গত কয়েকদিন ধরে অনলাইনে ইসকনের বিরুদ্ধে যেসব বক্তব্য দেয়া হচ্ছে, তার মধ্যে একটি হলো, বাংলাদেশে তো দুর্ভিক্ষ লাগেনি যে, ছোট ছোট বাচ্চাদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে প্রসাদ খাইয়ে হরে কৃষ্ণ বলাতে হবে। এই কাজ হিন্দুস্তানে গিয়ে করলেই তো হয়, তাদের দেশে তো অভুক্তের সংখ্যা বিশ্বে সর্বাধিক।

যারা এরকম বক্তব্য দিচ্ছে, তারা ইসকনের প্রসাদ বিতরণের উদ্দেশ্য জানে না। ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা অভয়চরণ দে, যাকে ‘প্রভুপাদ’ বলে ডাকে তার ভক্তরা, তার বক্তব্যেই রয়েছে যে তারা দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কিংবা মানবসেবার জন্য নয়, বরং তাদের কৃষ্ণপূজার মতবাদে দীক্ষিত করার জন্যই প্রসাদ খাওয়ায়। তার একটি ইংরেজি বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ হলো-

“আমরা তোমাদেরকে অন্তত খাওয়ার জন্য হলেও আহবান করি, কারণ এর মাধ্যমেই তুমি কৃষ্ণের নিকটে আসবে। আস্তে আস্তে তুমি কৃষ্ণকে বুঝতে শিখবে। কৃষ্ণকে বোঝা অত সহজ নয়, কিন্তু তোমাকে ‘কৃষ্ণ-প্রসাদম’ খাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে যেন তুমি একদিন আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে বুঝতে পার, এটাই আমাদের মূলনীতি। বস্তুত, এটাই আমাদের সংগঠনের প্রধান মূলনীতি।
আমাদের উদ্দেশ্য গরীবকে খাওয়ানো নয়, বিবেকানন্দ যেমন বলেছিল ‘দরিদ্র-নারায়ণ-সেবা’। আমাদের লক্ষ্য এটি নয়। আমরা তোমাদের প্রসাদ দিচ্ছি। এটিই বাস্তবতা যে, খেতে খেতেই একদিন তুমি কৃষ্ণপূজারী হবে। স্রেফ খাওয়ার মাধ্যমেই।

যেহেতু তোমরা অত্যন্ত বোকা, তোমরা এর অন্তর্নিহিত দর্শন বুঝতে পার না। তোমাদের নিকট উদরের ধারণা হলো পশুর মতো। সুতরাং তোমাদেরকে আমরা উদরপূর্তি করাচ্ছি, আরও খাও, খেয়ে খেয়ে পেট ভরাও, এর মাধ্যমেই তুমি সংক্রমিত হবে। যেভাবে রোগজীবাণু ওয়ালা খাদ্য খেলে তোমরা রোগাক্রান্ত হও, ঠিক সেভাবেই আমাদের দেয়া এই প্রসাদ হলো ‘কৃষ্ণ-রোগাক্রান্ত’। তুমি এটি খাবে, একদিন না একদিন তুমি অবশ্যই কৃষ্ণপূজার রোগে আক্রান্ত হবে।”

এর মূল ইংরেজি হলো-
So therefore we welcome you that at least for eating, you are coming to Kṛṣṇa. Gradually you'll understand Kṛṣṇa, by eating only. Kṛṣṇa is not so easy to be understood, but we are giving you facility to eat kṛṣṇa-prasādam so that one day you can understand this movement. This is the policy. Actually, that is the policy. We are not poor-feeding. That is not our philosophy, like Vivekananda, daridra-nārāyaṇa-sevā. No, we are not after that. We are giving you prasādam. And that is fact, that by eating, eating, eating, eating, you one day will become Kṛṣṇa conscious. Simply by eating. Because you are so dull, you cannot understand the philosophy. You know the belly like the animals. So therefore we are giving facility, "All right, fill up your belly, fill up your belly. And you'll be infected." As you take foodstuff from a infected area, you become infected with some disease, so this is Kṛṣṇa infected, prasādam. You take it, and one day you'll be diseased with Kṛṣṇa consciousness.

(https://prabhupadavani.org/transcriptions/760430r1fij/)
উপরোক্ত লিংকে বক্তব্যটির অরিজিনাল ভয়েস রেকর্ডিং সহ ইংরেজি টেক্সট রয়েছে। যাদের দলিলের প্রয়োজন তারা ভয়েস রেকর্ডিংটি ডাউনলোড করে রাখতে পারবেন।

উল্লেখ্য, আজকে হাইকোর্টে ইসকনের এই প্রসাদ খাইয়ে হরে কৃষ্ণ বলানোটাকে ‘অন্যায়’ বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে, তারপরও কিন্তু ইসকনের তরফ থেকে কোনোপ্রকার দুঃখপ্রকাশ করা হয়নি। না করাটাই স্বাভাবিক, কারণ তাদের প্রতিষ্ঠাতার বক্তব্য অনুসারে এটাই তাদের মূলনীতি, ভিন্নধর্ম ও মতবাদের লোকদের প্রসাদ খাইয়ে নিজ মতবাদে দীক্ষিত করা তথা ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ বলানো। তারা তাদের মূলনীতির ব্যাপারে আপোস করলে তাদের সংগঠনের অস্তিত্ব নিয়েই টানাটানি লেগে যাবে।

সুতরাং ইসকনিরা ক্ষমা চাইবে না, বরং ভবিষ্যতে আবারও চেষ্টা করবে স্কুলের বাচ্চাদের দিয়ে হরে কৃষ্ণ বলানোর। এখন টাকা খরচ করে প্রসাদ খাইয়ে বলছে, আরও প্রভাব বিস্তার করতে পারলে হিন্দু শিক্ষক দিয়ে বেত দিয়ে পিটিয়ে বলাবে। সুতরাং মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হলে, ইসকনকে নিষিদ্ধ করতেই হবে। কারণ তার মূলনীতিই এমন যে, তাকে নিষিদ্ধ না করে উপায় নেই। আগামীকাল জুমাবার সারাদেশ, বিশেষতঃ চট্টগ্রামে ইসকনের এই ধৃষ্টতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হবে। সেখানে এক দফা এক দাবি তুলতে হবে, তা হলো সরকারকে অবশ্যই এই ইসকন সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকন যেহেতু মুসলমানদের প্রসাদ খাইয়ে হিন্দু বানানোর শপথ নিয়েছে, সেহেতু ইসকনকে নিষিদ্ধ ও বিতাড়িত না করে মুসলমানদের ঘরে ফিরে যাওয়া চলবে না।

Post a Comment

 
Top