একাত্তরের টকশোতে মুখ ভেঙচিয়ে ঠিক এই মন্তব্যটিই করেছে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ‘মেজরিটি’ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে মুসলমানদের। বিপরীতে এদেশের কোন মুসলমান পত্রিকা সম্পাদক যদি টকশোতে প্রকাশ্যে বলতো যে, “মাইনরিটিরা এরকমই বলে” তখন কিন্তু মানববন্ধন ও অনলাইনে হিন্দুমনা নাস্তিকদের গালিগালাজের ঝড় বয়ে যেতো।

শ্যামল দত্ত শুধু এটুকু বলেই ক্ষান্ত দেয়নি। টকশোতে যখন তার পাশে বসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসান তালুকদার বলছিল যে, “এদেশে একটা হিন্দু মারা গেলে তাকে সংখ্যালঘু হিসেবে দেখা হচ্ছে কেন? এদেশে মুসলমানও তো মারা যায়। আমাদের সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখা উচিত।” তখন শ্যামল কান্তি থুক্কু শ্যামল দত্ত বললো, “এগুলো আপনাদের মুখে শুনতে খুব ভালো শোনায়। সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখা উচিত ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবতা এরকম নয়।” (ইউটিউব লিঙ্ক: https://youtu.be/yFJDAUBwcZk?t=15m15s)

বিপরীতে দুর্গাপূজার সময়ে ধর্ম যার যার উৎসব সবার, হিন্দু মুসলমান ভাই ভাই এসব বুলি ছেড়ে মুসলমানদের পূজা করাতে উঠেপড়ে লাগে হিন্দুরা। তখন যদি কোন মুসলমান বুদ্ধিজীবী বলতো যে, “এগুলো মুখে শুনতে খুব ভালো শোনায়, হিন্দু মুসলমান ভাই ভাই, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।” তখন কিন্তু হিন্দু আর নাস্তিকরা মিলে তাকে প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইনে ধুয়ে ফেলতো।

শ্যামল দত্ত ছাড়াও একাত্তর টিভির টকশোতে নিয়ে আসা হয়েছিল উগ্র হিন্দু সংগঠন হিন্দু মহাজোটের নেতা গোবিন্দ প্রামাণিককে। গোবিন্দ প্রামাণিকের মাথায় যে কালো টুপিটা রয়েছে, সেটা কিন্তু ভারতের উগ্র হিন্দু সংগঠন আরএসএসের নিজস্ব টুপি। সাদা শার্ট ও কালো রঙের টুপি, এটা হলো আরএসএসের ইউনিফর্ম। এই আরএসএসের ইউনিফর্ম পরা গোবিন্দ প্রামাণিক টকশোতে প্রকাশ্যে বললো যে, রানা দাসগুপ্ত মোদির কাছে সাহায্য চেয়ে কোন ভুল করেনি। (উপরে দেয়া ইউটিউব ভিডিওটির ১৭ মিনিট থেকে দেখুন)

হিন্দুরা যে টকশোতে আরএসএসের ইউনিফর্ম পরে আসার সাহস পাচ্ছে, রানা দাশগুপ্তের দেশদ্রোহী বক্তব্যের সমর্থন জানানোর সাহস পাচ্ছে, তার মূল কারণ মুসলমানরা চুপ করে রয়েছে। মুসলমানরা ‘অসাম্প্রদায়িক’ হতে গিয়ে হিন্দুদের কিছু বলে না দেখেই হিন্দুদের সাম্প্রদায়িকতা আজ বৈধতা পেয়েছে। বিষয়টি অনেকটা ইহুদীদের মতোই, তারা ‘হলোকাস্টের শিকার’ বলে ফিলিস্তিনে তাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তা হয়ে যাবে এন্টি সেমিটিক। হিন্দুদের এই বৈধ সাম্প্রদায়িকতার ফলশ্রুতিতেই স্কুলগুলোতে হিন্দু শিক্ষকদের দ্বারা মুসলমান ছাত্রী রেপ হলে তার কোন বিচার হয়না, হিন্দু শিক্ষকেরা ইসলাম অবমাননা করলে তাকে জামাইআদর করতে নিয়ে যায় পুলিশ প্রশাসন।

মেজরিটি মুসলমানরা যেন এক বিরাট গোশতপিণ্ড, যার কোন বাকশক্তি নেই। যার গা থেকে গোশত কেটে খেলেও সে কোন প্রতিবাদ জানাতে পারে না। শ্যামল দত্ত কিন্তু বলেছে যে, হিন্দু মুসলমান ভাগ করা যাবে না, আমাদের সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে এগুলো ফালতু কথা। হিন্দুদের এই সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধি আছে বলেই তারা মাইনরিটি হয়েও মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালাতে পারে, আর মুসলমানরা তা নেই বলেই মেজরিটি হয়েও হিন্দুদের দ্বারা অত্যাচারিত হয়।

Post a Comment

 
Top