আজকে ঝিনাইদহে কোন এক হিন্দু পুরোহিতকে কুপিয়ে মারা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে হিন্দুরা ফেসবুকে প্রচার করছে যে, দেশে ভয়াবহ সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে, মোদি এসে আমাদেরকে রক্ষা করুক।

অথচ ২৪ ঘন্টাও অতিক্রান্ত হয়নি, গতকাল প্রথম আলোর ফেসবুক পেজের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “ছয় মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫ জন খুন”। সিআইএপন্থী সুলতানা কামাল চক্রবর্তীর আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে এ দাবি করা হয়েছে। (http://goo.gl/N7g8wF)

বাংলাদেশে ৬ মাসে মাত্র ৫ জন হিন্দু মরার বিপরীতে আমেরিকার খ্রিস্টানরা নিজেরা নিজেরা গোলাগুলি করে বছরের ১২ মাসে ১২ হাজারেরও বেশি মারা যায়। (http://goo.gl/MImkKB) অর্থাৎ বলা বাহুল্য, এদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের মতো রাজার হালে দুনিয়ার আর কোন জাতিই নেই! কিন্তু তারপরও সরকারকে এখন ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন এর দায় টানতে হচ্ছে, যার জন দায়ী আসলে সরকার নিজেই। কারণ সরকারই এতোদিন ধরে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ বকতে বকতে পরিস্থিতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, এখন সরকারের মন্ত্রী-মিনিস্টার মরলে কিছু হয় না কিন্তু ফুটপাতের হিন্দু মুচিটা মরলেও সরকারের তেরোটা বেজে যায়।

সিআইএ প্রথমে নাস্তিক ইস্যু দিয়ে সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। গত ৬ মাস আগেও কেবলি নাস্তিক মারা যেত, কিন্তু তাতে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হয়নি। কারণ এদেশের জনগণের নিকট নাস্তিকদের লেখালেখিগুলো ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নাস্তিকদের প্রতি এক ঘৃণার আবহ কাজ করছিল এদেশে। যার ফলে নাস্তিক মেরে ট্র্যাজেডি সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি, সরকারও বিষয়টি ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে।

তাই এখন সিআইএ-মোসাদ নাস্তিক ছেড়ে ভিন্ন পথ ধরেছে। এখন তারা শুরু করেছে হিন্দু মারা। এখন তো সরকার কিছু বলতে পারে না, কারণ “হিন্দু মরলে ট্র্যাজেডি হয়, মুসলমান মরলে নয়” এই পরিস্থিতির সৃষ্টিকারী তারাই। সরকারপন্থী মুনতাসীর মামুনদের বই পড়লে মনে হবে যে, মুক্তিযুদ্ধে কেবল হিন্দুরাই মরেছে। এখন সেই মুনতাসীর মামুনও ভোল পাল্টে জনকণ্ঠের কলামে বলা শুরু করেছে যে, এদেশে হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানরা বেশি মারা যায়।

সরকার এখানে গৌণ, কারণ দেশ দখল হয়ে গেলে আওয়ামী বিএনপি কেউ রেহাই পাবে না। হিন্দুরা যেভাবে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ বলে বলে বিদেশী আগ্রাসনের বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে, তা ঠেকাতে আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে হবে। সে জন্য প্রথমেই দরকার হিন্দু মরলে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এর ধুয়া তুলে যে ট্র্যাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, সেটি না হতে দেয়া। বিষয়টা অনেকটা নাস্তিকদের মতোই। নাস্তিকদের অপকর্মগুলো জনগণের মধ্যে প্রচারিত হওয়ার কারণে যেভাবে তাদের মৃত্যুতে ট্র্যাজেডি সৃষ্টি করা যায়নি, ঠিক সেভাবেই হিন্দুরা মুসলমানদের উপর দেশে বিদেশে যে নির্যাতন চালায়, সেগুলো বেশি বেশি প্রচার করতে পারলে এই ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এর ট্র্যাজেডি সৃষ্টি করা সম্ভব হবে না।

এ জন্য সরকারকেই উদ্যোগী হয়ে ভারতে মুসলিম গণহত্যা নিয়ে সভা-সেমিনারের আয়োজন করতে হবে। এ জন্য দরকার হয় ভারত থেকে কিছু বুদ্ধিজীবী নিয়ে আসা যেতে পারে, যারা সেদেশে আরএসএসের গেরুয়া সন্ত্রাস ও মুসলিম নির্যাতন নিয়ে কাজ করে। প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিৎ মুখার্জিকে ডেকে এনে যেভাবে ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে না’ বলে বক্তব্য দেওয়ানো হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই ‘ভারতে মুসলিম নির্যাতন হচ্ছে’ এই বক্তব্য কাউকে দিয়ে দেওয়াতে হবে। ‘মুসলমান নির্যাতন’ এর আওয়াজ তুলে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এর গলাবাজিকে স্তব্ধ করে দিতে হবে। তাহলেই আমাদের পক্ষে সম্ভব বর্তমান পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করা।

Post a Comment

 
Top