Image may contain: 1 person, text

কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রীর দ্বারা ‘মাদ্রাসায় বাদ্যযন্ত্র দেয়া হবে’ বক্তব্যের পর বোঝা গিয়েছে যে, প্রিয়া সাহা ঘটনার পরও সরকারের বিন্দুমাত্র শিক্ষা হয়নি। আওয়ামী সরকার তার শাসনামলের পুরোটা সময় যে নীতি অবলম্বন করেছে, তা হলো একদিকে তারা মুসলমানদের ডি-মরালাইজড ও তাদের দ্বীনি চেতনাকে অবদমিত করে রেখেছে, তথা কুরবানী, জিহাদ এগুলোর প্রতি নিরুৎসাহিত করেছে মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য। অপরদিকে হিন্দুদের গর্দানে চর্বি জমিয়ে জমিয়ে তাদেরকে চূড়ান্ত আগ্রাসী শ্রেণীতে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগের ধারণা, এতেই তার অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী হবে।

মাদ্রাসায় বাদ্যযন্ত্র দেয়ার বিষয়টিও সেরূপ, অর্থাৎ এর বিপরীতে দেশের আনাচে-কানাচে সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে হিন্দু বাচ্চাদের সন্ত্রাসবাদের দীক্ষা দিতে ‘গীতা স্কুল’ গজিয়ে উঠছে এবং এগুলো তত্ত্বাবধান করছে এমনসব উগ্র হিন্দু, যাদের উগ্রতার কারণে খোদ হিন্দুবান্ধব আওয়ামী সরকারের পুলিশও তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, কয়েক বছর আগে আমি ‘কার্তিক কৃষ্ণ রায়’ নামে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের এক উগ্র হিন্দু যুবকের কয়েকটি স্ট্যাটাস নিয়ে পোস্ট দিই। তার স্ট্যাটাসগুলোতে লেখা ছিল-

“সব গ্রামেই ছোট বড় কালী মন্দির, শীতলা মন্দির, মনসা মন্দির আছে। মন্দিরে খড়গও আছে, কিন্তু দুঃখের বিষয় খড়গগুলো জং ধরা, কোনটা মরিচাধরা, কোনটাতে আবার ঢাঁর নেই নাই। কোন কোন খড়গের ব্যবহার নাই ৫০/১০০ বছর ধরে। ফলে খড়গগুলো হিন্দুদের অভিশাপ দিচ্ছে রক্তের স্বাদ না পেয়ে। মন্দিরের খড়গগুলোকে রক্ত না পান করানোর জন্য, মরিচা ধরানোর জন্য, খড়গ নষ্ট করার জন্য হিন্দুদের পাপ হয়েছে। ”

“কালী পাঁঠা খাক, বা না খাক, আমার সমস্যা নাই, আমি নিজেও পাঁঠা খাই না। কিন্তু বলির সমর্থক আমি। হিন্দুদের রক্ত দেখার অভ্যাস করতে হবে, এক কোপে মাথা কেটে ফেলে দেওয়ার মত অভ্যাসটা যেন হিন্দু সমাজ থেকে না যায়।” (লিঙ্ক কমেন্টে)

২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে এসব উগ্র স্ট্যাটাসগুলো দেয়ার পর আমি আমার পেজ থেকে পোস্ট দেই, এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তার মেস থেকে ডিবি পুলিশ তখন গ্রেফতার করেছিল (স্ক্রীনশট কমেন্টে)। কিন্তু মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়, তখন হিন্দুদের পোস্টে কমেন্ট দেখেছিলাম যে, ভারতীয় হাইকমিশনের নির্দেশে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

জেলখাটা উগ্র হিন্দু এই কার্তিক কৃষ্ণ উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে হিন্দু শিশুদের বেশকিছু গীতা স্কুলের উদ্যোক্তা। যেমন তার নিজের গ্রাম নীলফামারীর ‘গের্দ্দ জয়চণ্ডী’র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি সে এবং তার সঙ্গীরা ব্যবহার করে থাকে ‘গীতা স্কুল’ হিসেবে। (লিঙ্ক কমেন্ট)

উল্লেখ্য, এই কার্তিক কৃষ্ণই একমাত্র জেলখাটা হিন্দু নয়, যে কিনা হিন্দু শিশুদের সন্ত্রাসবাদের দীক্ষা দিতে গীতা স্কুল চালায়। ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে উগ্র হিন্দুরা নজিরবিহীন এক হামলা চালায়। সেই হামলার নেতৃত্ব দিয়ে গে্রফতার হয়েছিল ‘অজয় দত্ত’ নামক এক উগ্র হিন্দু যুবক (ছবিতে আগ্রাসী ভঙ্গিতে থাকা)। সে হলো ‘শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় গীতা শিক্ষা বোর্ড’ এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় সচিব। (লিঙ্ক কমেন্ট)

উল্লেখ্য, যে গোবিন্দ প্রামাণিককে দেখা যাচ্ছে কার্তিক কৃষ্ণ’র হাতে ত্রিশূল তুলে দিতে, তার উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘হিন্দু মহাজোট’ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘বৈদিক স্কুল’ তৈরী করেছে।

মূলত বাংলাদেশকে মুসলমান মুক্ত করতে হিন্দুদের যে পরিকল্পনা, তা সুদূরপ্রসারী। ভারতে হিন্দু বাচ্চাদেরকে উগ্রতার দীক্ষা দিতে নানারকম ট্রেনিং সেন্টার, অস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। একারণে ভারতে হিন্দু বাচ্চারা বিভিন্ন দাঙ্গায় বড়দের সঙ্গ দেয় এবং উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, উগ্র হিন্দু শম্ভুলাল আফরাজুলকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে মারার সময় তার ভিডিও করেছিল তার নাবালক ভাতিজা। মিডিয়াগুলোতে ভিডিওটি নিয়ে আশ্চর্য প্রকাশ করা হয়েছিল যে, এরকম বীভৎস দৃশ্য দেখেও ভিডিওকারী নাবালক হিন্দু কিশোরটির হাত একবারের জন্যও কেঁপে উঠেনি, তা ছিল এতোটাই নিখুঁত।

কাশ্মীরের আসিফা হত্যার সময়েও একই দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। আসিফাকে ধর্ষণে ধর্ষণে ক্ষতবিক্ষত করার পর কে তাকে মারবে, এই প্রশ্ন ওঠার পর এগিয়ে আসে পুরোহিতের নাবালক ভাগ্নে। সে-ই আসিফার মাথায় পাথর দিয়ে থেতলে থেতলে তাকে হত্যা করে। বাংলাদেশের হিন্দু শিশুদেরকেও যেন ভারতের আদলে গড়ে তোলা যায়, সেজন্য এদেশের উগ্র হিন্দুরা তাদের বাচ্চাদের দীক্ষা দিতে ‘গীতা’কে বেছে নিয়েছে, কারণ গীতা বইটি হলো কৃষ্ণ কর্তৃক অর্জুনকে যুদ্ধে প্রণোদনা দানের বিভিন্ন উপদেশ।

হিন্দুদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের গীতা স্কুল থেকে বের হওয়া হিন্দু বাচ্চাদের পরবর্তীতে আওয়ামী লবি ব্যবহার করে বিভিন্ন স্পর্শকাতর সরকারি পদে বসানো হবে, যেখান থেকে সহজে এদেশের মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালানো সম্ভবপর হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এসব গীতা স্কুল হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে, যেখানে হিন্দুদের কিছু সংখ্যাগরিষ্ঠ পকেট রয়েছে। ঐসব অঞ্চলকে কেন্দ্র করে যদি দাঙ্গা লাগে, তাহলে ভারতের ন্যায় সেখানে মুসলমানদের গলা কাটতে তাদের কোনো বেগ পেতে হবে না।

কিন্তু মুসলমানরা কোনোপ্রকার বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না, কারণ সে তো জিহাদের দীক্ষা পায়নি! সে তো মনে করেছে যে, সব হিন্দু খারাপ নয়। তার একমাত্র নিয়তি হবে পড়ে পড়ে মার খাওয়া আর হিন্দুদের দ্বারা নিজ মা-বোনের ধর্ষিত ক্ষতবিক্ষত দেহ অবলোকন করা।

যদি বাঙালি মুসলমান নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে চায়, তবে তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, হিন্দুদের পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলার বুকে বিচরণ করতে দেয়া যাবে না। কারণ বর্তমানের প্রিয়া সাহার প্রজন্মই মূলত বিশ্বাসঘাতকতায় সীমাবদ্ধ থাকবে, এর পরের প্রজন্ম সরাসরি গীতার দীক্ষা নিয়ে হত্যা-ধর্ষণে নেমে পড়বে।

Post a Comment

  1. ভাইজান আপনার এ মূল্যবান পোস্ট এর জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি মুসলিমরা আপনার পোস্ট পড়ে সচেতন হোক। এখানে আপনার পোস্ট এ লিংক কমেন্ট লিখলেন কিন্তু লিংক তো ওখানে নেই। আশা করছি লিংক দিবেন।

    ReplyDelete

 
Top