আজকে পিনাকি ভট্টাচার্য একটি লেখা লিখেছে “বাংলাদেশের হিন্দু মন ও তার বিবর্তন” নামে। লেখাটির বেশকিছু চুম্বক অংশ আমাকে খুবই নাড়া দিয়েছে, হিন্দুদের ব্যাপারে আরও সন্ত্রস্ত করে তুলেছে একজন সচেতন মুসলমান হিসেবে।

পিনাকী তার লেখায় দেখিয়েছে যে, ৪৭ এর পর থেকেই বাংলাদেশের হিন্দুরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিশেষ করে তারা মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে বিলীন করে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তখন কমিউনিস্ট রাজনীতিতে যোগদান করা শুরু করে।

তার ভাষায় - “শুধু “মুসলমানের ধর্মটা সমস্যা” একথা বলা যায় না বলে বলবার সময় সাধারণভাবে ধর্মবিহীন বা নিধর্মী এক সমাজের অনুমান হিন্দুরা হাজির করেছিল। আর নিধর্মী এক সমাজের অনুমানের উপর দাঁড়িয়ে সেই নতুন বয়ানটা সে হাজির করেছিল যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সে হল কমিউনিস্ট পার্টি বা এর নাম আজকের সিপিবি।”

পিনাকী নিজে কমিউনিস্ট পরিবারের সদস্য, তার পরিবারের সদস্যরাই বগুড়ায় কমিউনিস্ট রাজনীতির সূত্রপাত ঘটিয়েছিল বলে তার দাবি। স্বাভাবিকভাবে কমিউনিস্ট ও হিন্দু হিসেবে পিনাকী তার চোখের সামনেই সবকিছু দেখেছে। সে আরো লিখেছে- “সেই থেকে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় ভেবে এসেছে যে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে তার পোষা বিদ্বেষ বিরাগ সেটার একটা ফয়সালা হতে পারে এভাবে যে, “আমরাও দরকার হলে নাস্তিক হয়ে যাই তবুও যদি কমিউনিস্ট হওয়ার বদৌলতে মুসলমান সম্প্রদায় নাস্তিক হয়েও তার ধর্ম থেকে দূরে সরে তাহলে তো লাভই”। পুর্ববঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টিতে নাস্তিকতার ব্যাপক চর্চার এটাও একটা সাম্ভব্য কারণ। ”

অর্থাৎ সোজা ভাষায়, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ। শুধু ইসলাম ধর্মকে খারাপ বললে তো সেটা ‘সাম্প্রদায়িক’ শোনায়, তাই ইসলামের বিরোধিতা করার জন্য হিন্দুরা বলেছে ‘সব ধর্মই খারাপ’। হিন্দুদের হিংসা এতোটাই বেশি যে, তারা নিজেরা নাস্তিক হয়েও মুসলমানদের ইসলামচ্যুত হিসেবে দেখতে চায়। বর্তমানে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ তত্ত্বটির গোড়াও এখানেই নিহিত। হিন্দুরা দরকার হয় ঈদে কিংবা ইফতার মাহফিলে যোগ দিক, এর বদলে যদি মুসলমানদের পূজামণ্ডপে নিয়ে গিয়ে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া যায় তাহলে তো লাভই! ঠিক কিনা পাঠকেরা?

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে যা বলেছেন- “কাফিরেরা প্রতিহিংসাবশত চায়- ঈমান আনার পর পুনরায় তোমাদেরকে কাফির বানিয়ে দিতে।” [সূরা বাক্বারা শরীফ :আয়াত শরীফ ১০৯]

আরো ইরশাদ করা হয়েছে, “তারা কখনোই সন্তুষ্ট হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের ধর্মের অনুসরণ করা হয়“৷ (২:১২০).

হিন্দুরা এই অবস্থান সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন পর্যন্ত ধরে রেখেছিল। এর পরের অবস্থা সম্পর্কে পিনাকী লিখেছে, ৯২ এর পর থেকে গ্লোবাল কমিউনিজমের আড়ালে ইসলামবিরোধিতার চর্চা থেমে যাওয়ায় হিন্দুদের ষড়যন্ত্র অনেক স্তিমিত হয়ে পড়ে। ৯/১১ এর পর হিন্দুদের দেবতা হয়ে আসে জর্জ বুশ, হিন্দুরা হয়ে উঠলো “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের” প্রজেক্টের একনিষ্ঠ সমর্থক।

এখানেই বোঝা যায় যে, ভারতের কমিউনিস্টরা রুশপন্থী হলেও বর্তমানে এদেশের কমিউনিস্ট পার্টিটা কেন আমেরিকাপন্থী? বাংলাদেশের হিন্দুরাই কমিউনিস্ট দলটাকে ইসলামবিরোধিতার স্বার্থে আমেরিকান ব্লকে যুক্ত করেছে। এদেশের বামপন্থী নাস্তিকেরা অনলাইনে যা করছে, তা মূলত রুশপন্থী আওয়ামী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য। সবই পর্দার আড়ালে পশ্চিমা সিআইএ ব্লকের তত্ত্বাবধানে সংঘটিত হচ্ছে। বামপন্থী মিডিয়ামন্ত্রী ইনুর তত্ত্বাবধানেই এদেশে সিআইএপন্থী মিডিয়াগুলো এমনসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, যা কিনা সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছে। একারণেই সৈয়দ আশরাফ বলেছে যে, ইনুকে মন্ত্রী করার প্রায়শ্চিত্ত আওয়ামী লীগকে আজীবন করতে হবে।

বাঙালি মুসলমানরা হয়তো বুঝছে না যে, তারা ‘অসাম্প্রদায়িকতা’র নামে একটি জলজ্যান্ত মাইন তাদের জাতীয় জীবনে বহন করে বেড়াচ্ছে। আফগানিস্তানে রাশিয়ানদের পোতা মাইনগুলো যেমন এখনও ফাটছে, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশের হিন্দুরাও সুযোগ পেলেই ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। হোক সে কমিউনিজম কিংবা সিআইএ, ইসলামের বিরুদ্ধে হলেই হলো। ইহুদীরা দুই হাজার বছর ধরে খাওয়ার সময় টেবিলে ঘুষি মেরে বলতো, নেক্সট টাইম জেরুজালেম। ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশের হিন্দুরাও ভিন্ন কিছু নয়, তারা ইহুদীদের মতোই সেই ৪৭ থেকে বাংলাদেশকে ভারত বানানোর স্বপ্ন দেখে চলেছে। পিনাকী তার লেখায় শুরুতেই বলেছিল, তখন দেশবিভাগের জন্য হিন্দুরা দোষ দিয়েছিল ইসলাম ধর্মের। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই তারা চাইবে মুসলমানদের মন থেকে ইসলাম উঠিয়ে দিতে, কারণ ইসলাম না থাকলেই ফের এই দেশকে ভারতের সাথে মার্জ করা সম্ভব।

এখনও আমাকে আমার লেখায় হিন্দুদের বিরুদ্ধে বলার জন্য মুসলমানদের বিরোধিতা সহ্য করতে হয়। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, আর কতো? বাংলাদেশটা ফিলিস্তিন হলে তবে কী তাদের চোখ খুলবে? আর তখন চোখ খুলেই বা কী লাভটা হবে? বাঙালি মুসলমানরা চোখ থেকে টিনের চশমা খুলে ফেলুক সময় থাকতেই।

Post a Comment

 
Top