বিজেপি জেতার কিছুদিনের মধ্যেই সেদেশে ‘সতীদাহ’ প্রথার পক্ষে এক অভিনেত্রী ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে সমর্থন জানিয়েছে। তার মতে, ‘সতীদাহ’ হচ্ছে নারীবাদের প্রতীক। ব্রিটিশদের প্ররোচনায় নাকি নারীবাদের এই স্তম্ভকে বিলুপ্ত করা হয়েছে (মূলত মোগল শাসনামলেই সতীদাহবিরোধী আইন জারি হয়েছিল), তা না হলে আজও হিন্দু মহিলারা চিতায় জ্যান্ত পুড়ে নারীবাদের মাহাত্ম্য প্রকাশ করতে পারত! (http://bit.ly/2WC6cnk)
এখন এটা আপনাকে স্বীকার করতেই হবে, হিন্দু ধর্ম অত্যন্ত পোগোতিশীল নারীবাদী একটি ধর্ম! উল্লেখ্য, ইদানিং মহিলাদের মিন্স বা মাসিকের বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলা, স্যানিটারী ন্যাপকিন নিয়ে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠান করা এগুলো নারীবাদী কার্যক্রমে প্রাধান্য পাচ্ছে। মাসিক নিয়ে ‘লজ্জা’ ভাঙাতে গোটা বাংলাদেশ ঘুরে ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে, বিবিসি প্রথম আলোতে খবরগুলো হাইলাইট করা হচ্ছে। (https://bbc.in/2MmeTOI)
এক নারীবাদী মহিলা ফেসবুকে লিখেছে, সে তার ছেলেসন্তানের সাথে মাসিক নিয়ে আলোচনা করে থাকে। (http://bit.ly/2WgFh0J) নারীবাদীরা এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে মাসিকের বিষয়টি নিয়ে ছেলে আত্মীয় কিংবা জনসমক্ষে খোলামেলা হচ্ছে, ওদিকে হিন্দুরা তা করছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। নওমুসলিম আবুল হোসেন ভট্টাচার্য তার ‘আমি কেন ইসলাম গ্রহণ করলাম’ বইতে উল্লেখ করেছেন-
““বৌমা! যোনি-পীঠটা তো ঠিক হয়নি। ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরী করো আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।” একথা শুনে ছোট খুড়িমা প্রশ্ন করছিল, “যোনি-পীঠ কোনটা?” ঠাকুরমা বলছিল, “যেটার মধ্যে লিঙ্গ বসানো রয়েছে-কেন বিভিন্ন শিবমন্দিরে যেখানে পাথরের তৈরী বড় বড় শিবলিঙ্গ রয়েছে সেখানে তুমি কি দেখোনি কার মধ্যে এবং কী ভাবে লিঙ্গ বসানো থাকে?”
কথাগুলো ছিল একান্তরূপেই দেববিগ্রহ সম্পর্কিত। সুতরাং ভক্তিপ্লুত মনে এবং অত্যন্ত সহজ-সরলভাবেই এগুলো উচ্চারিত হচ্ছিল। তাই শাশুড়ি এবং বিধবা পুত্রবধুর মধ্যে কথার আদান-প্রদানে লিঙ্গ, যোনি প্রভৃতি শব্দ কোনও বাধা বা সংকোচের সৃষ্টি করছিল না।”
আবুল হোসেন ভট্টাচার্য যে সময়টির কথা উল্লেখ করেছেন, তা প্রায় আজ থেকে একশ বছর আগে। মূলত তারও আগে থেকে হিন্দুরা পরিবারের সদস্যদের সাথে যোনি-লিঙ্গের আলোচনা ভাগাভাগি করে নিয়েছে, সে তুলনায় নারীবাদীরা মাত্র কদিন হলো পুত্রসন্তানের সাথে মাসিক নিয়ে আলোচনার করছে, কিংবা স্যানিটারী প্যাড নিয়ে ক্যাম্পেইন করছে ।
সত্যিই বলতে হয়, হিন্দুধর্ম আজকে যা চিন্তা করে, নারীবাদ তা উপলব্ধি করে হাজার বছর পর।

Post a Comment

 
Top