//ও আই সি। অরগানাইজেশান অফ ইসলামিক কোঅপারেশান। এইটা আবার কী জাতের অরগানাইজেশান? আমি তো কোনও অরগানাইজেশান অফ ক্রিশ্চান কোঅপারেশান বা অরগানাইজেশান অফ জুইশ কোঅপারেশান বা এই ধরণের কোনও সংস্থার নাম শুনিনি। //
তসলিমা নাসরিনের একটা স্ট্যাটাসের অংশ এটা। ইসলামবিদ্বেষীরা মুসলমানদের মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করতে কতগুলো ডাহা মিথ্যা অপবাদ এমনভাবে দেয়, যেন তা তারা কোথাও দেখেনি। মুসলমানদের মধ্যেই নাকি তা তারা দেখে আকাশ থেকে পড়ল!
অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, ইহুদী-খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধ সবারই ধর্মীয় সংগঠন রয়েছে এবং তাদের প্রত্যেকেই সক্রিয়ভাবে মুসলিম হত্যা ও মুসলিমবিরোধী বক্তব্যদানে অগ্রণী। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকায় aipac (এইপ্যাক) নামে ইহুদীদের যে সংগঠন রয়েছে, তার বার্ষিক সম্মেলনে আমেরিকার মূল রাজনীতিবিদদের, হোক সে হিলারি কিংবা ট্রাম্প, সবাইকে এসে প্রতিশ্রুতি দিতে হয় যে, তারা ইসরায়েলকে নিঃশর্তভাবে ফিলিস্তিনিদের উপর সমস্তপ্রকার গণহত্যায় সহায়তা দেবে। (https://youtu.be/j_qJiid6l1k)
হিন্দুদের কথা তো বলাই বাহুল্য! তারা কুয়োর ব্যাঙের মতো ভারতকেন্দ্রিক সম্প্রদায়, তাদের যতগুলো ধর্মীয় সংগঠন আছে সবগুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ পার্টি। ইউরোপে খ্রিস্টানদের যেসব ধর্মীয় সংগঠন আছে, সেগুলো প্রতিটিই মুসলিম শরণার্থী শিবিরে হামলা, মসজিদে হামলা এসবে জড়িত।
প্রশ্ন হতে পারে, মুসলমানদের ওআইসি সে তুলনায় কি করেছে? উত্তর, কিছুই নয়। ওআইসি তার বলয়ের মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ে যদি তাতে বসবাসরত ভারতীয়দের চাকরি-ব্যবসায় সীমাবদ্ধতা আনার প্রস্তাব আনত, হিন্দুদের অবস্থা মিনিটের মধ্যে বারোটা বেজে যেত। এইপ্যাক, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, খ্রিস্টানপন্থী বিভিন্ন ধর্মীয় দল এদের সম্মেলনগুলোতে মুসলিমবিরোধী তীব্র বক্তব্য রাখা হয়, মুসলিমবিরোধী উগ্র খ্রিস্টান-ইহুদী বক্তাদের প্রধান অতিথি করে আনা হয়। বিপরীতে কখনো শুনেছেন, ওআইসিতে হিন্দুবিরোধী বক্তব্য রাখা হয়েছে? ইহুদীবিরোধী বক্তাকে অতিথি করে আনা হয়েছে?
অমুসলিমরা ইসলামবিরোধী লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে বলেই তসলিমা নাসরিনদের উত্থান হয়েছে। বিপরীতে আমাদের মুসলমানদের মধ্যে হিন্দুবিরোধী কিংবা ইহুদীবিরোধী লেখকদের উৎসাহ দেয়া, টাকাপয়সা দেয়া কিংবা পুরষ্কৃত করার কোনো কার্যক্রমই চোখে পড়ে না। আলাদাভাবে বই প্রকাশ করার কথা বাদই দিলাম, ফেইসবুকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে একটা স্ট্যাটাস লিখলেও মুসলমানদের অছাম্প্রদায়িক খাউজনি শুরু হয়ে যায়। যে কারণে মুসলমানদের মধ্যে লেখকও পয়দা হয় না।
মূলত তসলিমা নাসরিনের আকাশ থেকে পড়াটা একেবারে অমূলক নয়। দুনিয়াতে এমন কোনো ধর্মীয় কোঅপারেশন দেখানো যাবে না, যারা কিনা অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয় না, পদক্ষেপ নেয় না। একমাত্র মুসলমানদের মধ্যেই এধরণের নির্বিরোধী নিধিরাম সর্দার টাইপের সংগঠন রয়েছে, ওআইসি তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। দুনিয়ায় যেখানে সবাই সাম্প্রদায়িক, সেখানে একমাত্র মুসলমানদের এরকম উদ্ভট অছাম্প্রদায়িক সংগঠন দেখে আকাশ থেকে পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

Post a Comment

 
Top