বর্তমান সরকারের আমলে হিন্দুরা অধিক হারে চাকরিতে নিয়োগ পাচ্ছে, যা নিয়ে নানারকম মত দিচ্ছে অনেকে। অনেক হীনম্মন্যতায় ভোগা লোক মত দিচ্ছে, হিন্দুদেরযোগ্যতানাকি বেশি। আসলে ইতিহাস না জানার জন্য এইধরণের হীনম্মন্যতায় ভুগছেমুসলমানরা।  

) সাতচল্লিশের দেশবিভাগের ইতিহাস নিয়ে সবাই একমত, বাঙালি মুসলমানদের সংগ্রামের কারণে মুসলমানদের আলাদা ভূখণ্ড গঠন করা সম্ভব হয়েছিল। বাঙালি মুসলমানদের আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল কলকাতা থেকে, আর কলকাতায় ছিল মুসলিম লীগ সরকার। 

কলকাতার মতো একটি হিন্দু অধ্যুষিত শহরে নিজস্ব সরকার প্রতিষ্ঠা করল বাঙালি মুসলমানরা, এরপর কলকাতাথেকেপাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সূচনা করা হলো। এরপরও আপনি বলবেন, হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানদের যোগ্যতা কম?

) কলকাতা থেকে তখনমোহাম্মদী মতো কয়েকটি মুসলিম পত্রিকা প্রকাশিত হতো, যেখানে আকরম খাঁ, আবুল কালাম শামসুদ্দীনের মতো সাংবাদিকেরা কাজ করতেন। মুসলমান নেতাদের মধ্যে ছিলেন একে ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ। এদেরকেই মূলত পাকিস্তান আন্দোলনের পুরোধা ধরা হয়। 

এই কয়েকজন বাঙালি মুসলিম নেতা পত্রিকা মিলে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করলো, বিপরীতে অখণ্ড ভারতের পক্ষে ছিল গোটা ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়। এক বাঙালি মুসলমান যেখানে গোটা ভারতের হিন্দুদের ঠেকিয়ে দিল, তারপরও আপনি বলবেন, হিন্দুদের যোগ্যতা মুসলমানদের থেকে বেশি?  

) আপনি হয়তো বলতে পারেন, হিন্দুরা তো জমিদার ছিল। কিন্তু সেই কথিতজমিদারীতো তারা পেয়েছিলচিরস্থায়ী বন্দোবস্তএর মাধ্যমে, মূল জমির মালিক তো ছিল মুসলমানরা। ফ্রী-তে মুসলমানদের জমির মালিক হওয়ার কারণে বাংলাভাষী হিন্দুরা কখনোই শিল্পকারখানা কিংবা ব্যবসার দিকে মনোনিবেশ করেনি। যে কারণে শুরুর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসার হাল ধরে রেখেছে অবাঙালি মাড়োয়ারিরা। পশ্চিমবঙ্গ এই কারণেই আজও শিল্পে উন্নতি করতে পারেনি। 

বিপরীতে বাংলাদেশের তথা বাঙালি মুসলমানদের শিল্পের উন্নতি নিয়ে কথা বাড়ানোটাই বাহুল্য। ব্রিটিশদের এককালের আদরের পোষা কুকুর বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় টাকা উপার্জন করতে শিখেনি কখনো, ব্যবসা-শিল্প কোনকিছু করতে শিখেনি। কেবল ব্রিটিশ মনিবের দয়ায় বসে বসে খেতে শিখেছে, তাদেরকে আপনি মুসলমানদের চেয়ে যোগ্য বলতে চান

) পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদেরকে ব্রিটিশরা সবসময়ই ব্যক্তিত্বহীন তোষামোদকারী জাতি হিসেবে দেখেছে। যে কারণে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের নিয়ে কোন রেজিমেন্ট ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ব্রিটিশ আমলে ছিল না, এখনো নেই। বিপরীতে বাঙালি মুসলমানদের নিজস্ব সেনাবাহিনীই রয়েছে। যারা সেনাবাহিনীতে ঢুকতেই পারে না, তাদেরকে আপনি মুসলমানদের চেয়ে যোগ্য বলতে চান?

 উপরে মাত্র কয়েকটি পয়েন্ট আলোচনা করলাম, যা আরো বর্ধিত করা সম্ভব বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে আনার মাধ্যমে। হিন্দুরা মুসলমানদের তুলনায় যোগ্য, এটা আসলে একটা মিথ। এই মিথটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে সঠিক ইতিহাস তুলে না আনার কারণে। যেমন ধরুন, সাতচল্লিশের আন্দোলনকে আমাদের কথিত বুদ্ধিজীবীরাঅপরাধবলে গণ্য করে। নিজেদের বাপ-দাদারাই আমাদের দৃষ্টিতে অপরাধী। নিজেরাই যখন নিজেদের ছোট করছি, হিন্দুরা তো তখন প্রাধান্য বিস্তার করবেই।

Post a Comment

 
Top