ্ট, শেখ হাসিনা যেহেতু একের পর এক পাকিস্তানবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, সেহেতু এই পুরষ্কার সে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন নিউজ মিডিয়ার ফেসবুক পেজে হামিদ মীরকে ‘শালা পাকিস্তানী’ ইত্যাদি বলে গালি দিতে দেখলাম।

এসব অর্বাচীনতা না করে বরং নিজেকে হামিদ মীরের স্থানে চিন্তা করুন। কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের অবস্থান আপনার দেশের বিরুদ্ধে হলে আপনি সেই দেশের সম্মামনা গ্রহণ করবেন না, যদি আপনার মধ্যে দেশপ্রেম থেকে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশীরা সেই স্থানে নিজেকে চিন্তা করতে পারবে না, কারণ ভারতীয় সরকারি দলের নেতাকর্মীরা অহরহ বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দেয়ার পরও সেদেশে আনিসুজ্জামান সহ এদেশের তাবৎ ‘দেশপ্রেমিক’ লেখকেরা পুরষ্কার নিতে যায়। অনেকে বলবে, আপনি আনিসুজ্জামানকে দিয়ে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে বিচার করতে পারেন না। আমি বলব, হ্যাঁ পারি। কারণ ভারতীয় নেতারা যেমন বাংলাদেশকে উঠতে-বসতে গালি দিলেও এদেশের ‘দেশপ্রেমিক’ লেখকেরা যেমন ঐসব নেতাদের পা ধরে পুরষ্কার নিতে যায়, ঠিক সেভাবেই ভারতীয় ভিসাকেন্দ্রে চূড়ান্ত অপমান ও হেনস্থার পরও এই বাংলাদেশের নাগরিকেরাই ভারতে পর্যটনে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করে আসে।

আমরা ফেসবুকে এদেশের হিন্দুদের বলতে দেখেছি, তারা মুসলমান মালিকানাধীন কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে করবে না, মন্দিরে বিয়ে করবে। কারণ তাতে করে টাকা চলে যাবে মুসলমানদের পকেটে। কই বাংলাদেশী মুসলমানরা সেভাবে তো চিন্তা করে না? করলে ভারতে পর্যটনে বাংলাদেশ প্রথম হতো না। এই হিসেবে এদেশের মুসলমানদের জন্য আনিসুজ্জামান আর নাস্তিক ব্লগারের পালই উপযুক্ত। ইদানিং হামিদ মীরের প্রসঙ্গ তুলে অনেককে আলাপ করতে দেখি, পাকিস্তান একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র, বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বলব তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। সিন্দাবাদের একটি গল্পে পড়েছিলাম, সিন্দাবাদের জাহাজ ঝড়ে ভাঙার পর একটি দ্বীপে তার নাবিকদল সহ সে ভাসতে ভাসতে পৌঁছায়। সেই দ্বীপের অধিবাসীরা সিন্দাবাদের দলটিকে নিয়ে খুব আদর-আপ্যায়ন করে তাদেরকে ভালো ভালো খাবার খেতে দেয়। সিন্দাবাদ বুঝতে পারে যে, এরা নরখাদক। ভালো ভালো খাইয়ে মোটাতাজা করার পর তাদেরকে তারা কেটে খাবে। তাই সিন্দাবাদ নিজে খাবার ত্যাগ করল, অন্যদের সতর্ক করল। কিন্তু সিন্দাবাদের সঙ্গীরা তা শুনল না। একপর্যায়ে সিন্দাবাদের সঙ্গীরা মোটা হলে তাদেরকে নরখাদকেরা কেটে খেল, আর সিন্দাবাদকে তারা তাড়িয়ে দিল শুকনো কাঠি হয়ে গিয়েছে বলে। অর্থাৎ সিন্দাবাদ কিন্তু বেঁচে গেল।

এখন এদেশে যেসব উন্নতি হচ্ছে, সেটা ভারতীয় হিন্দুদের খাদ্যে পরিণত করার জন্য। বর্তমান সরকার এদেশকে মোটাতাজা করে তা তার হিন্দু প্রভুকে বুঝিয়ে দিবে। এদেশের প্রাইভেট ভার্সিটির সুন্দরী ললনারা সুইপারপট্টি থেকে উঠে আসা নমশূদ্র হিন্দুদের ভোগ্যপণ্যে পরিণত হবে। এদেশের ধনী পরিবারের ছেলেরা পরিণত হবে তাদের দাসে। বাঙালি মুসলমানরা কি নিয়ে গর্ব করে? আপনাদের মন্ত্রীর গাড়িতে পর্যন্ত হিন্দুরা স্যান্ডেল ছুঁড়ে মারে, বর্ডারে চাইলেই আপনার দেশের নাগরিককে গুলি করে মারা যায়। সুতরাং আপনি যতো বড় শিল্পপতি হোন আর সচিব হোন, আপনার কোন মূল্য নেই। আপনার মেয়ের চেয়ে বরং ভূমিকম্পবিধ্বস্ত নেপালের সেই মেয়েটির জীবনের মূল্য বেশি, যে ক্ষুধার কারণে পতিতাবৃত্তিতে নাম লিখিয়েছে। আপনার মেয়েও নাম লেখাবে, খালি সরকারি এজেন্ডা বাস্তবায়িত হতে দিন। সিরিয়াতে যেই মেয়েটি তিনবছর আগেও ধনী বাবার আদরের মেয়ে ছিল, তাকে এখন বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। আপনার মেয়েকেও বাজারে বিক্রি করা হবে, আর নমশূদ্র হিন্দুরা তার দরদাম করবে।

হামিদ মীরকে পাকিস্তানী বলে তাচ্ছিল্য করা এদেশের মুসলমানদের মানায় না, কারণ পাকিস্তানে চাইলেই বর্ডারে গুলি করে মানুষ মারা যায় না। এসব বালখিল্যতা না করে খালি সরকারি এজেন্ডা বাস্তবায়িত হতে দিন, তখন হামিদ মীরের মতো আপনিও হাসিনার বিরুদ্ধে বলবেন। কিন্তু ততোদিনে অনেক দেরী হয়ে যাবে, আপনার মা-বোনেরা বাজারে উঠে যাবে। হামিদ মীর তো এদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বলেনি, ভারতীয় বিজেপি নেতাদের মতো এদেশকে কোন গালিও দেয়নি। সে শুধু বলেছে হাসিনার সম্মামনা সে চায় না, হাসিনাকে সে প্রত্যাখান করেছে। আমাদের দেশকে অপমান করে কিছুই কিন্তু সে বলে নি।;

Post a Comment

 
Top