ড. জাকির নায়েক যার দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে দাবি করেন, তিনি হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আহমদ দীদাত। আহমদ দীদাত খ্রিস্টান মিশনারীদের ইসলামবিরোধী অপপ্রচারের জবাব দিতেই মাঠে নেমেছিলেন, যে কারণে তিনি অনেক জোরের সাথে তার বক্তব্য রাখতেন, সবসময় প্রতিপক্ষকে আঘাত করার চেষ্টা করতেন।

জাকির নায়েক নিজেকে আহমদ দীদাতের অনুসারী দাবি করলেও তার কর্মপন্থা তার ভালো লাগেনি, সে কারণে জাকির নায়েককে আহমদ দীদাত উপদেশ দিয়েছিলেন-  'My son, there are two ways of fighting the battle, either with holy water or with fire and I have chosen to fight with fire. If you can fight with holy water you are most welcome, but I have chosen with fire' (Vahed 2013: 194). (http://goo.gl/tqx7Ui)

অর্থাৎ বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দুটি উপায়, হোলি ওয়াটার ও ফায়ার। আমি (আহমদ দীদাত) আগুনের রাস্তা বেছে নিয়েছি। তুমি জাকির নায়েক যদি হোলি ওয়াটার ব্যবহার করে যুদ্ধে জিততে পারো ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম।

একারণে দেখা যায়, জাকির নায়েক সবসময় বিধর্মীদের ‍তুষ্ট করতে চেষ্টা করেছেন, ‘সুশীল সমাজ’ এর নিকট গ্রহণযোগ্যতা পেতে মহিলাদের সামনের স্টেজে বসিয়েছেন। বলিউডের নায়িকা সোহা আলী খানের পাশে আসন গ্রহণ করেছেন। কাফির মুশরিকদের সামনে বিগলিত হয়েছেন।

আহমদ দীদাতের লেকচারে আমি কখনোই তাকে খ্রিস্টানদের সামনে বিগলিত হতে দেখিনি, বরং খ্রিস্টানরা তার ধমক শুনে ঘাবড়ে যেত। তিনি খ্রিস্টান মিশনারীদের মোকাবিলা করার জন্য বই লিখেছেন, বইগুলোর নামও আক্রমণাত্বক। বাইবেলের বিরোধিতা করে লেখা তার একটি বইয়ের নাম ‘কমব্যাট কিট’, যার বাংলা করলে হয় যুদ্ধের সরঞ্জাম। আহমদ দীদাত সরাসরিই বলেছেন, Muslims are Arrogant people অর্থাৎ তারা কাফির মুশরিকদের তোয়ায় না। (https://goo.gl/fvFJ6J)

প্রশ্ন হতে পারে, কার রাস্তা সঠিক? এই দুনিয়া শক্তের ভক্ত নরমের যম, যা সম্প্রতি তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের উদাহরণ দেখলেই যথেষ্ট হবে। জাকির নায়েক বিধর্মীদের তুষ্ট করতে বিগলিত হয়েছেন, বলিউড নায়িকার পাশে বসেছেন। এর দ্বারা তিনি নিজের ব্যক্তিত্বকে ভূলুণ্ঠিত করেছেন। নিজেকে ট্রলের পাত্র বানিয়েছেন, উপহাসের পাত্র বানিয়েছেন। শেষপর্যন্ত ভারত সরকারের দ্বারা বিতাড়িত হয়েছেন।

অনেকেই হয়তো বলবেন, ভারতে থাকলে হিন্দুদেরকে তোয়াতেই হবে। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, আহমদ দীদাত শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদে আক্রান্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় থেকেই খ্রিস্টানদের বিরোধিতা করেছেন। শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদ ও উগ্র খ্রিস্টানবাদ কিন্তু অভিন্ন বিষয়, সুতরাং বুঝতে হবে যে দক্ষিণ আফ্রিকায় খ্রিস্টানদের বিরোধিতা করাটাও কম বিপজ্জনক নয়। আহমদ দীদাতকে কিন্তু কেউ তার নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত করেনি।

ঐ যে বললাম, শক্তের ভক্ত, নরমের যম। আহমদ দীদাতের ব্যক্তিত্বের কারণেই তাকে নিয়ে কেউ টানাহেঁচড়া করতে পারেনি, যা জাকির নায়েকের ক্ষেত্রে হয়েছে। আহমদ দীদাতের কবর তার নিজদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতেই হয়েছে, ‍কিন্তু জাকির নায়েক আর তার দেশের মাটির স্বাদ পাবেন না।

আসলে ভারতীয় মুসলমানদের এখন একজন আহমদ দীদাত দরকার, যিনি তীব্র ভাষায় হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করবেন। জাকির নায়েকের তাদের দরকার নেই। এই ভারতবর্ষ শ্বাপদসংকুল, এখানে হোলি ওয়াটার ব্যবহার করাটা আত্মঘাতী। ফায়ার ছাড়া এখানে কোন গত্যন্তর নেই।

Post a Comment

  1. ভালো লিখেছেন !!

    ReplyDelete
  2. ভুলে ভরা মনগরা তথ্য,অাহমাদ দিদাত বিধমর্মিদের প্রতি যথেষ্ট সহনশিল ছিলেন। বরংচ জাকির নায়েক যথেস্ট এরোগেন্ট। নিজের মনের ইচ্ছাকে পুরন করতে গিয়ে মিথ্যায় ভরা ভুল ব্যাক্ষা করেছেন অাপনি

    ReplyDelete

 
Top